বুধবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

বিশ্বব্যাংক আইনের ঊর্ধ্বে নয় : আইনমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মামলা করার অবকাশ নেই। কারণ আমরা এ বিষয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছি এবং আমরা সেই ব্যাংকের একজন সদস্য। কিন্তু এটাও সত্য, বিশ্বব্যাংক আইনের ঊর্ধ্বে নয়। পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগে যারা ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তারা যে আইনি ব্যবস্থা নিতে পারবেন না, তা নয়। আমার মনে হয় তাদের এ ব্যাপারে আইনি পরামর্শ নেওয়া উচিত। গতকাল একটি মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবিধান, বিচার বিভাগ ও মানবাধিকার-বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম (এলআরএফ) এর আয়োজন করে। এলআরএফ সভাপতি আশুতোষ সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. দিদারুল আলম দিদার। আইনমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে তথ্য দিয়েছেন তার ওপর ভিত্তি করে আমি মনে করি, ইউনূস সাহেব এই প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধের পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নে আনিসুল হক বলেন, এটা অপরাধ কিনা তাও তো চিন্তা করতে হবে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা কী নেওয়া হবে তা আমি এখন বলতে পারব না। কানাডার আদালতে পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগ খারিজ হওয়ার বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, এ রায়ে বাংলাদেশের মর্যাদা অনেক বেড়ে গেছে।

 আমরা যে একটা সহিষ্ণু জাতি তাও প্রমাণিত হয়েছে। আমরা যে কারও কাছে মাথানত করি না সেটা আমাদের শিখিয়েছেন; কেউ মানুক আর না মানুক, তা প্রমাণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কারণ তিনি সেদিন বলেছিলেন, এই দুর্নীতির অভিযোগ তোমরা প্রমাণ কর, আমি ব্যবস্থা নেব। তোমরা যখন পদ্মা সেতুর টাকা দেবে না, আমাদের সেই সঙ্গতি থাকলে পদ্মা সেতু আমরা নিজেদের টাকায় করব। আজকে পদ্মা সেতু বাংলাদেশের জনগণের টাকায় হচ্ছে, এর চেয়ে বড় গৌরবের বিষয় আর কিছু নেই।

মামলাজটের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, মামলাজট নিরসনে শেখ হাসিনার সরকারের মতো অন্য কোনো সরকার এত সিরিয়াসলি কাজ করেনি। মামলাজট নিরসনে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলো দ্রুত শেষ করতে হবে। তাহলে মানুষের কাছে এই বার্তা পৌঁছাবে যে, বিচারের বাণী নীরবে-নিভৃতে কাঁদে না। পুরনো মামলার জট নিষ্পত্তিতেও পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, দেওয়ানি মামলার নিষ্পত্তিতে সবচেয়ে বেশি বিলম্ব ঘটে। এটা দুঃখজনক যে, একটি মামলার নিষ্পত্তিতে ২০ থেকে ৪০ বছরও দৌড়াতে হয়। বিচারক নিয়োগের আইনের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, বিচারক নিয়োগের আইন প্রণয়নের ড্রাফট দাঁড় করানোর চেষ্টা চলছে। সরকারের এই মেয়াদের মধ্যেই এ আইন প্রণয়ন করা হবে।

নিম্ন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধির গেজেট প্রকাশের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, বিষয়টির প্রয়োজনীয়তা আছে বলেই ড্রাফট করা হয়েছিল। গেজেট প্রকাশ করা বা না করার বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেয়নি। এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। তবে গেজেট কিছু দিনের মধ্যেই প্রকাশ করা হবে বলেও মন্ত্রী জানান। বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয়ের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, বিচার বিভাগের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুই সরকার করবে। তবে তা প্রয়োজন মাফিক।

সর্বশেষ খবর