নিউ ইয়র্কসহ সমগ্র আমেরিকায় মাস্কের নিদারুণ সংকট চলছে। মার্চের শুরুতেই বাজার থেকে মাস্ক এবং হ্যান্ড সেনিটাইজার উধাও হয়েছে। উচ্চ মূল্যে অনেকে অনলাইনে অর্ডার দিয়েও পাচ্ছেন না। এ অবস্থায় কমিউনিটির বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে বিভিন্ন কোম্পানির তৈরি করা মাস্ক এবং হ্যান্ড সেনিটাইজার বিতরণ করা হয় বিনামূল্যে।
নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ সোসাইটি সবচেয়ে কল্যাণকর দায়িত্ব পালন করছে অসহায় প্রবাসীদের লাশ দাফন-কাফনে সহযোগিতা করে। করোনায় আক্রান্তদের খোঁজ-খবর রাখেন এবং মৃতদের লাশের দাফন-কাফনে ফিউনারেল হোমের সাথে সমন্বয় সাধনকারী সমাজকর্মীদের অন্যতম কাজী সাখাওয়াত হোসেন আজম সর্বশেষ ১৫ এপ্রিল বেশ কয়েক শত মাস্ক বিভিন্ন স্থানে বিতরণ করেছেন।
এর আগে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির তৃণমূলের সংগঠক ফাহাদ সোলায়মান, বাংলা চ্যানেলের শাহ জে চৌধুরী, ডাক্তার বাড়ির বিশেষজ্ঞ-চিকিৎসক ফেরদৌস খন্দকার করোনায় থমকে যাওয়া জনপদে মাস্ক, হ্যান্ড সেনিটাইজার বিতরণ করেছেন।
নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ সোসাইটির নিজস্ব গোরস্থানে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত করোনায় মারা যাওয়া ৬৬ প্রবাসীর লাশ দাফন করা হয়। সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দিকী জানান, লং আইল্যান্ডে ওয়াশিংটন মেমরিয়্যাল মার্ক এবং নিউজার্সির মার্লবরোতে আরও কয়েক শত কবর রয়েছে বাংলাদেশ সোসাইটির। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতদের মধ্যে যারা একেবারেই অসহায় তাদেরকে বিনামূল্যে সেখানে দাফন করা হবে।
অপরদিকে, কুইন্সে জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের পক্ষ থেকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে থাকা অথবা করোনা আতংকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে বাসার বাইরে যেতে অক্ষম প্রবাসীদের খাদ্য-সামগ্রী ক্রয়ের জন্যে পরিবার পিছু একশত ডলার করে দিচ্ছে।
মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী জানান, আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা এসব অর্থ বিতরণ অথবা প্রয়োজন অনুযায়ী গ্রোসারি সামগ্রি ক্রয় করে সংশ্লিষ্টদের বাসায় দিচ্ছেন। ১৫ এপ্রিল এক টেলি-কনফারেন্সে উত্তর আমেরিকাস্থ মুসলিম উম্মাহ (মুনা)’র পক্ষ থেকে চলমান নানা সেবামূলক কর্মসূচির বিবরণ উপস্থাপন করা হয়। আসন্ন রমজানে ১০ হাজার রোজাদার পরিবারকে ‘ইফতারি-বক্স’ প্রদান করবে তারা।
গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে এই টেলি-কনফারেন্সে মুনার জাতীয় প্রেসিডেন্ট ইমাম দেলোয়ার হোসাইন আরও জানান, করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসা-সেবার পাশাপাশি খাদ্য-সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে সমগ্র যুক্তরাষ্ট্রে। এজন্য চিকিৎসকসহ ৮০ জন স্বেচ্ছাসেবকের সমন্বয়ে একটি টিম দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা কাজ করছে।
মুনার জাতীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট আবু আহমেদ নুরুজ্জামান আরও জানান, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন শতাধিক বাংলাদেশি। এরমধ্যে অন্তত ২৩ জনের দাফন-কাফনে সহায়তা দিয়েছি আমরা।
মুনার জাতীয় কমিটির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আরমান চৌধুরী জানান, ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে যারাই বিপদগ্রস্ত তাদের জন্যেই আমাদের সেবা-কার্যক্রম বিস্তৃত। মুনার হটলাইন হচ্ছে ৮৭৭-৬৮৬-২৭৭২। ক্যালিফোর্নিয়া, ওরেগণ, মিশিগান, ওয়াশিংটন মেট্র, ফিলাডেলফিয়া, নিউজার্সি এবং নিউইয়র্কের ৬০ জনের অধিক সাংবাদিক এতে অংশ নেন।
প্রসঙ্গত, আসছে ৩-৫ জুলাইতে ফিলাডেলফিয়ায় মুনার ন্যাশনাল কনভেনশন হবার কথা ছিল। সেটি ইতোমধ্যেই বাতিল করা হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন