২৫ মার্চ, ২০২৩ ২২:৩৩

গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে একসঙ্গে কাজ করতে হবে : তৌফিক-ই-ইলাহী

অনলাইন ডেস্ক

গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে একসঙ্গে কাজ করতে হবে : তৌফিক-ই-ইলাহী

বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে দেশের বিশিষ্টজন ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা বীর বিক্রম ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী। এ বিষয়ে একটি সাধারণ কৌশল নিতে হবে বলেও মত দেন তিনি।

তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘হলোকাস্টের (দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি জার্মান বাহিনী দ্বারা ইহুদি নিধন) ওপর কত সিনেমা হয়েছে, অস্কারও পেয়েছে। এগুলো দিয়েই তো তারা হলোকাস্ট প্রতিষ্ঠা করেছে। তাই আমাদেরও ধৈর্য ধরে শিল্পের মাধ্যমে, সংস্কৃতির মাধ্যমে, আমাদের ইতিহাসের মাধ্যমে, লেখাপড়ার মাধ্যমে এটাকে (বাংলাদেশে গণহত্যা) ওপরে আনতে হবে। যখন পারবো, তখন একটি শক্তিশালী দেশও এটা শুনবে।’

শনিবার ঢাকার বনানীর ঢাকা গ্যালারিতে ‘গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও মানবাধিকার প্রশ্ন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকের সঞ্চালনা করেন এডিটরস গিল্ডের সভাপতি মোজাম্মেল বাবু।

তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানের সত্ত্বার একটি বিপর্যয় ঘটে। তারা আমাদের কিছুই মনে করতো না, সেখানে আমাদের কাছে তারা হেরেছে। আমাদের কাছে তাদের লাখের বেশি সৈন্য আত্মসমর্পণ করে। তাই বাস্তবতা জানতে হবে। তারা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াবে। কোনো উদ্যোগ নিলে তারা সেটা অবমূল্যায়ন করবে। সুতরাং আমরা সবাই মিলে যখন কাজ করবো তখন একটা কমন পরিকল্পনা নিতেই হবে। সেটা আমরা সবাই ফলো করবো। একটা প্ল্যাটফর্ম থাকতে হবে। তা না করে বিভিন্নভাবে কাজ করলে হবে না।’

আলোচনায় আরও অংশ নেন ইতিহাসবিদ ও গবেষক অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট কাজী ফিরোজ রশীদ, সাবেক সেনা কর্মকর্তা গোলাম হেলাল মোর্শেদ খান, মানবাধিকারকর্মী রোকেয়া কবীর, কালবেলার প্রধান সম্পাদক আবেদ খান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর এবং প্রজন্ম একাত্তরের সভাপতি আসিফ মুনীর।

মুনতাসির মামুন বলেন, ‘১৯৭১ সালে বাংলাদেশের গণহত্যা নিয়ে একটি রাজনীতি আছে। হলোকাস্টকে সবচেয়ে বড় গণহত্যা বলা হলেও সময়ের পরিসরে বিচার করলে একাত্তরে এত অল্প সময়ে এত মানুষ কোনো দেশে হত্যা করা হয়নি। একইসঙ্গে এত নারীও ধর্ষেণের শিকার হয়নি।’

এই ইতিহাসবিদ বলেন, ‘রুয়ান্ডা, বসনিয়ার গণহত্যা সম্পর্কে সবাই জানলেও বাংলাদেশের গণহত্যা সম্পর্কে কেউ জানে না। এর পেছনের রাজনীতি হলো- যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র, চীনের মতো সুপারপাওয়ার গুলো সেউ আমাদের পাশে ছিল না। ছিল ভারত, সোভিয়েত রাশিয়া ও তার প্রভাব বলয়ের মধ্যে থাকা কিছু দেশ। সে অবস্থায় লুঙ্গিপরা কিছু মানুষ পৃথিবীর পঞ্চম বা ষষ্ঠ সেনাবাহিনীকে হারিয়ে দিল, এটা তারা মানতে পারেনি। ফলে তারা রাজনৈতিক ঐক্যমতে পৌঁছায় যে এটা নিয়ে খুব বেশি আলোচনার কিছু নেই।’

মুনতাসির মামুন আরও বলেন, ‘অভ্যন্তরীণভাবে বিএনপি বা জাতীয় পার্টি কখনও গণহত্যাকে জোর দেয়নি। জোর দেয়া হয়েছে বিজয়ের ওপর। তারা ঘাতকদের পুনর্বাসিত করেছেন, ক্ষমতায় এনেছেন। তারা যদি গণহত্যার কথা বলে তাহলে ঘাতকদের কথাও বলতে হবে। এজন্যই সেকথা হারিয়ে গেছে। তবে কাকতালীয়ভাবে কয়েকবছর আগে থেকে বাংলাদেশে গণহত্যা দিবস পালন করা হচ্ছে। গণহত্যা জাদুঘর করা হয়েছে। এখন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির বিষয়টি আসছে। তবে এখানে আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিষয় আছে।’

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ
 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর