শুক্রবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

রিজার্ভ শিগগিরই শক্ত অবস্থানে ফিরবে

------------- অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, সরকার অপ্রয়োজনীয় ও বিলাসপণ্যের আমদানি নিরুৎসাহিত করেছে। এ পদক্ষেপ নেওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও খুব দ্রুত আগের মতো শক্ত অবস্থানে ফিরবে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল ও এলএনজির দাম কমতে থাকায় মূল্যস্ফীতির চাপ চলতি অর্থবছরের শেষ নাগাদ সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসবে।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের ২১তম অধিবেশনে গতকালের বৈঠকে উপস্থাপিত চলতি (২০২২-২৩) অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বাজেট বাস্তবায়নের অগ্রগতি প্রতিবেদনে তিনি এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘কভিড-পরবর্তী সময়ে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড স্বাভাবিক হয়ে আসা এবং মধ্যবর্তী পণ্য ও মূলধনি যন্ত্রপাতির আমদানি বেড়ে যাওয়ায় আমদানি ব্যয় গত অর্থবছরের একই সময়ে অনেক বেড়েছিল। বর্তমানে বিলাসপণ্যের আমদানি পরিহার করা ও সরকারের কৃচ্ছ্রসাধন নীতির কারণে আমদানি খরচ কমেছে।’ প্রতিবেদনে চলতি অর্থবছর রাজস্ব আহরণ আশানুরূপ হারে বাড়বে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আর্থিক খাতে খেলাপি ঋণের মাত্রা কমিয়ে আনাসহ আমানতকারীদের স্বার্থ সুরক্ষা করা ও কাক্সিক্ষত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়ানোর মাধ্যমে বিনিয়োগের গতিধারা সমুন্নত রাখতে সরকার সচেষ্ট। তিনি বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতির অন্তর্নিহিত শক্তি, বিভিন্ন বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ অভিঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের নেওয়া বাস্তবমুখী পদক্ষেপের ফলে অর্থনীতির প্রত্যাশিত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও বিরূপ প্রভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। এসব বৈরী পরিস্থিতি মোকাবিলা করে দেশ সামষ্টিক অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সামনে এগিয়ে যেতে পারবে বলে আশা করছি।’

চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘এতে আশাবাদী হওয়ার পূর্ণ সুযোগ আছে। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এবার জুলাই প্রান্তিকে রাজস্ব আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে। সরকারি ব্যয়ও বেড়েছে। রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি আমদানি ব্যয়ের প্রবৃদ্ধি কমেছে। চলমান মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, গত অর্থবছরের প্রথম তিন মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময়ে আমদানি ঋণপত্র ৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ কম খোলা হয়েছে।

বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ছিল ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। সেই তুলনায় ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর সময়ে বেড়ে হয়েছে ৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ। অন্যদিকে পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি সেপ্টেম্বর ২০২১-এর ৫ দশমিক ৫৯ শতাংশের তুলনায় সেপ্টেম্বর ২০২২-এ ৯ দশমিক ১০ শতাংশ হয়েছে।’

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) রাজস্ব আয়, রেমিট্যান্স, রপ্তানি প্রবৃদ্ধি, এডিপির ব্যয়, ব্যাপক মুদ্রা সরবরাহসহ মৌলিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক চালকগুলোর অবস্থান সন্তোষজনক। আমদানি ও রপ্তানি আয়ে ধনাত্মক প্রভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। চলতি অর্থবছর সরকারের কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জিত হবে বলে আশা করছি।’

 

সর্বশেষ খবর