আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, শেখ হাসিনা ব্যক্তি হিসেবে কতটা অমানুষ হয়েছিলো সেটা জনমানুষ ঠিকই বুঝেছিল।
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত জুলাই কারাবন্দীদের স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
আজ বুধবার বিকালে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় এই আয়োজন।
ড. আসিফ নজরুল আরও বলেন, বিগত ১৫ বছরে আমরা একটা পরিবার ছিলাম।
তিনি বলেন, মীর কাশেম আলীর ছেলের মুখে আয়নাঘরের টর্চার সেলের নির্যাতনের বর্ণনা শুনে আমি রীতিমতো বিস্মিত। তিনি আমাকে বললেন প্লেনের ওয়াশরুমের সমপরিমাণ আয়তনের একটা অন্ধকার রুমে রাখা হয়েছিল। গত আট বছরে বুঝিনি কখন দিন হলো আর কখন রাত হলো।
আসিফ নজরুল বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সবাই একসাথে আন্দোলন করেছিল। তখন কেউই চিন্তা করিনি কে মুসলিম, কে হিন্দু, কে ধনী, কে গরীব, কে বিএনপি, কে জামায়াত আমরা এসব নিয়ে কখনোই চিন্তা করিনি। গণঅভ্যুত্থানের নেতারা প্রত্যেকে প্রত্যেককে শ্রদ্ধা করতো। ১৫ বছরে জামায়াত বিএনপি সবাই ঐক্যবদ্ধ ছিল। কিন্তু বর্তমানের বিভেদটা আমাদেরকে কষ্ট দেয়। জুলাই থেকে কি পেলাম সেটা না ভেবে জুলাইকে কি দিলাম সেটা ভাবতে হবে। আওয়ামী লীগ বাদে আমরা সবাই জুলাই যোদ্ধা। যদি আপনারা মনে করেন তালিকা করা দরকার তাহলে আমাদের জুলাই জাদুঘরে সেটা ডকুমেন্টেশন হিসেবে রাখা হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় পরিবেশ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান বলেন, কিশোর কিশোরী তরুণ তরুণীসহ সবাই অকুতোভয় চিত্তে যদি নেমে না আসতো তাহলে হাসিনাকে সরানো কখনোই সম্ভব হতো না। নিজের জীবনের মায়া ত্যাগ করে নিঃস্বার্থভাবে ছাত্র জনতা এগিয়ে আসাতেই এটা সম্ভব হয়েছে। আমরা আজকে জেলখানার বন্দিদের নিয়ে কথা বলছি, কিন্তু হাসিনার সময়ে গোটা দেশটাই ছিলো একটা জেলখানা। মানুষ কথা বলতে পারতো না। মানুষের স্বাধীনতা ছিলো না। জেলখানায় যাবে চোর, খুনি আর লুটেরারা কিন্তু আমাদের জেলখানায় ঢোকানো হলো ছাত্রদের, বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের আর হাসিনার দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কথা বলা মানুষদের।
জুলাই যোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের জেলজীবনের দুঃসহ স্মৃতিগুলো লিখে জমা দেন। সেটা আমরা জুলাই জাদুঘরে লিপিবদ্ধ করে রাখবো। জুলাইয়ের সময়ের কারাবরণকারীরা ছাড়াও যারা ১৫ বছর ঠিকমতো ঘরে ঘুমাতে পারেননি আপনারা সবাই আপনাদের স্মৃতিগুলো লিখে জমা দেন।
এতে আরো বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর, এবি পাটির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্যসচিব আখতার হোসেন প্রমুখ।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