বরিশালের বাকেরগঞ্জে তরমুজ আবাদে জমি ইজারা না দেয়ায় ডাকাত অভিহিত করে যুবককে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার দিবাগত রাতে উপজেলার দক্ষিন কবাই (চর কবাই) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হত্যার শিকার সোহেল ওরফে মিরাজ খান (৩৫) দক্ষিণ কবাই গ্রামের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম খানের ছেলে। তিন কন্যা ও দুই ছেলের জনক তিনি।
বাকেরগঞ্জ থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, রবিবার ভোর রাত পৌনে ৪ টার সময় ৯৯৯ থেকে একটি কল আসে চর কবাই গ্রামে একজন ডাকাত আটকে রাখা হয়েছে। ওই খবর পেয়ে তিনিসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে সোহেলের হাত পা বাঁধা অবস্থায় লাশ উদ্ধার করা হয়। ময়না তদন্তের জন্য বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ওসি বলেন, নিহতের পরিবার দাবি করেছে, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে স্থানীয় শাহীন হাওলাদার পরিকল্পিতভাবে সোহেল খানকে হত্যা করেছে। দুটো বিষয় গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছেন। কাউকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়নি।
সোহেলের কন্যা ফাতিমা জানান, তাদের জমি ইজারা নিয়ে গত বছরে তরমুজ আবাদ করে একই গ্রামের শাহীন হাওলাদার। তরমুজ বিক্রি করে প্রচুর টাকা লাভ করছে, কিন্তু তাদের টাকা ঠিকমতো দেয়নি। তাই এ বছর তাদের জমি দেয়া হয়নি। জমিতে চাষ দেয়া হয়েছে। এতে তার ক্ষিপ্ত হয়। রাতে ঘরে ফুফু ও বাবা ছাড়া কেউ ছিলো না। তখন শাহীন বার বার ফোন দিলেও বাবা ধরেনি। পরে শাহীন তার দুই ভাই মাসুদ ও শামীমকে নিয়ে বাড়ীতে আসে। তারা বাবাকে (সোহেল) ডেকে নিয়ে জমি চায়। বাবা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে রশি দিয়ে বেধে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে ফেলে রেখে যায়।
মা নিলুফা বেগম (৬০) ও স্ত্রী সাজেদা বেগম (৩০) বলেন, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। জমি লিজ না দেয়ায় শাহিন হাওলাদার ও তার লোকজন সোহেলকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হাত-পা ভেঙে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, সোহেলের বিরুদ্ধে বরিশাল ও পটুয়াখালী থানায় মদ, চুরিসহ ডাকাতির অভিযোগে ১০টি মামলা রয়েছে। তরমুজ আবাদের জমি না দেয়ায় সুযোগ নিয়েছে শাহীন হাওলাদার। সে ও তার দুই ভাই মিলে সোহেলকে ডাকাত সাজিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।
শাহিন হাওলাদার স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, রাত ১২টার দিকে সোহেলসহ ১৪-১৫ জন ডাকাত তার ঘরে ঢুকে স্ত্রীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। পরে ঘরে থাকা নগদ দুই লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা ও প্রায় তিন ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে। এ সময় তিনি শ্বশুরবাড়ি বাউফলের কাঠিপাড়া এলাকায় ছিলেন। খবর পেয়ে তিনি দ্রুত বাড়িতে ফিরে আসেন। পরবর্তীতে ডাকাতদল পার্শ্ববর্তী শওকত খানের বাড়িতে ডাকাতির চেষ্টা করে। তখন এলাকাবাসী মাইকে ঘোষণা দিয়ে ডাকাতদের ধাওয়া করে। এ সময় সোহেলকে আটক করা হলেও তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল