বিশ্বজুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে করোনাভাইরাস। এই ভাইরাসের ছোবলে প্রতি মুহূর্তে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ, যাচ্ছে প্রাণ। সেই সঙ্গে বিশ্বব্যাপী জন্ম দিচ্ছে নানা ঘটনার। করোনার উপসর্গ নিয়ে ময়মনসিংহ নগরীর এসকে হাসপাতালের ভেন্টিলেশনে ড. দেবাশীষ দাস (৫২) নামে এক গার্মেন্টস কর্মকর্তার মৃত্যু হয়। তার স্ত্রী উমা রানি দাস ময়মনসিংহের সহকারী জেলা ও দায়রা জজ।
ড. দেবাশীষ ঢাকার একটি গার্মেন্টসের এইচআর বিভাগের প্রধান ছিলেন। তার বাড়ি সাভারের শিমুলিয়ায়। মৃত্যুর পর দেবাশীষের পজেটিভ রিপোর্ট আসে।
স্বামীর মৃত্যুর পর বেশ বেকায়দায় পড়েন উমা রানি। শশ্মানে তাকে শেষকৃত্য করার মতো পরিবার কিংবা নিকটজন কেউ আসেনি! এমনটাই দাবি করছেন নেটিজেনরা। তারা ফেসবুকে লিখছেন, সৎকার করতে সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসেন সমাজকর্মী ইউছুফ আলীসহ কয়েকজন। উমা দাস এবং দেবাশীষ দাসের একটি মাত্র শিশু সন্তান, সেই পুত্রের হাতের ছোঁয়া কাঠি এনেছেন উমা রানি দাস। নিজেই তার স্বামীর গোসলসহ মুখাগ্নি করলেন! তবে প্রকৃত ঘটনা জানা না গেলেও উমা রানি দাসের স্বামীর মুখাগ্নি করার ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এমন মর্মস্পর্শী ছবি ছড়িয়ে সোশ্যাল হ্যান্ডেলে সকলেই সমবেদনা জানাচ্ছেন। বলছেন, ‘করোনা আমাদের অমানবিক করে দিয়ে গেল।’
দেবাশীষের শেষযাত্রা এমন অমানবিক হবে, কাউকে সাথে পাওয়া যাবে না, এমন দৃশ্য যে শুধু উমা রানি দাসের সঙ্গেই ঘটল তা নয়। এমন ঘটনা আরও ঘটেছে এই করোনাকালে। এসব ঘটনাকে সত্যিই মর্মান্তিক বলে মনে করছেন নেটিজেনরা। উমার এই ছবি যতই ছড়াচ্ছে ততই বুক ভেঙে যাচ্ছে মানুষের। একা একজন স্বামীর সৎকারের দায়িত্ব তুলে নেন, অথচ এমনটি কখনওই হবার কথা ছিল না। ইতোমধ্যে ছবিটির ভাইরাল আরও বেগবান হয়েছে।
শ্মশানে পুড়ছে স্বামীর লাশ! চিৎকার করে বলছেন উমা দাস, ‘এখনও যে স্বামীর কাছ থেকে বিয়ের সার্টিফিকেট নিলাম না অথচ তার আগেই তার ডেথ সার্টিফিকেট নিতে হবে আমাকে! আমার সন্তান ওর বাবাকে খুঁজলে আমি কি জবাব দিব? কেন সে আমাকে একা ফেলে চলে গেল?’
উমা রানি দাসের কান্নায় শ্মশানের আকাশ বাতাস ভারী হয়ে আসে। উমার এই ছবি ও ঘটনা শেয়ার করে নেটিজেনরা বলছেন, ছবিটা কষ্টে বুক ভেঙে দিচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/কালাম