রাত পোহালেই সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ ও বিয়ানীবাজার পৌরসভার নির্বাচন। দেশের বৃহৎ দলগুলোর একটি বিএনপি অংশ না নিলেও নির্বাচনী উত্তাপে কোনো ভাটা পড়েনি। তবে বিএনপি ছাড়াই ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। দুই নির্বাচনেই নৌকার জয়ে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন নিজ দলের ‘বিদ্রোহীরা’। দল থেকে বহিষ্কার করেও নির্বাচন থেকে তাদের দূরে রাখা যায়নি। এখন দলীয় প্রতীক নৌকার জয়ে পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন বিদ্রোহীরা। গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দুজন। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে লড়ছেন প্রয়াত চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরীর ছোট ভাই ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা মঞ্জুর কাদির শাফি চৌধুরী এলিম। তাঁকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নির্বাচনী মাঠে নামেন ঢাকাদক্ষিণ কলেজের সাবেক ভিপি ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ নেতা শফিক উদ্দিন। উপনির্বাচনে যেখানে নৌকা প্রতীকের জয় অবশ্যম্ভাবী ছিল সেখানে শফিক উদ্দিন জয়ের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের বেশির ভাগ নেতা গোপনে কাজ করছেন বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে। ইতোমধ্যে বিদ্রোহী প্রার্থী শফিক উদ্দিন ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মনসুর আহমদ ও ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সেলিম আহমদকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এর পরও দলের অনেক নেতা দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ।
এদিকে, বিয়ানীবাজার পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১০ জন। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) হবে ভোট গ্রহণ। প্রথমবারের মতো এ পৌরসভার ভোটাররা ইভিএমে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। ১০ প্রতিদ্বন্দ্বীর সবাই প্রবাসী। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের চারজন, যুক্তরাজ্যের দুজন ও কানাডার একজন। নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন বর্তমান মেয়র আবদুস শুকুর। তাঁর সঙ্গে বিদ্রোহী হিসেবে নেমেছেন দলের একাধিক নেতা। দলীয় সিদ্ধান্ত না মানায় ইতোমধ্যে বিদ্রোহী প্রার্থী বিয়ানীবাজার কলেজের সাবেক জিএস ও আওয়ামী লীগ নেতা ফারুকুল হক ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক আবদুল কুদ্দুস টিটুকে বহিষ্কার করা হয়েছে। নির্বাচনে আবদুস শুকুরের জয়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন ফারুকুল হক ও আবদুল কুদ্দুস টিটু। এ দুজন প্রার্থী না হলে আবদুস শুকুর সহজেই জয় পেতেন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, নির্বাচনে চতুর্মুখী লড়াই হবে। মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান মেয়র আবদুস শুকুর, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ফারুকুল হক, সাবেক পৌর প্রশাসক তফজ্জল হোসেন ও যুক্তরাজ্যপ্রবাসী আবদুস ছবুর। এ চার প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে ভোটারদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে। বিদ্রোহী প্রার্থী প্রসঙ্গে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী জানান, যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করে আওয়ামী লীগ করেন তারা কখনো দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করেন না।
বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনে তারা কোনো ফ্যাক্টর নন। মানুষ এখন উন্নয়নে বিশ্বাস করে। শেখ হাসিনার ওপর মানুষের আস্থা আছে। উন্নয়নের স্বার্থে মানুষ নৌকা প্রতীককে বিজয়ী করবে।