আগামী মঙ্গলবার থেকে আবারও দলের নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। শনিবার দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা নেতাদের সঙ্গে টানা তিন দিন হবে এই বৈঠক। বৈঠকের বিষয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ রবিবার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানানোর কথা রয়েছে।
এদিকে দলীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার রাতে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় দেখা করেছেন বিএনপি মহাসচিব। এ সময় কেন্দ্রীয় নেতা ও অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে বিগত তিন দিনের ধারাবাহিক বৈঠকের বিস্তারিত দলীয় প্রধানকে অবহিত করেছেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য জানান, পেশাজীবীদের সঙ্গে বৈঠকেরও কথা রয়েছে। এছাড়া সম্প্রতি ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিক নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল করার জন্য চিঠি দিয়েছেন। এসব বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাঙ্গেও বসার বিষয়েও স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নেতারা মত দিয়েছেন। তবে সে বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।
বৈঠক সূত্র জানায়, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সরকার বিরোধী আন্দোলনের বিষয়ে দলের নেতাদের মতামত নিচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এর অংশ হিসেবে এবার দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ২৯৩ জন সদস্য এবং জেলা বিএনপির সভাপতি/আহ্বায়ক ও সাধারণ সম্পাদক/সদস্য সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগামী মঙ্গল ও বুধবার নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং বৃহস্পতিবার জেলার নেতাদের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সব এসব বৈঠক।
এর আগে গত মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক হয়। প্রথম দিন দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপদেষ্টামণ্ডলী, দ্বিতীয় দিন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক, সম্পাদক ও সহ-সম্পাদক এবং শেষ দিনের বৈঠকে দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেন। তিন দিনের ধারাবাহিক বৈঠকে মোট ২৮৬ জন নেতা উপস্থিত ছিলেন; যাদের মধ্যে ১১৮জন নেতা বক্তব্য দেন।
সূত্র জানায়, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নেতারা বিগত তিনটি ধারাবাহিক বৈঠকের বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করেন। এসব বৈঠকে নেতাদের উপস্থাপিত বিভিন্ন বিষয়কে সামনে রেখে তাদের কর্মপরিকল্পনা করার বিষয়ে তারা একমত হন।
আগামী আন্দোলনকে সামনে রেখে কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধিসহ সংগঠনকে শক্তিশালী করার বিষয়ে জোর দেন। একইসঙ্গে অন্যান্য রাজনৈতিক দল এবং বিভিন্ন পেশাজীবীদের সঙ্গেও যোগাযোগ বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত হয়। দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলার নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে পেশাজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়। পরে সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণার বিষয়েও একমত পোষণ করেন নেতারা। আগামী অক্টোবরের শেষের দিকে অথবা নভেম্বরে শুরুতে সমাবেশ করতে চায় বিএনপি। তবে এই সমাবেশ বিভাগীয় পর্যায়ে নাকি গুরুত্বপূর্ণ জেলায় হবে সে বিষয়ে আগামী বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও অংশ নেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত