২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ১৯:২৮

রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে কমনওয়েলথভুক্ত দেশের সহযোগিতা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে কমনওয়েলথভুক্ত দেশের সহযোগিতা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী

রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য কমনওয়েলথভুক্ত দেশসমূহের কাছে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। 

আজ কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবীতে অনুষ্ঠেয় ১২তম কমনওয়েলথ মহিলা বিষয়ক মন্ত্রীদের সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান। 

এসময় তিনি বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বড় অংশ নারী ও শিশু। কমনওয়েলথ নির্যাতিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোসহ তাদের জীবন মান উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। এক মিলিয়নের বেশিও (প্রায় ১১ লাখ) মানুষকে বিপর্যয়ের মুখে রেখে কমনওয়েলথভুক্ত দেশে এসডিজির ৫ নম্বর গোলের প্রকৃত অর্জন সম্ভব হবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এর আগে কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উহুরু কেনিয়াত্তার পক্ষে কেনিয়ার পাবলিক সার্ভিস, যুব ও জেন্ডার বিষয়ক মন্ত্রী প্রফেসর মার্গারেট কবিয়া এ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। ১২তম এ সম্মেলনের আয়োজক দেশ কেনিয়া। কমনওয়েলথভুক্ত ৫৩ টি দেশের মহিলা বিষয়ক মন্ত্রীরা এ সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন।

প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন ইন্দিরা বলেন, সংবিধানের আলোকে ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ২০১৬-২০২০, জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি- ২০১১, বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার- ২০১৮, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) ২০৩০, ও ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সরকার নারীর অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করছে। বাংলাদেশে ২০০৬ সালে ১৮ বছরের নিচে মেয়ে শিশুর বাল্য বিয়ের হার ছিল ৭৪ শতাংশ  তা ২০১৭ সালে কমে ৪৭ শতাংশ  হয়েছে। ১৫ বছরের নিচে মেয়ের বিয়ের হার ৩২ শতাংশ থেকে কমে ২০১৭ সালে ১০.৭ শতাংশ  নেমে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গীকার অনুযায়ী ২০৪১ সালে বাল্য বিয়ের হার শূণ্য শতাংশে নামিয়ে আনা হবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ২০০৯ সাল থেকে জেন্ডার রেসপন্সিভ বাজেট প্রণয়ন করছে। বর্তমানে ৪৩ টি মন্ত্রণালয় এ বাজেট করছে যা মোট বাজেটের ৩১ শতাংশ। সরকার সারাদেশে প্রায় ৭ হাজার কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন করছে। নারী শিক্ষার বিস্তার ও নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে বাংলাদেশ বিশ্বের বিকাশমান দেশগুলোর একটি। 

প্রতিমন্ত্রী বলেন, নারী শিক্ষা এবং নারী উদ্যোক্তাদের কর্মকাণ্ড প্রসারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব, ব্যক্তিগত উদ্যোগ ও প্রাজ্ঞ দিক নির্দেশনা এসব অগ্রগতির ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা রাখছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী স্বীকৃতি হিসেবে মর্যাদাপূর্ণ ‘গ্লোবাল ওমেনস লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড-২০১৮, ইউএন ওমেন ‘প্লানেট ৫০: ৫০ চ্যাম্পিয়ন-২০১৬, গ্লোবাল পার্টনারশিপ ফোরাম ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড-২০১৬, ইন্টার প্রেস সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড-২০১৮, স্পেশাল রিকগনিশন ফর আউটস্ট্যান্ডিং লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’-২০১৮ ও পিস ট্রি পদকে ভূষিত হয়েছেন।

সম্মেলনে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুন নাহার সিনিয়র অফিসিয়ালদের অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল কমনওয়েলথ উইমেন বিজনেস ফোরাম, আইন পর্যালোচনা কমিটিসহ বিভিন্ন সাইড ইভেন্টে অংশগ্রহণ করে। 

উল্লেখ্য, কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে ১৭  থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চার দিনব্যাপী কমনওয়েলথ মহিলা বিষয়ক মন্ত্রীদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা ৫ সদস্য বিশিষ্ট  বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর