১৩ মে, ২০২৩ ২১:৫৮

সুন্দরবনের বাঘ হরিণ নিয়ে শঙ্কা

বাগেরহাট প্রতিনিধি

সুন্দরবনের বাঘ হরিণ নিয়ে শঙ্কা

মোখা’র প্রভাবে উপকূলীয় জেলাগুলোয় সবোর্চ্চ ১২ ফুট জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদফতর থেকে জানানো হয়েছে। এতে সুন্দরবনের বাঘ হরিণসহ বন্যপ্রাণীর আবারো ভেসে মারা যাবার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সুপার সাইক্লোন সিডর, আইলা, মহসিন, বুলবুল, আম্ফান ও ইয়াসের মতো ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে মারা যায় সুন্দরবনের অনেক বাঘ হরিণসহ অনেক বন্যপ্রাণী। তবে, বন বিভাগ বলছে, ঘূর্ণিঝড় মোখা কক্সবাজার-চট্টগ্রাম এলাকায় আঘাত হানতে যাওয়ায় অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস না হলে সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী ভেসে মারা যাবার সম্ভাবনা খুবই কম। 

ঘূর্ণিঝড় মোখা’র কারণে শনিবার ভোর থেকে সুন্দরবনে পর্যটকসহ সব ধরনের বনজীবীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে বন বিভাগ। এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র কারণে মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেল থেকে সব লাইটার জাহাজকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। বর্তমানে মোংলা বন্দর চ্যানেলে নিরাপদে পন্যবাহী ১১টি বাণিজ্যিক জাহাজ নোঙ্গর করে রয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের বড় ৬টি যুদ্ধ জাহাজ মোংলা বন্দরে এসে নোঙ্গর করেছে। এসব যুদ্ধ জাহাজের মধ্যে রয়েছে নৌবাহিনীর বিএনএস বঙ্গবন্ধু, বিএনএস স্বাধীনতা, বিএনএস প্রত্যাশা, বিএনএস প্রত্যায় ও কোস্টগার্ডের বিসিজিএস তাজউদ্দিন ও বিসিজিএস সৈয়দ নজরুল। বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলার ১০টি পয়েন্টে পানি উন্নয়ন বের্ডের ১০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় জলোচ্ছ্বাসের হুমকিতে রয়েছে কয়েক লাখ মানুষ। 

সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখা’র কারণে শনিবার ভোর থেকে সুন্দরবনে পর্যটকসহ সব ধরনের বনজীবীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ৩০টি হরিণ, ১২৩টি লবন পানি প্রজাতির কুমির ও বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির ৪৩২টি বাটাগুর বাচকা কচ্ছপ নিরাপদ রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সুন্দরবনে ৮৮টি পুকুরের পাড় উচু থাকায় ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের সময় বন্যপ্রাণীরা সেখানে আশ্রয় নিয়ে থাকে বলে জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস না হলে এবার সুন্দরবনের বন্যপ্রানী ভেসে মারা যাবার সম্ভাবনা খুবই কম। সর্বশেষ জরিপে সুন্দরবনে ১১৪টি বাঘ, দুই লাখ হরিণ, ৫০ হাজার বন্য শুকর, ৪০ হাজার বানর, ৩০০ কুমির, ৩০ হাজার উদবিড়ালসহ ৩৭৫ প্রজাতির বিভিন্ন বন্যপ্রাণী রয়েছে।   
 
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার ক্যাপটেন মোহাম্মদ শাহিন মজিদ জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র কারণে মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেল থেকে সব লাইটার জাহাজকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। বর্তমানে মোংলা বন্দর  চ্যানেলে নিরাপদে পন্যবাহী ১১টি বাণিজ্যিক জাহাজ নোঙ্গর করে রয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের বড় ৬টি যুদ্ধ জাহাজ মোংলা বন্দরে এসে নোঙ্গর করেছে। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ বন্দরে এলার্ট নম্বর -‘২’ জারি রয়েছে। সতর্ক সংকেত আরও বাড়ানো হলে বন্দরে পন্য ওঠা-নামার বন্ধ করা হবে। 

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর