পুরনো মানুষের সাথে কথা বললে নাকি আয়ু বাড়ে। আমার আম্মার অনেক ভিলেজ উইজডমের এটাও একটা। সত্য-মিথ্যা জানি না। তবে এটা জানি পুরনো মানুষের সাথে কথা হইলে মনটা তাজা হয়।
আমার যেমন হইছে একটু আগে আফজাল ভাইয়ের সাথে কথা বলে। উনি ফোন দিছিলেন ইউনিসেফের জন্য আমাদের কাজটা দেখে। সেটা কথা না, কথা হচ্ছে আফজাল ভাই'র সাথে আলাপ মানে মনটা ভরে যাওয়া। বাংলাদেশের সংস্কৃতি এবং সাংবাদিকতা জগতের নেপথ্য নায়ক শাহাদত চৌধুরী থেকে শুরু করে ডোনাল্ড ট্রাম্প সবই ছিলো অতি উপভোগ্য সেই আড্ডার অংশ।
এই আলাপের একটা প্রসঙ্গ এখানে বলতে চাই। উনি বলতেছিলেন সমাজে মূল্যবোধ প্রসঙ্গে। দুইটা উদাহরণ দিছেন উনি। একটা ওয়াজের। আগে উনাদের গ্রামে ওয়াজ হইতো। ওয়াজে হিন্দু-মুসলমান দুইদলই থাকতো। সারারাত ওয়াজে শেষে ভোর রাতে তারা এক সাথে খাইতে বসতো। আর এখন, ওয়াজে বলতে শুনি, করোনা আসছে ইহুদীদের বা হিন্দুদের জন্য।
দ্বিতীয়টা যাত্রাপালার। আগে বিবেক স্টেজে উঠলে দর্শক সারি তালিতে ফেটে পড়তো। আর এখন, বিবেক উঠলে জুতা মারে। কারন সবাই স্ট্রিপ ড্যান্স দেখতে চায়।
ও শেষে একটা কথা বলতে চাই যারা জানেন না তাদের জন্য! আফজাল ভাই যখন সুপার স্টার এবং প্রায় মিথিক্যাল চরিত্র, তখন কি এক অজানা কারনে উনি আমাকে প্রশ্রয় দিছিলেন। শুধু তাই না, উনি আমার করা একটা টেলিফিল্ম বাজার মূল্যের চেয়ে অনেক বেশী দামে কিনে নিছিলেন যাতে আমি বসে না থেকে আরেকটা কাজ করতে পারি। এবং যথারীতি সেই কাজটা উনি অতো দামে বেচতে পারেননি বিধায় ফেলেই রেখেছেন।
পরে আমার এক আধটু নাম হওয়ার পর উনি বিটিভিতে সেটা চালানোর সুযোগ পেলেন ভালো দামে। ততদিনে আমার ফিল্ম মেকিংয়ের স্টাইল বদলে গেছে। ঐটা তখন আর ঐ সময়ে আমার নামের প্রতি সুবিচার করবে না ভেবে, আমি উনারে ফোন করে বললাম "আফজাল ভাই, ঐ কাজটা চালাইয়েন না।"
উনি বললেন, "তথাস্তু"! এই মানুষ এখন কই পাবো আমরা? কোথায় পাবো তারে?
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
বিডি-প্রতিদিন/সিফাত আব্দুল্লাহ