ক্ষতিগ্রস্থ শিল্প, ভোক্তা ও জনসাধারণের স্বার্থে ও ক্ষতিলাঘবের উদ্দেশ্যে গণশুনানির বিধান রেখে ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন’ প্রতিষ্ঠার জন্য সংসদে বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন (সংশোধন) বিল, ২০২০ পাস হয়েছে।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে একাদশ সংসদের ষষ্ঠ অধিবেশনে বুধবার বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
এর আগে, বিলের ওপর আনীত জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ এবং সংশোধনীর প্রস্তাবসমূহ কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ, মো. ফখরুল ইমাম, মুজিবুল হক ও পীর ফজলুর রহমান এবং বিএনপি’র মো. হারুনুর রশীদ ও ব্যারিষ্টার রুমিন ফারহানা এসব প্রস্তাব আনেন।
গত ২৩ নভেম্বর সংসদে বিলটি উত্থাপিত হয়। সংসদে বিলটি নিয়ে আলোচনাকালে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ১৯৭৩ সালে ট্যারিফ কমিশনের সৃষ্টি হলেও পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় বাংলাদেশের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ট্যারিফ কমিশনের কাজের ধারাও পরিবর্তিত হয়েছে। তাই সময় ও কাজের পরিধি বিবেচনায় আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
বিলে বিদ্যমান আইনের ৭ ধারায় উল্লেখিত বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন শব্দগুলোর পরিবর্তে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন শব্দগুলো প্রতিস্থাপনের প্রস্তাব করা হয়। বিলে বলা হয়, তদন্তের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের গোপনীয়তা নিশ্চিত করতে হবে। তবে শর্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি নিয়ে প্রকাশ করা যাবে।
এই বিলে দেশীয় পণ্য ও সেবা রফতানি বৃদ্ধিকল্পে দেশীয় শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণ ও বিকাশে শিল্পপণ্য উৎপাদন ও বিপণনে দক্ষতা বৃদ্ধি, প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ সৃষ্টি এবং আমদানি ও রফতানির ক্ষেত্রে তুলনামূলক সুবিধা নিরূপণ করবে। বিলটি আইনে পরিণত হলে এই আইনের অধীনে শুল্কনীতি পর্যলোচনা করে শুল্কহার নির্ধারণ করবে, আর্ন্তজাতিক, আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি, ট্রানজিট ও ট্রান্সশিপমেন্ট ট্রেড, জিএসপি, রুলস অব অরিজিন ও অগ্রাধিকার বাণিজ্য, শিল্প-বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও শুল্কনীতি প্রণয়ণ, অন্যান্য দেশের সাথে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের সম্ভ্যাবতা যাচাই, ক্ষতিগ্রস্থ শিল্প, ভোক্তা ও জনসাধারণের স্বার্থে বিবেচনা করে ক্ষতিলাঘবের উদ্দেশ্যে গণশুনানির পদক্ষেপ চিহ্নিত করা, দেশীয় শিল্প বাণিজ্যের স্বার্থ রক্ষায় গবেষণা বা সমীক্ষা পরিচালনা করা হবে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কাবিদ্যমাণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়, ১৯৭৩ সালের ২৮ জুলাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে তার সরকারের আমলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ফরেন ট্রেড ডিভিশনের রেজুল্যুশনবলে একটি সম্পূর্ণ সরকারি দফতর হিসাবে ট্যারিফ কমিশন প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধির সাথে সাথে বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিমনের কাজের ধারাও পরিবর্তিত হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে সময় ও কাজের পরিধি বিবেচনায় প্রস্তাবিত আইন সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সে কারণে ১৯৯২ সালের বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন আইনের অধিকতর সংশোধনের জন্য এই বিল উপস্থাপন করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম