ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকায় তীব্র যানজটে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন শহরবাসী। শহরের প্রধান সড়ক কাউতলী থেকে ঘাটুরা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ, এবং বিকল্প কোনো সড়ক না থাকায় দিনভর এই সড়কেই যানজট লেগে থাকে। যানজট নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তেমন কোনো পদক্ষেপ না থাকায় দুর্ভোগ চরমে উঠেছে।
পৌরসভা সূত্র অনুযায়ী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার জনসংখ্যা ২ লাখ ৬৪ হাজার ৩৪১। শহরের সরকারি দপ্তর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ব্যাংক, বাজার, ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ বেশির ভাগ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এই প্রধান সড়কের দুই পাশে অবস্থিত। ফলে শহরের সব নাগরিককেই যাতায়াতের জন্য অপরিহার্যভাবে কাউতলী-ঘাটুরা সড়ক ব্যবহার করতে হয়।
আশুগঞ্জের ফিরোজ মিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষক আজিজুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "শহরটি দিন দিন বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাচ্ছে। হাঁটাপথে পাঁচ মিনিটের দূরত্ব যানজটের কারণে রিকশায় যেতে আধা ঘণ্টা লাগে। বিকল্প সড়ক নেই, আর ইজিবাইকে যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা করায় দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে।"
জেলা ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, যানজট নিরসনে কাউতলী, টিএ রোড, ঘোড়াপট্টি সেতু, মঠের গোড়া, পুরাতন কোর্ট রোড মোড়, কুমারশীল মোড়, ল্যাবএইড মোড়, বিরাসার, মেড্ডা এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ দায়িত্ব পালন করে। তবে পৌরসভার লাইসেন্স শাখা থেকে শহরের সড়কে চলাচলের জন্য ৩ হাজার ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ১ হাজার ৫০টি ইজিবাইককে লাইসেন্স দেওয়া হলেও, সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে লাইসেন্সবিহীন রিকশা ও ইজিবাইক যাচাইয়ে পৌরসভার কোনো তদারকি বা উদ্যোগ নেই।
সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সড়কের কাউতলী থেকে টিএ রোড, ঘোড়াপট্টি সেতু, হাসপাতাল রোড, কুমারশীল মোড়, পাইকপাড়ায় যানজট লেগেই থাকে।
যানজটের অন্যতম কারণ হিসেবে রয়েছে মহাসড়কে যাতায়াতকারী যানবাহনের এই সড়ক ব্যবহার। এছাড়া আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত চার লেন মহাসড়কের নির্মাণকাজ চলার কারণে সন্ধ্যা সাতটার পর থেকেই এ সড়ক দিয়ে দূরপাল্লার বাস ও পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করে, যা যানজট আরও বাড়িয়ে দেয়।
জেলা সম্মিলিত নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবদুন নূর বলেন, "মানুষ যানজটে অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। দ্রুত লাইসেন্সবিহীন রিকশা-ইজিবাইক বন্ধ করতে হবে।"
জেলা ট্রাফিক পরিদর্শক মীর আনোয়ার হোসেন জানান, বিকল্প সড়ক না থাকা, ফুটপাত দখল, সরু রাস্তা ও ভাঙাচোরা অবস্থাও যানজটের বড় কারণ।
এ বিষয়ে পৌরসভার প্রশাসক ও জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক শঙ্কর কুমার বিশ্বাস দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়ে বলেন, আমরা শীঘ্রই অভিযান চালাব।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল