মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

রিয়াদকে নিয়ে ধোঁয়াশা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

রিয়াদকে নিয়ে ধোঁয়াশা

গল টেস্টে প্রথম ইনিংসে বোল্ড মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ —ফাইল ফটো

মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে দেশে ফেরত পাঠাবে কি না-এ নিয়ে বেশ ভালো একটি রহস্যময় নাটক মঞ্চস্থ করেছে বিসিবি। বিসিবি পরিচালক ও বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন কলম্বোয় মিডিয়াকে স্পষ্ট করেই জানিয়েছেন, শততম টেস্টে নেই মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। তাকে আজ (মঙ্গলবার) দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। দেশে ফেরত পাঠানো হলেও ওয়ানডে ও টি-২০ ক্রিকেটে খেলার সম্ভাবনা রয়েছে। এমনটাই জানিয়েছিলেন ম্যানেজার সুজন। গতকাল ঘোষিত ওয়ানডে স্কোয়াডে রয়েছেন মাহমুদুল্লাহ। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন টিম ম্যানেজারের বক্তব্যকে পুরোপুরি পাশ কাটিয়ে যান। ধোঁয়াশার সৃষ্টি করে বলেন, ‘রিয়াদকে দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে বিসিবি কিছুই বলেনি।’ বিসিবি যদি তাকে ফিরে আসতে না বলে, তাহলে কেন শততম টেস্ট শুরুর আগে ফেরত পাঠানোর কথা বললেন টিম ম্যানেজার? কেনই বা বিসিবি এখন অস্বীকার করছে? তাহলে কি টিমের ভিতরে কোনো অন্তর্দ্বন্দ্ব রয়েছে? বিষয়টি রহস্যময়!

সিরিজের মাঝপথে দেশে ফেরত পাঠানোর অনেক রেকর্ড রয়েছে। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ চলাকালীন দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অজুহাতে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছিল আল আমিনকে। ঘরের মাঠে অসদাচরণের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিল সাকিব আল হাসানকে। এর আগে মোহাম্মদ রফিককে জিম্বাবুয়ে থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছিল অধিনায়ক হাবিবুল বাশারের সঙ্গে বাজে আচরণের জন্য। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়া কোনো ক্রিকেটারকে ফেরত পাঠানোর নজির নেই। যা হতে যাচ্ছে রিয়াদের সঙ্গে। যদিও বিসিবি বিষয়টি অস্বীকার করছে। তাহলে কি দেশে ফিরছেন না রিয়াদ? পরিষ্কার নয় বিষয়টি। শোনা যাচ্ছে, রিয়াদ দেশে ফিরতে পারেন ১৮ মার্চ। গতকাল রিয়াদের ফেরত পাঠানো প্রসঙ্গে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন নিজ অফিসে মিডিয়ার মুখোমুখিতে পরিষ্কার বলেন, ‘মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে বিসিবির কোনো নির্দেশনা নেই। তবে সে যদি দেশে ফিরে আসেন, এটা তার একান্তই ব্যক্তিগত বিষয়।’ হয়তো সত্যি। বিসিবির কোনো নির্দেশনা নেই। তাহলে কথা হচ্ছে, টিম ম্যানেজার কেন হঠাৎ করে এমনটি বললেন।

আগামীকাল বাংলাদেশ খেলতে নামছে নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসের ১০০ নম্বর টেস্ট। ঐতিহাসিক টেস্টের স্কোয়াডেও ছিলেন রিয়াদ। টিম ম্যানেজমেন্ট যখন উড়িয়ে নিয়ে যায় ইমরুল কায়েসকে। তখনই অফ ফর্মের রিয়াদ বাদ পড়তে যাচ্ছেন। তাই বলে স্কোয়াডে থাকবে না, সেটা কিন্তু কোনোভাবেই ভাবতে পারছেন না ক্রিকেটপ্রেমীরা। শততম টেস্ট খেলছেন না মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। এটা নিশ্চিত। সঙ্গে সঙ্গে এখন আলোচনায় উঠে এসেছে ৩৩ টেস্ট, ১৩৪ ওয়ানডে ও ৫৬ টি-২০ খেলা রিয়াদকে পুরো সিরিজে দেখা যাবে না বলে কথা উঠেছিল। যথারীতি ওয়ানডে স্কোয়ার্ডে রাখা হয়েছে তাকে। রিয়াদ অবশ্য টেস্টে ফর্মে নেই অনেক দিন ধরেই। গত ২০ ইনিংসে কোনো সেঞ্চুরি নেই। হাফসেঞ্চুরি মাত্র দুটি। হায়দরাবাদে ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৪ এবং ২০১৫ সালের ২১ জুলাই ঘরের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলেছিলেন ৬৭ রানের ইনিংস। মজার বিষয় তার আগের ১০ ইনিংসেও সেঞ্চুরি নেই। কিন্তু হাফসেঞ্চুরির ইনিংস খেলেছিলেন ৫টি।

গতকাল বিসিবি সভাপতি হঠাৎ করেই মিডিয়াকর্মীদের তার নিজস্ব অফিসে ডাকেন। সেখানে রিয়াদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। কথা বলেন কোচ চন্ডিকা হাতুরাসিংহের পারফরম্যান্স নিয়েও। কোচের বিষয়ে বিসিবি সভাপতির অবস্থান ছিল রক্ষণাত্মক। ওয়েলিংটন, হায়দরাবাদ এবং গল টেস্টের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, তিন টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসেই বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন আপ ভেঙে পড়েছে তাসের ঘরের মতো। হাতুরাসিংহে ছাড়াও দলে রয়েছেন আরেক শ্রীলঙ্কান ব্যাটিং স্তম্ভ দিলীপ সামারাবীরা। সামারাবীরা আসার আগে হাতুরাসিংহেই মূলত দলের ব্যাটিং দেখতেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটসম্যানদের এমন পারফরম্যান্সে কোচ কি করছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘মাঠে খেলেন ব্যাটসম্যানরা।’ ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ শুরুর সম্ভাব্য তারিখ ৭ এপ্রিল। দল-বদল ১৭ ও ১৮ মার্চ। এবার ক্রিকেটাররা নিজেদের মতো দল-বদল করতে পারবেন এবং পারিশ্রমিক নিয়ে কোনো ব্যারিয়ার নেই। তবে পুল এখনো ঠিক হয়নি। গতকাল পুল নিয়ে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘দুজন করে বিদেশি ক্রিকেটার খেলবেন একটি দলে। একজন ব্যাটসম্যান ও আরেকজনকে বোলার হতে হবে। পুলের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়নি। তবে প্রতিটি দলই বলছে তিনজন করে পুলের ক্রিকেটার রাখতে।’

বাংলাদেশের ওয়ানডে স্কোয়াড

মাশরাফি বিন মর্তুজা, তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েশ, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, সাব্বির রহমান রুম্মন, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মুস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন, তাসকিন আহমেদ, শুভাশিষ রায়, সাঞ্জামুল ইসলাম, শুভাগত হোম চৌধুরী ও নুরুল হাসান সোহান।  

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর