করোনাভাইরাস থেকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাজারে গরুর মাংসের দাম লাগামছাড়া হয়ে উঠেছে। বেশির ভাগ বাজারে প্রতি কেজি মাংস ৬৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংসের লাগামছাড়া দামে অসহায় ভোক্তা। এ পরিস্থিতিতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংস্থা ‘কনসাস কনজ্যুমার্স সোসাইটি’ (সিসিএস)।
কোভিড-১৯ উদ্ভূত সঙ্কট, চলমান রোজা, আসন্ন ঈদ উপলক্ষে সিটি করপোরেশন এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে আগামী ঈদ পর্যন্ত গরুর মাংসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ ও বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সিসিএস নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ এ দাবি জানিয়ে বলেন, রোজা উপলক্ষে প্রতিবছর রাজধানীতে গরুর মাংসের সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। বিগত ৪৫ বছর ধরে এই নিয়ম চলে এলেও এবার তা করা হয়নি।
ফলে গরুর মাংসের দাম প্রতি কেজি ৬শ টাকা ছাড়িয়েছে। কোথাও কোথাও ৬৫০ টাকাও বিক্রি হচ্ছে। ঊর্ধ্বমূল্যের কারণে গরুর মাংস এখন পরিণত হয়েছে বিলাসী খাদ্যে। অল্প সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ ও কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে ঈদের আগে আরও দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সিসিএস নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ বলেন, এক মাস আগে দেশের বিভিন্ন স্থানে ১৯শ টাকা বস্তা (৫০ কেজি) বিক্রি হওয়া চালের দাম এখন ২৫শ টাকা। ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া আদার দাম এখন ৩শ টাকার বেশি। গত দেড় মাসে চাল, ডাল, তেল, চিনি, দুধ, পিয়াজ, আদা, রসুন, মরিচ, হলুদ থেকে শুরু করে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। কোনো কোনো পণ্যের দাম ২ থেকে ৩ গুণও বেড়েছে। দেশজুড়ে কৃষকদের উৎপাদিত তরল দুধ অবিক্রিত থাকলেও পাস্তুরিত দুধের দাম বেড়েছে। বিষয়টি একেবারেই অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
সিসিএস বলছে, কোভিড-১৯ এর পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে লাখ লাখ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। শ্রমিক, দিনমজুর, হকার, রিকশাচালকসহ নিত্য আয়ের মানুষের উপার্জন বন্ধ। দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত প্রায় ৬ কোটি মানুষ বিপাকে রয়েছে। অসহায় হয়ে পড়া এসব মানুষ পরিবারের ভরণপোষণ করতে হিমশিম খাচ্ছে। এমতাবস্থায় নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি খুবই অমানবিক।
মানুষ যেন প্রয়োজনীয় পণ্য সাশ্রয়ী মূল্যে কিনতে পারে সেজন্য নিত্যপণ্যের সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া সরকারের দায়িত্ব। বিশেষ করে আসন্ন ঈদ উপলক্ষে বাজার নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ার আগেই ব্যবস্থা নিতে হবে।
সিসিএস এর নির্বাহী পরিচালক বলেন, কোভিড-১৯ সংক্রমিতদের চিকিৎসা দেওয়া যেমন জরুরি তেমনি এই মহামারি থেকে জাতিকে রক্ষার জন্য মানুষের ঘরে থাকাও জরুরি।
ঘরে থাকার ফলে একদিকে উপার্জন বন্ধ অন্যদিকে দ্রব্যমূল্যও বাড়ছে। দ্রব্যমূল্যের এমন ঊর্ধ্বগতিতে ভোক্তা সাধারণের নাভিশ্বাস পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে।
এ বিষয়ে আরও আগেই পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন হলেও তা নেওয়া হয়নি। এজন্য দেরিতে হলেও দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম