ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় গরুর দুধ, খাদ্য এবং দই জরিপ করে ২ সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে জাতীয় খাদ্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে দুদক চেয়ারম্যানকেও তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দুধে মাত্রাতিরিক্ত সীসা, কীটনাশক এবং অ্যান্টিবায়োটিক রয়েছে, যা মানবস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক, ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরির এমন প্রতিবেদন আমলে নিয়ে এ নির্দেশ দেন আদালত।
খাদ্যে ভেজাল মেশানোকে দুর্নীতি উল্লেখ করে আদালত বলেন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এবং বিএসটিআই ব্যর্থ।
সরকারি প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরির এক গবেষণায় উঠে এসেছে, গাভীর তরল দুধ এবং প্রক্রিয়াজাতকরণ দুধে মাত্রাতিরিক্ত সীসা, কীটনাশক এবং অণুজীব রয়েছে। যা মানব স্বাস্থ্যের জন্য দীর্ঘমেয়াদী মারাত্মক ক্ষতিকারক। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গাভীর দুধের ৯৬টি নমুনা সংগ্রহ করে এ গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।
দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় থাকা সুষমখাদ্য দুধ নিয়ে এনএফএসএলের এ রিপোর্ট সংবাদ মাধ্যমে আসার পর বিস্ময় প্রকাশ করেন উচ্চ আদালত। আদালত বলেন, সরকারি রিপোর্টে এমন ভয়াবহ তথ্যের পরও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে। খাদ্যে ভেজাল দেয়াকে দুর্নীতির সঙ্গে তুলনা করেন আদালত।
সংবাদ মাধমের রিপোর্ট আদালতে উত্থাপনকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার মামুন মাহবুব বলেন, কোর্ট উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সবকিছুই তো মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর নির্ভর করে। বিশেষ করে দুধ বাচ্চারা খায়, বয়স্ক মানুষ খায় সেটাই যদি এত ভেজাল হয় তাহলে কর্তৃপক্ষের কি কাজ?
আদালত নির্দেশ দেন ঢাকাসহ কয়েকটি জেলায় দুধ, দই এবং গোখাদ্য পরীক্ষা করে দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের। দুধে ভেজাল দেয়ার সঙ্গে জড়িতদের কেন সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হবে না তাও জানতে চান আদালত।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন বলেন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের যিনি চেয়ারম্যান, খাদ্য সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, মৎস্য সচিব, আইন সচিব সবাইকে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়েছে। এবং ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে হবে এবং ৪ সপ্তাহের রুল জারি করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে কেন সর্বোচ্চ শাস্তি হবে না।
এর আগে গত বছর বাজারে পাস্তুরিত দুধের ৭৫ শতাংশই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক বলে রিপোর্ট দিয়েছিল আইসিডিডিআরবি। তা নিয়েও উচ্চ আদালত রুল জারি করেছিলেন। কিন্তু এখনো রুল নিষ্পত্তি হয়নি।
বিডি প্রতিদিন/১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/আরাফাত