‘পদ্মা নদীর ধারে ছাপরা টিনের বাড়ি। হাড়কাঁপা জাড়ে রাতে ঠিকমতো ঘুমাতেও পারতেছিনু ন্যা। এখন মা-বিটি আরামে ঘুমাতে পাইরবো। বসুন্ধরার কম্বলডা জাড়ের হাদ থ্যাকি বাঁচালো। এতদিন আমাদের দিকে কেউ তাকাইনি। আজ একটা কম্বল পায়েছি, এখন আর শীতে কষ্ট হবে না।’
আজ রবিবার সকালে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের সহযোগিতায় কালের কণ্ঠের শুভসংঘের আয়োজনে শীতার্ত মানুষের মাঝে বিতরণকৃত কম্বল পেয়ে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন বৃদ্ধা সেফালি বেওয়া। তার বাড়ি গোদাগাড়ী উপজেলার পিরিজপুর নদীর পাড় এলাকায়।
শুধু সেফালি বেওয়াই নয়, আজ সকালে বসুন্ধরার কম্বল পেয়েছেন এরকম অসহায় ৫০০ শীতার্ত মানুষ। যাদের সবাই উত্তরের হিমেল বাতাসের সঙ্গে গত দু’দিন ধরে বয়ে যাওয়া মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কবলে শীতে নিদারুণ দুর্ভোগে পড়েছিলেন। রাজশাহীর গোদাগাড়ীর পিরিজপুর এলাকার পদ্মা পাড়ে বসবাসরত শীতার্ত মানুষের মাঝে এই কম্বল বিতরণ করা হয়।
অসহায় এই মানুষগুলোর মধ্যে ষাটোর্ধ হজরত আলী বলেন, ‘ভাঙা কপালে এই সর্বনাশা পদ্মায় হারিয়েছি বাড়ি-ঘর। কোনো মতে একটা খেড়ের ঘরে কাটে জীবন। শীতে ঘরের মধ্যেও ঠাণ্ডা বাতাস ঢুকে পড়ে। খুব কষ্ট হয় তখন। কিন্তু এতদিন আমার মতো এই গরীব মানুষের কেউ খোঁজ নেয়নি। আজ বসুন্ধরার একটা কম্বল পাইয়েছি। এখন রাতে শীতের মধ্যেও ভালোভাবে ঘুমাতে পারবো।’
প্রায় নব্বই বছর বয়স্ক রহিমা বেগম নামের এক বৃদ্ধা বলছিলেন, ‘যা জাড় পড়িছে, তার কারণে অনেক কষ্টে আছুন। ঘরে পঙ্গু স্বামী। সেও জাড়ে কাঁপে। এখন এই কম্বলডা আমাদের বাঁচাবে।’
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার পিরিজপুরে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে স্থানীয় স্কুলের প্রধান শিক্ষক সাবিয়ার রহমান, শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান, সমাজসেবক শফিউল ইসলাম মুক্তাসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর