শিরোনাম
রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

তবু সতর্ক টাইগাররা

মেজবাহ্-উল-হক

সংবাদ সম্মেলনে গতকাল মুখে ‘বাংলাওয়াশ’ শব্দটা একবারও উচ্চারণ করেননি টাইগার দলপতি মাশরাফি। কিংবা ‘হোয়াইটওয়াশ’ করার কথাও বলেননি। তবে কোচ চন্ডিকা হাতুরাসিংহে আফগানদের বিরুদ্ধে ৩-০ ব্যবধানের জয়ের কথা বলেছেন। তবে সরাসরি কিছু না বললেও ম্যাশও একই ইঙ্গিত করেছেন। ক্যাপ্টেন বলেন, ‘আমরা যেভাবে শেষ করেছি সেভাবেই খেলা শুরু করতে চাই। অবশ্যই আমরা আফগানদের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে চাই।’ মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রথম ওয়ানডে শুরু হবে বেলা ২টা ৩০ মিনিটে। বাংলাদেশ ২০১৫ সালের নভেম্বরে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে সব শেষ তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে অংশ নিয়েছিল। ওই সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে জিতেছিল বাংলাদেশ। ম্যাচটিতে জয়ের ব্যবধান ছিল ১৪৫ রানে, ৫৮ রানে ও ৬১ রানে। মাশরাফি কি তবে আফগানিস্তানকে উড়িয়ে দেওয়ার কথাই বললেন! কাজটি সহজ হওয়ার কথা নয়! কেননা গত বছর ঘরের মাঠে বাংলাদেশ টানা চার চারটি ওয়ানডে সিরিজ জিতলেও গত ১১ মাসে কোনো ওয়ানডে খেলেনি। আর এই বিরতির সময়ই আফগানিস্তান খেলে ফেলেছে ১১টি ওয়ানডে। ওয়ানডে মর্যাদা না পেলেও ঘন ঘন ওয়ানডে খেলে বেশ অভিজ্ঞ হয়ে গেছেন আফগান ক্রিকেটাররা। শুধু অভিজ্ঞতা অর্জনই নয়, জিম্বাবুয়েকে তাদের মাটিতে সিরিজেও হারিয়েছে আফগানরা। তা ছাড়া ২০১৪ সালে বাংলাদেশকেও এক ম্যাচ হারিয়েছে তারা। তাই প্রতিপক্ষের প্রতি সমীহও দেখালেন মাশরাফি। তবে ভয়ের কিছু নেই। টাইগার অধিনায়ক বলেন, ‘আফগানিস্তানের বোলিং আক্রমণ খুবই ভালো। তারা যেভাবে পারফর্ম করছে, তাই তাদের পুরো দলকেই আমরা সম্মান করছি। অবশ্যই তারা ভালো দল। একটা ব্যাপার হচ্ছে আমরা নিজেরা বিশ্বাস করি, বিশ্বের সেরা বোলিং লাইন আপ আমাদের আছে। একটা আন্তর্জাতিক ম্যাচ যখন আমরা খেলতে নামব তখন আমরা নিজেরা কি বিশ্বাস করি সেটা গুরুত্বপূর্ণ। আর আমরা আমাদের নিজেদের বিশ্বাস, শক্তিমত্তা নিয়েই আমরা খেলতে নামব।’

প্রতিটি দলই লড়াইয়ের আগে বেশি চিন্তা করে প্রতিপক্ষকে নিয়ে। সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মাশরাফি প্রতিপক্ষের চেয়েও নিজেদেরকে নিয়ে বেশি ভাবছেন। কেন না একে তো দীর্ঘ বিরতি, তার ওপর দলের সেরা বোলার মুস্তাফিজুর রহমান ইনজুরিতে। তবে সুখের বিষয় হচ্ছে, শেষ পর্যন্ত গতি তারকা তাসকিন আহমেদকে পাচ্ছে বাংলাদেশ। তাসকিন ফেরায় কোচ-অধিনায়ক দুজনই ভীষণ খুশি।

গতকাল সংবাদ সম্মেলনে উচ্ছ্বসিত হয়ে হাতুরাসিংহে বলেছেন, ‘এটা অনেক বড় একটা স্বস্তি। তাসকিনের মতো বোলারকে দলে পাওয়া যেকোনো দলের জন্য বিশেষ কিছু। মাশরাফি বলেন, ‘তাসকিনের ফেরাটা অবশ্যই আমাদের ক্রিকেটের জন্য ভালো খবর। সে অনেক কিছু ইঙ্গিত করে। সে প্রমাণ করে ফিরেছে, এটা আমাদের কাছে অনেক ভালো লেগেছে। আশা করছি তাসকিন ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট যেখান থেকে শেষ করেছিল ওখান থেকেই আবার শুরু করবে।’

২০১৫ বিশ্বকাপে যে বোলিং আক্রমণ নিয়ে প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ সেই বোলিং ত্রয়ীই (মাশরাফি, রুবেল, তাসকিন) খেলবে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে। তাই মুস্তাফিজ না থাকলেও বোলিং আক্রমণ নিয়ে সন্তুষ্ট ক্যাপ্টেন। মাশরাফি বলেন, ‘আমরা শেষ বিশ্বকাপ যখন খেলেছিলাম তখন আমাদের এই বোলিং আক্রমণ ছিল। সত্যি বলতে কী আমরা ফিজকে (মুস্তাফিজ) মিস করব। তবে আমরা যারা আছি তাদেরও প্রমাণ করার একটা সুযোগ আছে। যারা বাইরে ছিল তারা নিজেদের প্রমাণ করার একটা সুযোগ পেয়েছে। এখন ওয়ানডে ক্রিকেটে আমাদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। এটা খুবই ভালো। তাই আমি মনে করি আমাদের সেরা বোলিং আক্রমণই আছে।’

আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করার পর ইংল্যান্ড সিরিজে জিতলেই র‌্যাঙ্কিংয়ে এক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। তবে র‌্যাঙ্কিং নিয়ে মোটেও ভাবছেন না মাশরাফি। আপাতত তার ভাবনায় প্রথম ম্যাচ। শুরুটা জয় দিয়েই করতে চান তিনি। মাশরাফি বলেন, ‘আমি র?্যাঙ্কিং নিয়ে চিন্তা করিনি। পয়েন্ট টেবিলে এখন যেখানে আছি দেড় বছর আগে কেউ চিন্তাও করেনি যে এখানে আসতে পারব। এটা আমার কাছে মনে হয় না কোনো ভাবার বিষয়।’

ঘরের মাঠে বাংলাদেশ সব শেষ ওয়ানডে সিরিজে হেরেছে আড়াই বছর আগে, ২০১৪ সালের জুনে ভারতের বিরুদ্ধে। এরপর টানা পাঁচটি সিরিজ জিতেছে। টানা ষষ্ঠ সিরিজ জয়ের চিন্তা মাথায় নিয়েই আজ মাঠে নামবে টাইগাররা। তবে দীর্ঘ বিরতির কারণে প্রতিপক্ষ হিসেবে আফগানিস্তানও সমীহ আদায় করে নিচ্ছে বাংলাদেশের কাছ থেকে। মাশরাফি বলেন, ‘আমরা খেলোয়াড় হিসেবে কখনই ভাববো না সিরিজটা সহজ হবে। আমরা ভাববো কঠিন হবে। এই চিন্তা নিয়েই মাঠে নামা উচিত। আমরা দুই মাস, আড়াই মাস করেছি, যা আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে। এই আত্মবিশ্বাসটা মাঠে থাকলেই আশা করছি ভালো ফল হবে।’ 

সর্বশেষ খবর