বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খুলনার সমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতে সরকারের পক্ষ থেকে নানাভাবে বাধা দেওয়া হচ্ছে। দুই দিনের বাস ধর্মঘট ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু ধর্মঘট, হরতাল, কারফিউ এসব কিছুই মানা হবে না। সব বাধা উপেক্ষা করে নেতাকর্মীরা খুলনায় জনসমাবেশে উপস্থিত হবেন ইনশাআল্লাহ।
আজ সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে তিনি বাংলাদেশ জাতীয় দল ও বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির সঙ্গে পৃথক সংলাপে অংশ নেন।
খুলনায় বিএনপির জনসমাবেশকে কেন্দ্র করে গণপরিবহন বন্ধ করে দেওয়ার সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ময়মনসিংহে একইভাবে গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু সমাবেশ ঠেকাতে পারেনি। তারা গাড়ি বন্ধ করুক, আর যাই করুক গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করবেই ইনশাআল্লাহ।
বিএনপির পক্ষে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সংলাপ দু’টিতে অংশ নেন।
‘বিএনপির সভা সমাবেশে বাধা দেওয়া হবে না’- প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কোন কথা কি তারা রাখতে পেরেছে? পারেনি, কাজেই আওয়ামী লীগকে বিশ্বাস করার কোন কারণ নেই।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ে চলমান সংলাপের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির সঙ্গে এই সংলাপ করেছে বিএনপি। বিকাল ৫টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
সংলাপে বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির সভাপতি আবু তাহের চৌধুরীর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন সংগঠনের মহাসচিব আবুল কাসেম, কেন্দ্রীয় নেতা এজাজ হোসেন, সিদ্দিক আহমেদ নোমান, সাখাওয়াত হোসেন চৌধুরী, আব্দুর রহমান, ছাত্র শক্তি সভাপতি আদেল উদ্দিন মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সুজন মাহমুদ ও সাইফুর রহমান।
অন্যদিকে, বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সঙ্গে বিএনপির সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনটির চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদার নেতৃত্বে মহাসচিব রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা শামসুল আহাদ, সারোয়ার আলম, সাইফ মোহাম্মদ রুমেল, মোহাম্মদ মাসুদ চৌধুরী, বেলায়েত হোসেন শামীম, শাহেদ আলী, আতিকুর রহমান, রফিকুল ইসলাম অংশ নেন।
‘বিএনপি আরেকটি ১/১১’র দুঃস্বপ্ন দেখছে’- আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি দিবা স্বপ্ন দেখে না। দেখি একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের, আমরা স্বপ্ন দেখি- মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার, আমরা স্বপ্ন দেখি সত্যিকার অর্থে একটি বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করার। এজন্যে এই অনির্বাচিত, মানুষের ভোটের অধিকার হরণকারী, লুটেরা আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে আমরা একটি ঐক্যমতের ভিত্তিতে আন্দোলনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রথম দফা সংলাপ শেষ করে দ্বিতীয় দফায় ইতিমধ্যে ১৪টি দলের সাথে আলোচনা শেষ করেছি। তাদের সাথে আলোচনায় আমরা যে দাবিগুলোর বিষয়ে একমত হয়েছি- তার মধ্যে রয়েছে- সংসদ ভেঙ্গে দেওয়া, সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন, এরপর নতুন নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান করে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা।’
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, উপরোক্ত দাবি পূরণে বাংলাদেশ জাতীয় দল ও বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির সঙ্গে আমরা যুগপৎ আন্দোলন করার ব্যাপারে একমত হয়েছি।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত