জাতিসংঘে উত্থাপিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনা মতো রোহিঙ্গা ইস্যুতে সমর্থন আদায়ে চারটি আসিয়ান দেশ সফরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। পর্যায়ক্রমে কমিটির সদস্যরা সিঙ্গাপুর, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ড সফরে যাবেন। এছাড়া পাসপোর্ট প্রদানে বিলম্বের কারণ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কমিটির সদস্যরা।
এসময় জাতীয় পরিচয় থাকার পর পাসপোর্ট দেওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তারা। একইসঙ্গে ১৫ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট ইস্যুর লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়। এছাড়া যথাসময়ে পাসপোর্ট ইস্যু করতে না পারলে তা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে জানিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থাও চালুর নির্দেশনা দেওয়া হয়।
জাতীয় সংসদ ভবনে বিকেলে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব সুপারিশ করা হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান। পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ.কে. আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, গোলাম ফারুক খন্দ. প্রিন্স, নাহিম রাজ্জাক, কাজী নাবিল আহমেদ বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।
বৈঠক শেষে সংসদীয় কমিটির সভাপতি ফারুক খান সাংবাদিকদের বলেন, আসিয়ান দেশগুলোর মধ্যে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রতি যেসব দেশের সফটকর্নার রয়েছে, আমরা সেই দেশগুলো সফরে যাচ্ছি। বাস্তবতা বুঝিয়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আমার তাদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করবো। চলতি মাসেই এই সফর শুরু হবে বলেও তিনি জানান।
জানুয়ারি থেকেই ই-পাসপোর্ট শুরু:
বৈঠকে পাসপোর্ট অধিদফতর জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী আগামী ডিসেম্বরে ইপাসপোর্ট কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। জানুয়ারি থেকেই ই-পাসপোর্ট দেওয়া শুরু হবে। প্রথম পর্যায়ে প্রধান কার্যালয়সহ ঢাকার তিনটি আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে ইপাসপোর্ট প্রদান করা হবে। এরপর সারাদেশে ও পরে বিদেশ থেকেও ই-পাসপোর্ট দেওয়া হবে। কমিটি ই-পাসপোর্ট প্রদানের জন্য নতুন অ্যাপস চালুর সুপারিশ করে। যেখানে পাসপোর্টের সর্বশেষ স্ট্যাটাস থাকবে। কোন পাসপোর্ট প্রদানে কেন দেরি হচ্ছে, কতটা সময় লাগবে, তা সেখানে উল্লেখ থাকবে।
অর্থনৈতিক কূটনীতি:
বৈঠকে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালে শীর্ষ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু ব্যবসাক্ষেত্রে বাংলাদেশের বেসরকারি ব্যবসায়ীদের সক্ষমতার অভাব রয়েছে। কমিটি ব্যবসায়ীদের সক্ষমতা অর্জনের জন্য সরকারি পর্যায় থেকে উদ্যোগ নিতে মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে। এছাড়া সারাবিশ্বে অর্থনৈতিক কূটনীতি আরো জোরদার করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অগ্রণী ভূমিকা পালনের সুপারিশ করা হয়। এছাড়া বর্তমান সময় পর্যন্ত বিভিন্ন দেশে কি পরিমান পন্য রপ্তানী করা হয়েছে বিভিন্ন মিশন থেকে সে বিষয়ে প্রতিবেদন সংগ্রহ করে পরবর্তি বৈঠকে তা উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়।
বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শহীদুল হক, মেরিটাইম এফেয়ার্স ইউনিটের সচিব খোরশেদ আলমসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল