২৫ অক্টোবর, ২০২২ ১৭:৫৬

শিক্ষার্থীবান্ধব ভিসি প্রফেসর ড. মুনাজ আহমেদ নূর

মেহেদী হাসান শিশির

শিক্ষার্থীবান্ধব ভিসি প্রফেসর ড. মুনাজ আহমেদ নূর

প্রফেসর ড. মুনাজ আহমেদ নূর

শিক্ষার্থীবান্ধব ভিসি হিসেবে বিডিইউ শিক্ষার্থীদের মণিকোঠায় স্থান করে নিয়েছেন বিডিইউয়ের সাবেক সফল উপাচার্য তথ্য প্রযুক্তিবিদ প্রফেসর ড. মুনাজ আহমেদ নূর। ভিশন ২০২১ বাস্তবায়ন, মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ' স্থাপন করা হয়। 

বাংলাদেশের প্রথম এই বিশেষায়িত ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালটিকে সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে তথ্য ও প্রযুক্তিবিদ অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূর মহোদয়ের উপর বিশ্ববিদ্যালয়টির দায়িত্ব প্রদান করা হয়। তিনি ২০১৮ সালের ১২ জুন যোগদান করেন। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই মেয়াদ শেষ হওয়ার দিন পর্যন্ত সকাল-সন্ধ্যা, শুক্র-শনি বিবেচনা না করে শিক্ষক, কর্মকর্তা- কর্মচারীদের নিয়ে বিডিইউকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে দিনরাত বিরামহীন কাজ করে গিয়েছেন।

চার বছরের মধ্যে আপনার সুদৃঢ় নেতৃত্বে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব উপযোগী দুটি (ইন্টারনেট অব থিংস, আইসিটি ইন এডুকেশন) প্রোগ্রামে ৩০০ তরুণ শিক্ষার্থী নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখছে। তার প্রধান লক্ষ্যই ছিল শিক্ষার্থীদের সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা পদান, তাদের সকল সমস্যার তৎক্ষণাৎ সমাধান সহ তাদের দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি এবং উচ্চতর প্রযুক্তির সাথে সম্পর্কিত যেমন ডিজিটাল ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল টেকনোলজি, রবোটিক্স, ক্লাউড কম্পিউটিং, ই-কমার্স, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবস্থাপনা, সাইবার নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনাসহ অন্যান্য চতুর্থ শিল্পবিপ্লব উপযোগী বিষয়সমূহে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষাদান, গবেষণা ও জ্ঞানের উৎকর্ষ সাধনের ব্যবস্থা করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার মাত্র চার বছরের কম সময়েই অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূর মহোদয় বিশ্বমানের স্মার্ট ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আইসিটি সুবিধা সম্বলিত ক্লাসরুম,ই লাইব্রেরি সুবিধা প্রদান, কম্পিউটার ও ল্যাঙ্গুয়েজ ল্যাবরেটরি,ফিজিক্স ল্যাবরেটরি,আইওটি ল্যাবরেটরি, ডাটা ম্যানেজমেন্ট এন্ড এনালাইটিক্স ল্যাবরেটরি স্থাপন, ইলেক্ট্রনিক্স ল্যাবরেটরি,ডাটা সেন্টার,ইন্টারেক্টিভ ডিজিটাল বোর্ড,লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (এল এম এস),ম্যাসিভ ওপেন অনলাইন কোর্স (মুক),মাই বিডিইউ মোবাইল অ্যাপস,এক্সাম ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ইএমএস)স্থাপন,শিক্ষার্থীদের এক্সেস কার্ড প্রদান,প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েব হোস্টিং এবং ডোমেইন,গুগল জি-স্যুট ফর এডুকেশন প্রদান,প্রক্টরড রিমোট এক্সাম সিস্টেম সফটওয়্যার তৈরি, লাইব্রেরি স্থাপন, ব্লেন্ডেড ক্লাসরুম সল্যুশন প্রদানের মাধ্যমে ব্লেন্ডেড শিক্ষা সহায়ক লাইভ ক্লাসরুম চালু,বিডিরেন কানেকটিভিটি,অনলাইন এডমিশন পোর্টাল,ইআরপি (এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্লানিং)সফটওয়্যার এবং মাইক্রোসফট এম ৩৬৫-এ-৩ এর এক্সেস প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়াও  ভর্তি প্রক্রিয়া অটোমেশন করা হয়েছে যে কারণে শিক্ষার্থীরা বিশ্বের যেকোন জায়গায় বসে মোবাইলেই ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব “মাই বিডিইউ” মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের ফি জমাদান ও পেমেন্ট স্টাটাস জানার ব্যবস্থা রয়েছে।

বিভিন্ন সময়ে অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে শিক্ষার্থীদের ডাটা প্যাকেজ ক্রয় করতে আর্থিক প্রণোদনা প্রদান করা হয়, ওয়েব এপ্লিকেশন ব্যবহার করে সেমিস্টার রেজিস্ট্রেশন এবং পরীক্ষার ফর্ম ফিল-আপ করার সহজ পদ্ধতি চালু রয়েছে। শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ প্যানেল থেকে রেজাল্ট দেখার মত অত্যাধুনিক সুবিধার ব্যবস্থা চলমান, টেন্ডার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সরকারি ইজিপি এর ব্যবহার, কোভিড-১৯ এর মতো দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতেও অনলাইন ক্লাস এর ব্যবস্থা করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূর মহোদয়ের নেতৃত্বে। শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল সার্ভিস প্রদানের লক্ষ্যে ইআরপি (এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্ল্যানিং) সফটওয়্যার উদ্বোধন করা হয়।

