প্রযুক্তি শুধু উদ্ভাবন করতে নয় বরং এই উদ্ভাবিত প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে দক্ষ জনবল রয়েছে ঠিকই, তবে প্রয়োজন এখন বাস্তবায়নের। এমন মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান।
বুধবার ইনোভেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েটস (আইডিয়া) ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ, এসপায়ার টু ইনোভেট-এটুআই ও বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম (বিবিএফ)-এর সহযোগিতায় “স্মার্ট বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক” উদ্বোধনী সেমিনারে স্মার্ট বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধিকে অব্যাহত রাখতে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের লক্ষ্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, “দেশের উন্নয়নে ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি সংস্থাসমূহ কাজ করে যাচ্ছে। দারিদ্রতা সর্বনিম্ন রাখা, ক্যাশলেস সোসাইটি নির্মাণে পেপারলেস বাণিজ্য, সর্বস্তরে শিক্ষার প্রসার, উচ্চ শিক্ষায় উদ্ভাবনী প্রযুক্তির ব্যবহার ও সকলের বিষয়গত চাকরি নিশ্চিতসহ নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা, প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষিতে সমৃদ্ধি অর্জনসহ নানামুখী উদ্যোগের অংশ হিসেবে প্রযুক্তির প্রসার অবশ্যম্ভাবী।”
বিশ্বব্যাংকের সাবেক বিকল্প নির্বাহী পরিচালক, সাবেক সচিব ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিডা’র সাবেক চেয়ারম্যান এবং আইডিয়া ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা, সালমান এফ রহমান।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা, সালমান এফ রহমান বলেন, “স্মার্ট বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক-এর মূল কাজ হল একত্রিত করা, যেখানে সবাই একত্রে কাজ করে, যা একটি টেকনোলজি হাব হিসেবে কাজ করবে। এর মাধ্যমে সবাই নিজের প্রয়োজনে পরামর্শজনিত সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবে। আমাদের প্রত্যেকটা নাগরিককে প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ করে তার দৈনন্দিন আর্থিক লেনদেনে সেই প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ তৈরি করে দিয়ে স্মার্ট নেটওয়ার্ক তৈরি করতে হবে। এছাড়াও, সঠিক সময়ে উন্নয়নের ধারা প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত যাতে পৌঁছাতে পারে এবং সবাই যাতে উপকৃত হতে পারে সেই দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এই লক্ষ্যে বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের দেশের এই উদ্যোগ গ্রহণে সব ধরনের দক্ষতা রয়েছে, কিন্তু তার সফল বাস্তবায়নে বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসতে হবে।”
মূল প্রবন্ধ ও নেটওয়ার্কের বিস্তারিত পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন এটুআই-এর পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী এবং আইডিয়া ফাউন্ডেশনের উপ-মহাসচিব ও প্রধান গবেষক হোসাইন এ সামাদ।
সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন আইডিয়া ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রাক্তন মুখ্য সচিব এবং মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি) আবুল কালাম আজাদ, আইডিয়া ফাউন্ডেশনের মহাসচিব ও সাবেক সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হক, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিডা’র চেয়ারম্যান ও সাবেক সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া এবং আইসিটি বিভাগের সচিব সামসুল আরেফিন।
সেমিনারে, ২০৪১ সালে “উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ” ও ২১০০ সালের “নিরাপদ ও পরিকল্পিত বদ্বীপ”-সহ স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট সমাজ এবং স্মার্ট অর্থনীতিতে- এই চার মূল স্তম্ভের ওপর সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় টেকসই উন্নয়ন যা সুখী-সমৃদ্ধ উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথকে সহজতর এবং এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে ডিজিটালাইজেশনের গুরুত্ব এবং এর পরিষেবায় সকলের অংশগ্রহণ ও ব্যবহার প্রসঙ্গে আলোচনা করেন বক্তারা।
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সংশ্লিষ্ট সকলের মতামত ও পরামর্শ প্রদানের জন্যে আইডিয়া ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে সকলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। মতামত সমূহ বিবেচনা করে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরকে জানানো হবে।
উল্লেখ্য, ইনোভেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েটস (আইডিয়া) ফাউন্ডেশন’ বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সহযোগীদের একটি সংস্থা, যারা স্বাধীন গবেষণা, নীতি বিশ্লেষণ, অ্যাডভোকেসি, উপদেষ্টা এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে নিযুক্ত।
বিডি প্রতিদিন/কালাম