স্মরণকালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিয়ে ধেয়ে আসা ফণীর বিষয়ে দেশবাসীকে আশ্বস্ত করেছেন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। তিনি বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় ফণী নিয়ে কোনো ধরনের আতঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই। বাংলাদেশের উপকূলে যখন আঘাত হানবে তখন বাতাসের গতি অনেকটাই কমে যাবে। এছাড়া সরকার ফণী মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।
আজ শুক্রবার সকালে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সম্পাদকমন্ডলীর জরুরি সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ঘূর্ণিঝড় ফণীর দুর্যোগ মোকাবেলায় দলীয় পদক্ষেপ ও করণীয় নির্ধারণে এই সভা করে দলটি।
মাহবুব উল আলম হানিফ দেশবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ঘূর্ণিঝড় ফণী নিয়ে আবহাওয়া অফিসের মাধ্যমে যে ধরনের তথ্য পেয়েছি, সে তথ্য অনুসারে এটি উড়িষ্যায় আঘাত হেনেছিল, বাংলাদেশের উপকূলে যখন আঘাত হানবে, তখন সেটার বাতাসের গতি অনেকটাই কমে যাবে।
দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে হানিফ বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকার এই ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। যেকোনো দুর্যোগে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সকল রকম সহায়তা করার মতো আমাদের প্রস্তুতি আছে। ফলে এটা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। শুধু একটাই অনুরোধ থাকবে, সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে সঙ্গে সবাই নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাবেন।’
'ফণীর দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকারের কোনো প্রস্তুতি নেই' বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা তো সরকারি এবং দলীয়ভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বললাম, এই প্রস্তুতিগুলো কি বিএনপির পক্ষ থেকে নিয়েছে? বিএনপির নেতারা এই ধরনের কথা বলছে, আমি অবাক হয়ে যাই, এরা কোন দায়িত্বশীল নেতা? এরা উন্মাদের মতো পাগলের প্রলাপ বকা ছাড়া কিছুই করে না। এরা মানুষের দুর্যোগকে কেন্দ্র করে নোংরা রাজনীতি করার চেষ্টা করেছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের ১০ বছরের রাষ্ট্র পরিচালনার সময়ে প্রত্যেকটি দুর্যোগ দক্ষভাবে মোকাবেলা করেছে দেশবাসী দেখেছেন বলেও জানান তিনি।
হানিফ আরও বলেন, আমি অবাক হলাম, বিএনপির এক নেতার কথা শুনে, ওনারা যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন নাকি খুব দক্ষতার সাথে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলা করেছিলেন। দেশাবাসী কি ভুলে গেছে ১৯৯১ সালে ২৯ এপ্রিল চট্টগ্রামে যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। লক্ষাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছিল। এরপরও বিএনপি সংসদে দাঁড়িয়ে সেই সময়ের সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া যে বক্তব্য দিয়েছিলেন, সেটা ছিল জাতির জন্য খুবই লজ্জাকর। ওনি বলেছিলেন, 'যত লোক মরার কথা ছিল তত লোক মরে নাই।' তার মানে ওনি (খালেদা জিয়া) দেড় লাখ লোকের মৃত্যুতেও সন্তুষ্টি ছিলেন না। ওনি আরও বেশী মানুষ মরলে হয়ত সন্তুষ্টি হতেন। এটাই ছিল তাদের দক্ষতা।
তাই মানুষের দুর্যোগের সময়, মানুষের বিপদের সময় বিএনপিকে এই নোংরা রাজনীতি বন্ধ করার আহ্বান জানান তিনি।
তার আগে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের সভাপতিত্বে সম্পাদকমন্ডলীর সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন- যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, এনামুল হক শামীম, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ফজিলাতুনেসা ইন্দিরা, আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ কমিটির আহ্বায়ক ফখরুল ইসলাম মুন্সি, উপ দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য এস এম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, আমিরুল আলম মিলন, আখতারুজ্জামান, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম