ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচ নিয়ে সত্তর-আশির দশকের সেই আবেদন আর নেই। অবশ্য উন্মাদনা টিকে আছে। ব্যস্ত জীবনের সেই উন্মাদনার গ্রাফ ক্রমশ নিম্নগামী। তারপরও দুই প্রতিবেশীর ফাইনাল ঘিরে খইয়ের মতো ফুটছে ‘মরুশহর’ দুবাই। আজকের স্বপ্নের ফাইনাল মাঠে বসে উপভোগ করতে একটি টিকিট সংগ্রহে মরিয়া হয়ে উঠেছেন ভারত ও পাকিস্তানের নাগরিকরা। বলিউড নায়ক-নায়িকারাও মাঠে উপস্থিত থাকবেন। মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্ব এশিয়া কাপ শুরু হয় ১৯৮৪ সালে শারজাহতে। মরুশহরের প্রথম আসরে বাংলাদেশ খেলেনি। এরপর থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত তিন দেশের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ এশিয়া কাপের ১৭তম আসরের ফাইনাল। স্বপ্নের ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে দুই প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তান। এশিয়া কাপের ৪১ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম ফাইনালে খেলছে দুই প্রতিবেশী। টি-২০ এশিয়া কাপ ফাইনাল শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায়।
২০০৭ সালে জোহানেসবার্গে টি-২০ বিশ্বকাপের প্রথম আসরে ফাইনাল খেলেছিল ভারত ও পাকিস্তান। টানটান উত্তেজনার ফাইনাল ৫ রানে জিতেছিল ভারত। ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলেনি দুই দল। ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারতকে ১৮০ রানে হারিয়েছিল পাকিস্তান। এবারই প্রথম ফাইনাল খেলছে। অবশ্য ১৯৮৬ ও ১৯৯৪ সালে শারজাহতে অস্ট্র্রাল-এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় পাকিস্তান। ১৯৮৫ সালে মেলবোর্নে বিশ্ব ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশিপে ভারত ফাইনালে ৮ উইকেটে হারিয়েছিল পাকিস্তানকে। দুই দেশের ফাইনাল নিয়ে আগের সেই আবেদন না থাকার অন্যতম কারণ প্রতিদ্বন্দ্বিতার অভাব। দুই দেশের গত কয়েক বছরের লড়াই একপেশে। ওয়ানডে, টি-২০- কোনো ফরম্যাটেই ভারতের সঙ্গে পেরে উঠছে না পাকিস্তান। দ্বিতীয় কারণ, তারকা ক্রিকেটারের অভাব। একসময় ভারতের পক্ষে খেলেছেন সুনীল গাভাস্কার, কপিল দেব, দিলীপ ভেঙ্গসরকার, শচীন টেন্ডুলকার, সৌরভ গাঙ্গুলি, রাহুল দ্রাবিড়দের মতো তারকা ক্রিকেটার। পাকিস্তানের পক্ষে মাঠ কাঁপিয়েছেন ইমরান খান, জাভেদ মিয়াদাদ, ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনুস, ইনজামাম উল হক, সাঈদ আনোয়ারদের মতো ক্রিকেটার। তারকা দ্যুতি এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা কমে যাওয়ায় ম্যাচ ঘিরে আবেদন ও উন্মাদনা কমে গেছে। দুই প্রতিপক্ষ ফাইনালে মুখোমুখি না হলেও এশিয়া ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) বরাবরই দুই দলের ফাইনালের অপেক্ষা করেছে। এবার তাদের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।
সূর্যকুমার যাদবের ভারত দ্বিতীয়বার ফাইনাল খেলছে টানা ছয় জয়ে। সব মিলিয়ে এশিয়া কাপের সফল দলটি ফাইনাল খেলছে এবার নিয়ে ১২ বার। ১৯৮৪ সালে ফাইনাল না হলেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত। আগের ১১ আসরে ৮ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে দেশটি। শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে রানার্সআপ হয়েছে ৩ বার। পাকিস্তান ফাইনাল খেলেছে এবার নিয়ে ৬ বার। আগের ৫ বারে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ২০০০ ও ২০১২ সালে। রেকর্ড ৮ বারের চ্যাম্পিয়ন ভারত ফাইনাল খেলছে গ্রুপ পর্বে টানা ৩ জয় এবং সুপার ফোরে টানা ৩ জয়ে। এই ৬ জয়ে ভারত দুবার হারিয়েছে পাকিস্তানকে। দুই দেশ এখন পর্যন্ত ১৫ টি-২০ ম্যাচ খেলেছে পরস্পরের বিপক্ষে। ভারতের ১১ জয়ের বিপরীতে পাকিস্তানের জয় ৩টি। একটি টাই। টি-২০ এশিয়া কাপে ৫ ম্যাচে ভারতের জয় ৪ ও পাকিস্তানের ১টি।