♦ এক গ্রীষ্মের দুপুরে কবি কাজী নজরুল সপরিবারে গরুরগাড়িতে করে যাচ্ছিলেন। অনেক দূরের পথ। বেজায় গরমে নাভিশ্বাস অবস্থা সবার। পথে এক আমবাগান দেখে বিশ্রাম নিতে সবাই থামলেন। বাগানে আমগুলো তখন সবে পাকতে শুরু করেছে। রং আসছে। নজরুলের আম খাওয়ার খুব ইচ্ছা হলো। এক নারী বাগান পাহারা দিচ্ছিলেন। তাঁর সঙ্গে নজরুল জুড়ে দিলেন গল্প। কথায় কথায় জেনে নিলেন, ওই নারীর স্বামী বাগানের মালিকের বাড়িতে পাকা আম পৌঁছে দিতে গেছেন। নজরুল অবাক ভাব করে বললেন, ‘মাসি, আমরা তো সেই বাড়ি থেকেই আসছি। কিন্তু সেখানে তো ও রকম কাউকে দেখলাম না! আমি ও বাড়ির বড়মিয়ার ছোট জামাইয়ের ভাই। আজ চলে যাচ্ছি। বড়মিয়া বললেন, বাগান দিয়ে গেলে আম নিয়ে যেয়ো। তাই তো থামলাম। আচ্ছা মাসি, কোন গাছের আম মিষ্টি বলো তো!’ নজরুলের আর কিছু করতে হলো না। মাসিই সব ব্যবস্থা করে দিলেন।
♦ বর্তমান বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জে একবার নিখিলবঙ্গ মুসলিম সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে নজরুল এসেছিলেন। কবির সম্মানে দুপুরে এক বাংলোতে ভোজের আয়োজন হয়েছে। কবির সঙ্গে আরও অনেকে খেতে বসেছিলেন। প্রথমে কবির পাতে এক টুকরা ইলিশ দেওয়া হলো। পদ্মার ইলিশ খেয়ে কবি খুব প্রশংসা করলেন। ইলিশের ব্যাপক প্রশংসা শুনে খাবার পরিবেশনকারী ছেলেটি তাঁকে আরেক টুকরা ইলিশ দিলেন। সেটিও কবি খেলেন তৃপ্তিসহকারে। তৃতীয় টুকরা ইলিশ দিতে ছেলেটি কাছে আসতেই কবি এবার বলে উঠলেন, ‘আরে, করছ কী? এত মাছ খেলে শেষকালে আমাকে বিড়ালে কামড়াবে যে!’