সারা দেশে গেল জুলাই মাসে ৩৩৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৭২ জন নিহত ও ৫৪৩ জন আহত হয়েছে। এই সময়ে ১০৯টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১২১ জন নিহত, ৮১ জন আহত হয়েছে। যা মোট দুর্ঘটনার ৩২.৪৪ শতাংশ, নিহতের ৩২.৫২ শতাংশ ও আহতের ১৪.৯১ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার যাত্রী কল্যাণ সমিতি মাসিক দুর্ঘটনাসংক্রান্ত প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানা গেছে।
সংগঠনের দুর্ঘটনার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাই মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে ঢাকা বিভাগে। ৮৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৯২ জন নিহত ও ১৩৩ জন আহত হয়েছে। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগে। ১৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত ও ১৩ জন আহত হয়েছে।
আজ রোড সেফটি ফাউন্ডেশন নামের আরেকটি সংগঠন তাদের দুর্ঘটনায় প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এই সংগঠনটির হিসাবে জুলাই মাসে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪৫২টি। এতে নিহত হয়েছে ৪৮৭ জন এবং আহত ৬৭৯ জন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, জুন মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় ৬৪৪ জন নিহত হয়েছিল।
সেই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে নিহত হয়েছিল ২১.৪৬ জন। জুলাই মাসে প্রতিদিন গড়ে নিহত হয়েছে ১৫.৭০ জন। এই হিসাবে জুলাই মাসে প্রাণহানি কমেছে ২৬.৮৪ শতাংশ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কারণে জুলাই মাসের বেশ কিছুদিন যান চলাচল বন্ধ ছিল। মানুষ স্বাভাবিকভাবে যাতায়াত করেনি। সে জন্য দুর্ঘটনা ও মৃত্যুহার উভয়ই কমেছে।
দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে দুই সংগঠনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটছে অতিরিক্ত গতির কারণে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে। তাই গতি নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তির মাধ্যমে নজরদারি এবং চালকদের মোটিভেশনাল প্রশিক্ষণ দরকার। বেপরোয়া যানবাহন এবং পথচারীদের অসচেতনতার কারণে পথচারী নিহতের ঘটনা বাড়ছে। এ জন্য সরকারি উদ্যোগে গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জীবনমুখী সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাতে হবে।
এ ছাড়া পেশাগত সুযোগ-সুবিধা, বিশেষ করে নিয়োগপত্র, বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকার কারণে বাস এবং পণ্যবাহী যানবাহনের অধিকাংশ চালক শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ। তাদের মধ্যে জীবনবোধ ঠিকমতো কাজ করে না।
পণ্যবাহী যানবাহন চালকদের মধ্যে এই প্রবণতা প্রকট। তারা সব সময় অস্বাভাবিক আচরণ করেন এবং বেপরোয়াভাবে যানবাহন চালান। ফলে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হন। পরিবহন চালকদের পেশাগত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত না করলে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত