হাউজ অব কমন্সের বিশেষ অধিবেশনে পাশ হয়েছে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর প্রস্তাবিত ৮২ বিলিয়ন ডলারের ‘কোভিড-১৯’ এইড প্যাকেজ। এতে সকল দলের সর্বসম্মতি পাওয়া গেছে। তবে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এ বছরের ৩০ মার্চ থেকে ১৫ দিন অন্তর অর্থমন্ত্রী বিল মনরো করোনাভাইরাস সংক্রান্ত গৃহীত পদক্ষেপের বিবরণী পার্লামেন্টের পরবর্তী ২০ এপ্রিলের অধিবেশন থেকে দেয়া শুরু করবেন। একই সঙ্গে ‘কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যাক্ট’-এর অধীনে বিলটি ‘রয়্যাল অ্যাসেন্ট’ বা রাজকীয় অনুমতি প্রাপ্তির দিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে সংসদীয় অর্থ কমিটি তাদের অনুসন্ধানে উদ্ঘাটিত বিষয়াবলী আগামী বছরের ৩১ মার্চের অধিবেশনে তুলে ধরবে।
কনজারভেটিভ পার্টি ওই বিলের ক্ষেত্রে তাদের জোর আপত্তি উত্থাপন করে বিষয়টিকে সরকারি দলের ‘পাওয়ার গ্র্যাব’ হিসেবে আখ্যা দেয়। ফলশ্রুতিতে সংসদ সদস্যদের মাঝে দিনভর আলোচনার সূত্রপাত ঘটে এবং বুধবার অতি প্রত্যুষে তার অবসান শেষে হাউজ অব কমন্সে দ্রুতই বিলটি পাশ হয় এবং তা ‘থার্ড রিডিং’ বা তৃতীয় পঠন শেষে সিনেটে রাজকীয় অনুমতির জন্য পাঠানো হয়।
কনজারভেটিভ নেতা অ্যান্ড্রু শিয়ার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো প্রস্তাবিত ওই বিলের ক্ষেত্রে তার দলের কোনোই আপত্তি ছিল না, তবে তারা প্রায় দু-বছর ধরে ওই বিলের আওতায় ব্যয় ও করারোপের ক্ষেত্রে সরকারকে কোনো ‘ব্লাঙ্কচেক’ দিতে রাজি হননি, যা প্রারম্ভিকভাবে ওই বিলের খসড়ায় সন্নিবেশ করে অনুলিপি আকারে সোমবার তাদের প্রদান করা হয়। তিনি আরও বলেন, ‘কানাডিয়ানরা আমাদের পাণে তাকিয়ে আছে। তাই তাতে ক্ষমতা প্রদান মূখ্য বিষয় হতে পারে না।’
সাধারণ কানাডিয়ানদের জন্য ওই বিলে তাৎক্ষণিক সুবিধা হিসেবে যা থাকছে;
১) অস্থায়ী প্রক্রিয়াধীনে কানাডা চাইল্ড ট্যাক্স বেনিফিটে সংযোজিত হবে অতিরিক্ত ২ বিলিয়ন ডলারের প্রণাদনা।
২) অসুস্থতায় ছুটিবিহীন কিংবা চাকরির বীমা (ইআই) নেই এমন সেল্ফ-এমপ্লয়েডদের জন্য পাক্ষিক (১৫ দিন) সর্বোচ্চ ৯০০ ডলারের প্রাপ্তির সুবিধা, যাতে ব্যয় হবে ১০ বিলিয়ন ডলার।
২) জরুরি সেবার উপযোগ হিসেবে চাকরিবীমার (ইআই) সুফল বঞ্চিত বেকারদের জন্য ৫ বিলিয়ন ডলারের আর্থিক প্রণোদনা।
৩) ছয় মাসের সুদবিহীন রিপ্রিভ বা দায়হীন স্টুডেন্ট লোন পেমেন্ট।
৪) গৃহহীন সেবা প্রদান কার্যক্রম দ্বিগুণ করা।
৫ জুনের ১ তারিখ পর্যন্ত টেক্স ফাইলের সুযোগ সীমা বর্ধিতকরণ।
৬) ৩১ আগস্ট পর্যন্ত করদাতাদের কর প্রদান রহিতকরণ।
৭) আদিবাসী, ফার্স্ট নেশন, ইনুইট ও মেটিস সম্প্রদায়ের জরুরি সাহায্যার্থে ৩০৫ মিলিয়ন ডলারের নতুন ‘ইনডিজিনিয়াস কমিউনিটি সাপোর্ট ফান্ড’ প্রদান।
৮) এছাড়া স্বল্প-উপার্জনক্ষম, গৃহহীন ও আশ্রিত কানাডিয়ানদের জন্য অপরাপর সুবিধার পাশাপাশি রয়েছে অতিরিক্ত ‘জিএসটি’ ক্রেডিট।
প্রসঙ্গত, করোনায় কানাডায় আক্রান্ত হয়েছে ৭০১ জন, মোট মৃত সংখ্যা ২৮ জনে। আর আক্রান্ত ২,৭৯২ এবং ১১২ জন সুস্থ হয়েছেন ।
উল্লেখ্য, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ এর উপর সম্প্রতি দেয়া এক বক্তব্যে তার দেশের নাগরিকদের তাৎক্ষণিক সুবিধার ঘোষণা ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন