পার্বত্য চট্টগ্রামের বন্দোবস্তজনিত বা বেদখলজনিত কারণে কোনো বৈধ মালিক ভূমি হতে বেদখল হয়ে থাকলে তার দখল পুনর্বহাল করার বিধান রেখে সংসদ ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি-বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন বিল (সংশোধন)-২০১৬ পাস করেছে। বিলে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তিতে কমিশনের চেয়ারম্যানের একক ক্ষমতা কমাতেও আইনে সংশোধনী আনা হয়েছে।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার সংসদের দ্বাদশ অধিবেশনের সমাপনী দিনে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ। বিলের ওপর আনীত সংশোধনী ও বাছাই কমিটিতে প্রেরণের প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। গত ৪ অক্টোবর বিলটি সংসদে উত্থাপিত হয়। একইদিন রাতে সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বৈঠকে বসে পরদিন ৫ অক্টোবর কমিটি রিপোর্ট প্রদান করেন।
বিলে বলা হয়েছে, পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রচলিত আইন, রীতি ও পদ্ধতি বহির্ভূতভাবে জলে ভাসা ভূমিসহ কোন ভূমি বন্দোবস্ত প্রদান বা বেদখল হয়ে থাকলে তা বাতিল হবে এবং বন্দোবস্তজনিত বা বেদখলজনিত কারণে কোন বৈধ মালিক ভূমি হতে বেদখল হয়ে থাকলে তার দখল পুনর্বহাল হবে। এক্ষেত্রে শর্ত দেওয়া হয়েছে যে, পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রচলিত আইন, রীতি ও পদ্ধতি অনুযায়ী অধিগ্রহণ করা ভূমি এবং বসতবাড়িসহ জলে ভাসা ভূমি, টিলা ও পাহাড় ব্যতীত কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকা ও বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ এলাকার ক্ষেত্রে এই উপধারা প্রযোজ্য হবে না।
আইনে বলা হয়েছে, কমিশনের সচিব এবং অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারী পদে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপজাতীয়দের অগ্রাধিকার প্রদানক্রমে স্থায়ী অধিবাসীদেরকে নিয়োগ করা হবে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে বলতে গিয়ে ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান পার্বত্য শান্তি চুক্তির প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, ওই চুক্তির আলোকে ২০০১ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন প্রণয়ন করা হয়। আইন প্রণীত হওয়ার পর হতে কমিশন তার নিয়মিত বৈঠক আহ্বান করলে কমিশনের উপজাতীয় সদস্যগণ এ আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি উলেখ করে কমিশনের বৈঠকে অব্যাহতভাবে অনুপস্থিত থাকেন। সেই অচলাবস্থা দূর করার জন্য আইনটির সংশোধনের প্রয়োজনীয় দেখা দেয়।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৬ অক্টোবর, ২০১৬/ আফরোজ