শুধু তাই ই নয়, নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ছাত্র-ছাত্রীদের আবাসন সমস্যা সমাধানের জন্য ছেলেদের জন্য ১টি ও মেয়েদের জন্য ২টি আবাসিক হলের সুব্যবস্থা করেন। শিক্ষার্থীদের খাওয়া দাওয়ার সমস্যা সমাধানে রয়েছে ক্যান্টিন এবং ডাইনিং সুবিধা। শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য রয়েছে নিজস্ব বাস। এতো অল্প সময়ে শিক্ষার্থীদের জন্য এতো বেশি সুযোগ সুবিধা কোনো বিশ্ববিদ্যালয় দিতে পেরেছে কিনা তা জানা নেই। 

শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন নতুন নতুন বিষয় জানতে আগ্রহী করতে ও দক্ষতা অর্জনে প্রতিনিয়তই আয়োজন করা হয় বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতা। যেমন- জাতির পিতার জীবন ও কর্মের উপর রচনা ও কুইজ প্রতিযোগিতা,  প্রোগ্রামিং কনটেস্ট, গুগলিং কনটেস্ট, ওয়েবসাইট তৈরি, আইডিয়াথন কনটেস্ট, সেমিনার, বুক রিভিউসহ নানা ধরনের প্রতিযোগিতা। শিক্ষার্থীদের অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী পুনর্পাঠ, বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম ইত্যাদি বই উপহারস্বরূপ প্রদানের মাধ্যমে সর্বদা শিক্ষার্থীদের মুজিব আদর্শ হৃদয়ে ধারণে উৎসাহিত করেন। তিনি সব সময় শিক্ষার্থীদের বলেন, পিতা মুজিবের আদর্শকে বুকে ধারণ করে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার সৈনিক হতে হবে।

আমরা শিক্ষার্থীরা সকলেই মনে করি, সুষ্ঠুতা এবং ক্যাম্পাসে স্থিতিশীলতা, শিক্ষাগত মানোন্নয়ন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং সাংস্কৃতিক তৎপরতার মধ্যে দিয়ে মাননীয় উপাচার্য সুন্দরভাবে চার বছর বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করেছেন। 

এই স্বল্প সময়ে এসব সম্ভব হয়েছে আপনার অক্লান্ত পরিশ্রম, মেধা, দক্ষ নেতৃত্ব আর আন্তরিকতার কারণে। ডিজিটাল বাংলাদেশের একজন অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে আপনি সব সময় সকল শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করে গিয়েছেন অবিরাম, তাদের নতুন নতুন উদ্ভাবন করতে উৎসাহিত করেছেন। শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবিত নতুন নতুন প্রযুক্তি বিশ্বের কাছে তুলে ধরার ব্যবস্থাও করেছেন। তন্মধ্যে শিক্ষার্থীদের তৈরি ভিডিও কনফারেন্সিং সিস্টেম (WCS) উদ্ভাবন অন্যতম যার সার্বিক সহযোগিতা ও দিক নির্দেশনায় ছিলেন আপনি। 

শিক্ষার্থীবান্ধব ভিসি পেয়ে আমরা শিক্ষার্থীরা সত্যিই ধন্য। শিক্ষার্থীদের জন্য তার অগাধ ভালোবাসা ও দায়িত্বশীলতার একটি ছোট উদাহরণ দিয়ে শেষ করবো। সেদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত অফিস শেষ করে ঢাকায় চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু আনুমানিক রাত ৯টায় কালিয়াকৈরে ১ম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সাথে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি জানার সাথে সাথেই আপনি স্থানীয় প্রশাসনের সাথে কথা বলে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। শুধু নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই বসে থাকেননি, সঙ্গে সঙ্গেই ঢাকা থেকে পুনরায় কালিয়াকৈর ফেরত আসেন এবং নিজে দায়িত্ব নিয়ে পিতা হিসেবে সেদিন তার সন্তান তুল্য শিক্ষার্থীদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যান। এমন ঘটনা যেন পরবর্তীতে আর না ঘটে সে বিষয়েও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। শিক্ষার্থীদের জন্য এমন অভিভাবক তুল্য, পিতৃস্নেহ তুল্য অসংখ্য নজীর বা ঘটনা রয়েছে। তিনি বিডিইউকে সবসময় তার নিজ পরিবারের মতো আগলে রেখেছেন। তাই তিনি আজও প্রতিটি শিক্ষার্থীর মণিকোঠায় রয়েছেন প্রিয় অভিভাবক হিসেবে। দ্বিতীয় মেয়াদে ভিসি হিসেবে আমরা পুনরায় অভিভাবক তুল্য, শিক্ষার্থীবান্ধব ভিসি তথ্য প্রযুক্তিবিদ ড. মুনাজ আহমেদ নূর স্যারকেই চাই। 

কারণ আমরা বিশ্বাস করি ডিজিটাল বাংলাদেশের একজন অতন্দ্র প্রহরী এবং একজন প্রকৃত মুজিব আদর্শের সৈনিক, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার অত্যন্ত আস্থাভাজন হিসেবে তিনি তার মেধা,প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও সুযোগ্য নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে দ্রুত বিশ্বমানের পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবেন এবং অচিরেই বিশ্ববিদ্যালয়টি বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে ডিজিটাল আইকন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবেন।

লেখক: শিক্ষার্থী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, গাজীপুর।

সর্বশেষ খবর