শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদধারী কর্মকর্তারা কীভাবে বহাল আছেন : পীর মিসবাহ

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ নেওয়ার দায়ে দুদকের অভিযোগের পরও সরকারের শীর্ষ পাঁচ কর্মকর্তা কীভাবে স্বপদে বহাল রয়েছেন তা জানতে চেয়েছেন জাতীয় পার্টির এমপি পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ।

ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাবি্ব মিয়ার সভাপতিত্বে গতকাল জাতীয় সংসদে তিনি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর কাছে এ সম্পূরক প্রশ্ন উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, সরকারের শীর্ষ পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদক ভুয়া সনদ নেওয়ার অভিযোগ দায়ের করার পরও তারা এখনো সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে বহাল তবিয়তে কর্মরত আছেন। তাদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না?

জবাবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, 'মাননীয় সংসদ সদস্য যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আইনানুগভাবে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আশা করি। জাতি এ বিষয়ে হতাশ হবে না। তবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় শুধু ভুয়া সনদ বাতিলের ক্ষমতা রাখে। আমরা বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ভুয়া সনদ বাতিলের ব্যবস্থা নিতে পারি এবং তা করব।' তিনি আরও বলেন, '২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত কে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন, তা-ই আমাদের কাছে বিবেচ্য বিষয়। বর্তমান সময়ে কে মন্ত্রী, কে এমপি, কে সরকারের কোন পদে অধিষ্ঠিত রয়েছেন তা আমাদের বিবেচ্য নয়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অপরাধের সঙ্গে জড়িত কি না তা-ই বিবেচ্য। আমি সংসদ ও জাতিকে আশ্বস্ত করে বলতে চাই- কারও পদমর্যাদা দিয়ে অপরাধের বিবেচনা করা হবে না।' ফজিলাতুন্নেছা বাপ্পির (মহিলা আসন-৩০) অন্য এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ফৌজদারি মামলা হয় প্রতারণা ও অবৈধভাবে অর্থ আত্দসাৎ বা সুবিধা নেওয়ার জন্য। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ গ্রহণে যারা প্রতারণার মাধ্যমে এসব সুবিধা নিয়েছেন রাষ্ট্র অবশ্যই তা আদায় করবে। মমতাজ বেগমের (মানিকগঞ্জ-২) সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, রাজস্ব উদ্ধারের জন্য আদালতের রায়ের অপেক্ষা করতে হবে। একবার মামলা হয়ে গেলে আর কিছু করার থাকে না।

মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের ৫৫ একর জমি ও ১৭টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে

এ কে এম রহমত উল্লাহর (ঢাকা-১১) প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী সংসদকে জানান, সারা দেশে বর্তমানে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের অনুকূলে ৫৫ দশমিক ৭২৪৫ একর জমি ও ১৭টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

জেলা ও উপজেলার চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের দ্রুত বিচার আইনে বিচার করা হবে

নুরজাহান বেগমের (মহিলা আসন-৪২) প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছে। ইতিমধ্যে কয়েকজনের বিচারের রায় ঘোষিত হয়েছে। বেশ কয়েকজনের রায় প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে এবং অন্যদের বিচারকাজও এগিয়ে চলছে। অভিযোগপ্রাপ্তি সাপেক্ষে জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও চিহ্নিত রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীপ্রধানদের দ্রুত বিচার আইনের আওতায় এনে বিচারকাজ শুরু করা হবে। ভবিষ্যতে রাজাকার, আলবদর ও মানবতাবিরোধীদের উপজেলাভিত্তিক তালিকা করার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ গ্রহণের সম্ভাবনা রয়েছে।

সর্বশেষ খবর