২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১৫:২৭

সরকার নতজানু ও ব্যর্থ জাতি তৈরি করতে চায় : মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকার নতজানু ও ব্যর্থ জাতি তৈরি করতে চায় : মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই সরকার একটি নতজানু ও ব্যর্থ জাতি তৈরির জন্য পরিকল্পিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তারা আমাদের শেকড়ে টান দিয়েছে। ভবিষ্যত প্রজন্মকে ব্যর্থ করতে শিক্ষা ব্যবস্থায় হাত দিয়েছে। কেউ কিন্তু কোনো প্রতিবাদ করছে না। আমাদের তো আলাদা সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য এবং পরিচয় আছে। সত্যকে সত্য ও মিথ্যাকে মিথ্যা বলতে ভয় কেনো? আজকে শিশুদেরকে ভ্রান্ত ধারণা ও ইতিহাস শিক্ষা দিচ্ছে। আজকে আমাদের পরিচয় ভুলিয়ে দিতে চায়। এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে জেগে উঠতে হবে। এটা জাতির অস্তিত্বের লড়াই। আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাই।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে এবং ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইউট্যাব) সহযোগিতায় 'অপরিণামদর্শী কারিকুলাম ও মানহীন পাঠ্যপুস্তক: দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধ্বংসের নীলনকশা' শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। 

ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান ও হেলেন জেরিন খানের পরিচালনায় সভায় সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মো. সিরাজুল ইসলাম ও অধ্যাপক ড. শাহ শামীম আহমেদ। তারা ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বিভিন্ন পাঠ্যবইয়ের কার্বনডাই অক্সাইড, মানুষের উৎপত্তি নিয়ে বিতর্কিত তত্ত্বসহ বেশকিছু বইয়ের অসংখ্য ভুল এবং অসত্য তথ্য তুলে ধরেন।

আরও বক্তব্য দেন পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, অধ্যাপক ড. তাজমেরী এস ইসলাম, অধ্যাপক ড. নূরুল আমিন বেপারী, অধ্যাপক ড. আব্দুল করিম, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, গোলাম হাফিজ কেনেডি, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, সাংবাদিক কাদের গণি চৌধুরী, শিক্ষক নেতা মো. জাকির হোসেন, অধ্যাপক মো. আল আমিন, অধ্যাপক ড. শামসুল আলম সেলিম, অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান, অধ্যাপক নূরুল ইসলাম, অধ্যাপক মামুনুর রশিদ, অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মোহাম্মদ শামীম, অধ্যাপক মাসুদুল হাসান, অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক শরিফুল করিম, অধ্যাপক শের মাহমুদ, অধ্যাপক ড. তৌফিকুল ইসলাম মিথিল, অধ্যাপক তোজাম্মেল হোসেন, অধ্যাপক আনিসুর রহমান, ড. ফজলুল হক সৈকত প্রমুখ। 

এসময় স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতা গোলাম সারোয়ার, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, ডা. জাহেদুল কবির, জেডআরএফের প্রকৌশলী মাহবুব আলম, জাসাসের জাহিদুল আলম হিটোসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধশতাধিক শিক্ষক।

ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, শিক্ষা হলো আমাদের আত্মমর্যাদা ও সভ্যতার একটি অংশ। কিন্তু পরিকল্পিতভাবে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের উদ্যোগ হাতে নেওয়া হয়েছে ২০১১ সাল থেকে। যা গত এক দশকে ভুল প্রমাণিত হয়েছে। এরমাধ্যমে আমাদের শিক্ষার্থীদের ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে। নতুন বছরের পাঠ্যপুস্তকে শুধু ইতিহাস বিকৃতি নয় চৌর্যবৃত্তি করা হয়েছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বৌদ্ধিক বিকাশ, মেধা ও মনন নষ্ট করা হচ্ছে রাষ্ট্রীয়ভাবে ভুল ইতিহাস শেখানোর মাধ্যমে।

অন্যান্য বক্তারা বলেন, ক্ষমতাসীন সরকার চায় তাদের অবৈধ ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে শিক্ষা ব্যবস্থার মেরুদণ্ড ভেঙে ফেলতে। এর মাধ্যমে একটি অথর্ব ও জ্ঞানহীন জাতি তৈরি করতে চায় ফ্যাসিস্ট সরকার। আসলে বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা আওয়ামী লীগ তছনছ করে নিজেদের পরিবারের শিক্ষা ব্যবস্থা বানিয়েছে।  
 
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার আমাদের খোলনলচে পাল্টে দিতে চায়। যার প্রমাণ এই পাঠ্যপুস্তকে ইতিহাস বিকৃতি ও ভুল তথ্য সংযোজন। আজকে যেসব সন্তান যারা প্রাথমিক শিক্ষা নেয় সেটা তার সারাজীবনের জন্য থেকে যায়। এই শিক্ষাকে পুঁজি করে সামনের দিকে এগিয়ে যায়। প্রাথমিক বিদ্যালয় হলো শিক্ষার মূল। দুর্ভাগ্যবশত এখনো আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। যদিও পাকিস্তান আমলেও এ ধরনের পরীক্ষা ও বিভিন্ন শিক্ষা কমিশন গঠন করা হয়েছিল। শুধু বারবার পরীক্ষা ও শিক্ষা নীতি হচ্ছে। এখনো সেটা চলছে।

তিনি বলেন, আজকে পাঠ্যপুস্তকে অজস্র ভুলে ভরা ইতিহাস ও তথ্য সংযোজন করা হয়েছে। আর সেগুলোই নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের শেখানো হচ্ছে। যারা কারিকুলাম তৈরি করে কেউ কিন্তু ভাবেনা যে ছেলেমেয়েরা কী শিখছে? জাতির মূল জায়গা হলো শিক্ষা। আর সেখানেই হাত দিয়েছে সরকার। এতক্ষণে অরিন্দম কহিলা বিষাদে। 

বিডি প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন
 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর