সুপারনোভা বা অতি নবতারা হলো এক ধরনের শক্তিশালী নাক্ষত্রিক বিস্ফোরণ, যা সাধারণত বিশাল নক্ষত্রের জীবন চক্রের অন্তিম মুহূর্তে ঘটে। এই বিস্ফোরণের ফলে নক্ষত্র ধ্বংস হয়ে তা কৃষ্ণবিবর বা নিউট্রন তারায় রূপান্তরিত হয়। সম্প্রতি, পৃথিবী থেকে ১১ হাজার আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত সুপারনোভা ক্যাসিওপিয়ায় গবেষণা চালিয়ে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ এই রহস্যময় বিস্ফোরণের বেশ কিছু নতুন দিক উন্মোচন করেছে।
ইনফ্রারেড প্রযুক্তি ব্যবহার করে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ সুপারনোভা থেকে নির্গত গ্যাস ও ধূলিকণার অসাধারণ ছবি তুলেছে। আমেরিকান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি জানিয়েছে, এই ছবিগুলো বিশ্লেষণের মাধ্যমে সুপারনোভার গ্যাস মেঘের আচরণ এবং আলোর বিচ্ছুরণের প্রক্রিয়া সম্পর্কে গভীরতর তথ্য জানা যাবে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে, নতুন ছবিগুলো আন্তনাক্ষত্রিক অঞ্চলের অভ্যন্তরীণ কাঠামোর অনেক অজানা তথ্য দিয়েছে। এর ফলে নক্ষত্র ও ছায়াপথের বিবর্তন প্রক্রিয়া এবং নক্ষত্র গঠনে চুম্বকীয় ক্ষেত্রের প্রভাব আরও স্পষ্টভাবে বোঝা যাবে। মেরিল্যান্ডের স্পেস টেলিস্কোপ সায়েন্স ইনস্টিটিউটের জ্যোতির্বিজ্ঞানী জোশ পিকে জানান, এবার গ্যাস স্তরের এমন কিছু তথ্য পাওয়া গেছে, যা আগে কখনো জানা সম্ভব হয়নি।
ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির বিজ্ঞানী জ্যাকব জেনসনের মতে, সুপারনোভার আলোর প্রতিফলন বা লাইট ইকো গ্যাস ও ধূলিকণার মধ্যে প্রতিফলিত হয়। এই লাইট ইকো বিশ্লেষণের মাধ্যমে আন্তনাক্ষত্রিক অঞ্চল ও তার জটিল গঠন সম্পর্কে নতুন ধারণা পাওয়া সম্ভব।
জেমস ওয়েবের ধারণকৃত ছবিতে সুপারনোভার ত্রিমাত্রিক কাঠামোর সন্ধান পাওয়া গেছে। এই কাঠামো বিশ্লেষণের মাধ্যমে তারার মৃত্যু প্রক্রিয়া এবং এই ধরনের মহাজাগতিক বিস্ফোরণের গভীর রহস্য উন্মোচন আরও সহজ হবে বলে বিজ্ঞানীরা আশাবাদী।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল