বিখ্যাত প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান পেনগুইন। পেনগুইন প্রকাশ করল এক বই। বইয়ের নাম আইরিস গ্রেস। কে এই আইরিস গ্রেস? প্রশ্ন জাগাটাই স্বাভাবিক। বইয়ের প্রচ্ছদে জায়গা করে নিয়েছে এক শিশু। তাকে নিয়েই হৈচৈ।
শিশুটির বয়স তখন দুই বছর। অন্য সব শিশু যেখানে দৌড়ঝাঁপ করে বেড়ায় সেখানে অনেকটাই চুপচাপ সে। মায়ের ভাবনা বাড়ল। শিশু সন্তান কথা বলে না, কিছু বললে উত্তরও দেয় না। ছুটলেন চিকিৎসকের কাছে। এ বিষয়ে চিকিৎসকদের মত, আইরিস একজন অটিস্টিক চাইল্ড বা বিশেষ শিশু। জন্মের পর থেকেই অটিজমের উপসর্গগুলো তার মধ্যে লক্ষ্য করা যায়। এ শিশু জন্মগতভাবেই বাকশক্তি হারিয়েছে। শ্রবণশক্তিও নেই। একে ডাক্তাররা বললেন, অটিস্টিক চাইল্ড। শোনা ও বলার স্বাভাবিক সামর্থ্য না থাকলেও ডাক্তাররা কিন্তু মাকে বলে দিলেন, আপনার সন্তানকে শুধু অটিস্টিক পরিচয় দেবেন না ও বিশেষ শিশু।
হ্যাঁ। প্রতিটি অটিস্টিক শিশুই বিশেষ শিশু। আর সেটাই প্রমাণ করে দিয়েছে আইরিস গ্রেস। এতক্ষণ আইরিস গ্রেসের শৈশবের একটা অংশই বলা হলো। কিন্তু তার শৈশব ফুরোয়নি এখনো।
পাঁচ বছর বয়স আইরিসের। অন্যদের সঙ্গে খেলায় মেতে ওঠে কম। খেলে তার পোষা বিড়ালটির সঙ্গে। এই বিড়ালটিকে সে এঁকে দেখায় তার না বলা কথা। হঠাৎ একদিন আঁকাআঁকির খাতা গিয়ে হাতে পড়ল তার মায়ের। পেইন্টিং দেখে আইরিসের মা হতবাক। তার আঁকা ছবি দেখে শিল্পবোদ্ধারাও প্রশংসা করলেন। সবাই মেনে নিলেন, প্রতিভার উদাহরণ দিতে গেলে অবশ্যই আইরিসের নাম নিতে হবে। আইরিসের মা আরাবেলা কার্টার-জনসন মিডিয়াকে বললেন, আমরা সবসময় আইরিসকে ছবি আঁকতে উৎসাহ দিই। আর ও এটা ভীষণ ভালোবাসে! কখনই আমরা তাকে আলাদা বা অন্যরকম কিছু ভাবি না।
তার পেইন্টিংয়ের সুনাম চারদিকে ছড়িয়ে গেল। মিডিয়ার বদৌলতে দেশে দেশে ছড়িয়ে গেল তার নাম। তার নামের সঙ্গেই বেড়ে চলল তার পেইন্টিংয়ের কদর। লোকজন তার পেইন্টিং কিনে নেওয়ার জন্য ভিড় করতে লাগল। উপায়ান্তর না পেয়ে তার পরিবার ছবির প্রদর্শনীর আয়োজন করলেন। এদিকে পেইন্টিংয়ের প্রেরণা পেয়ে আইরিসও এঁকে ফেলল একের পর এক মাস্টারপিস। পাঁচ বছর বয়সী শিশুর পেইন্টিং যখন প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হলো সবাই যেন হুমড়ি খেয়ে পড়ল। এতদিন যে সুনাম মৃদু মন্দ গতিতে বইছিল সেটা যেন আগুনের মতো ছুটে চলল। হইহই রইরই পড়ে গেল। তাকে নিয়ে মানুষের কৌতূহলও বাড়তে থাকল।
লোকজন তার পেইন্টিং কিনতে শুরু করল। হাজার ডলারে বিক্রি হওয়া এক পেইন্টিংয়ের অনুরূপ কপি পর্যন্ত ক্রেতারা কেনার জন্য লাইন ধরল।
আপনি চাইলে আইরিসের আঁকা পেইন্টিং দেখতে পারেন ওয়েবসাইটে। এই ওয়েবসাইট থেকে নির্ধারিত মূল্য দিয়ে কিনতে পারবেন এই শিশু আঁকা পেইন্টিংগুলো। ওয়েবসাইটটি দেখতে পারেন এই ঠিকানায়—
http://www.irisgracepaintingshop.com একটু ঢুঁ মেরে এলেই অবাক হবেন, সেটা নিশ্চিন্তেই বলা যায়।
পেইন্টিংয়ে আইরিসের না বলা কথা
>> শিরোনাম :‘এক্সপ্লোশন অব দ্য কালার’
>> শিরোনাম : ‘ওভার ইন দ্য ওশান’
>> শিরোনাম : ‘আন্ডার দ্য সি’