সরকারের অনুমতির পরই বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার বিষয়ে মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন।
আজ শুক্রবার রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের বাইরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কথা জানান।
অধ্যাপক জাহিদ বলেন, ‘‘বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারের কাছে পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন জানানো হয়েছে। এখন এটি সরকারের বিষয় তারা কবে নাগাদ উনাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেবে। এখনো উনারকে (খালেদা জিয়া) অনুমতি দেয়া হয়নি। যখন অনুমতি আসবে তখন হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ড এই ব্যাপারে পরবর্তি সিদ্ধান্ত নেবে।”
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘আজকেও মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা উনাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। যে চিকিৎসা গতদিনও ছিলো সেই চিকিৎসাই বোর্ড অব্যাহত রেখেছেন।
আলহামদুলিল্লাহ গতকালকের ন্যায় আজকে ম্যাডামের অবস্থা স্থিতিশীল আছে। তার অবস্থা অপরিবর্তিত।”
বিমান ভ্রমণের মতো শারীরিক অবস্থা বিএনপি চেয়ারপারসনের আছে কিনা প্রশ্ন করা হলে অধ্যাপক জাহিদ বলেন, ‘‘সরকারের অনুমতির পরেই এ বিষয়ে মেডিকেল বোর্ড পরবর্তি সিদ্ধান্ত নেবে।”
দেশবাসীর কাছে খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনা দোয়াও চেয়েছেন তিনি। হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসা দিচ্ছেন।
গত ২৭ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ১৫ দিনের পর এভারকেয়ার হাসপাতালে চেস্টের সিটি স্ক্যান ও হৃদরোগের কয়েকটি পরীক্ষার পর চিকিৎসকদের পরামর্শে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর ৫দিন শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে চিকৎসকরা তাকে করোনারী কেয়ার ইউনিটে স্থানান্তর করে। প্রতিদিনই তাকে কয়েক লিটার অক্সিজেন গ্রহণ করতে হচ্ছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরার পর গত ১১ এপ্রিল থেকে গুলশানের ভাড়া বাসা ‘ফিরোজা’য় থেকে ব্যক্তিগত চিকিৎসক টিমের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন খালেদা জিয়া। ১৪ দিন পর আবার পরীক্ষা করা হলে তখনও তার করোনাভাইরাস ‘পজেটিভ’ আসে।
এরপর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ২৭ এপ্রিল রাতে তাকে এভারকেয়ার হাসপপাতালে নেয়া হয়। চেস্টের সিটি স্ক্যান ও কয়েকটি পরীক্ষার পর সেই রাতেই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে নেয়া হয়।
দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ড নিয়ে তিন বছর আগে কারাগার যেতে হয়েছিল ৭৬ বছর বয়েসী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু পর পরিবারের আবেদনে সরকার গত বছরের ২৫ মার্চ ‘মানবিক বিবেচনায়’ শর্তসাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। তখন থেকে তিনি গুলশানে নিজের ভাড়া বাসা ফিরোজায় থেকে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার সঙ্গে বাইরের কারও যোগাযোগ সীমিত।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত