মিয়ানমারের আরকান রাজ্যে এখনো চলছে সহিংসতা। সে দেশের সেনাবাহিনী চালিয়ে যাচ্ছে গণহত্যা আর নির্যাতন। তাই প্রাণভয়ে এখনো স্রোতের মত বাংলাদেশে আসছে রোহিঙ্গারা। শনিবার শুধু শাহপরীর দ্বীপ দিয়েই সাড়ে তিন হাজার রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছে বাংলাদেশে। তবে এসব রোহিঙ্গারা এবার দেশের ভেতরে ছড়িয়ে পড়ার চেষ্টা করছেন। শুরু থেকে সড়কপথে অনেক রোহিঙ্গা কক্সবাজার ছাড়ার চেষ্টা করলেও এবার তারা বাংলাদেশের অন্যান্য উপকূল লক্ষ্য করে টেকনাফ থেকে বঙ্গোপসাগরে ভাসার চেষ্টা করছে।
ট্রলারে করে বঙ্গোপসাগর দিয়ে অন্য জেলায় চলে যাওয়ার চেষ্টা করছিল—৩০ জনের এমন একটি দলকে উদ্ধার করার পর প্রশাসন এ ব্যাপারে আগের চেয়ে বেশি সতর্কও রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বঙ্গোপসাগর থেকে এই রোহিঙ্গাদের উদ্ধার করেন মেরিন ড্রাইভ সড়কে দায়িত্ব পালনরত সেনা সদস্যরা। পরে তাদের ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভে অবস্থান নিয়েছে রোহিঙ্গারা। এখানে অনেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ করতে আসলে আগের মত ত্রাণের ঢল নেই! এর পরও কেন রোহিঙ্গারা বসে থাকে? এমন প্রশ্নের উত্তরে স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র বলছে, কক্সবাজার থেকে নৌপথে ট্রলারে বাংলাদেশের অন্য কোথাও গিয়ে পরিচয় লুকিয়ে মূল জনস্রোতে মিশে যাওয়ার চেষ্টা করতেই তারা এখানে অবস্থান নিয়েছে। সড়কপথে কক্সবাজার থেকে বের হওয়া এখন তুলনামূলক কঠিন হয়ে পড়ায় অনেকে নৌপথের দিকে ঝুঁকছে।
এদিকে তিনটি কেন্দ্রে রোহিঙ্গাদের ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিবন্ধন করে পরিচয়পত্র দেওয়া হচ্ছে গত ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে। ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৫ দিনে ২৭ হাজার ৪৭১ জনকে পরিচয়পত্র দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, আঙুলের ছাপ ও ছবিসহ পরিচয়পত্র দেওয়া হলে রোহিঙ্গারা কখনো জালিয়াতি করে জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট তৈরি করতে পারবে না। তবে পাঁচ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা গত এক মাসের কিছু বেশি সময়ে বাংলাদেশে ঢুকলেও তাদের মধ্যে নিবন্ধিত হওয়ার ব্যাপারে তেমন আগ্রহ নেই।
বিডি প্রতিদিন/১ অক্টোবর ২০১৭/হিমেল