বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন ৫ অধিনায়ক

ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন ৫ অধিনায়ক

বাংলাদেশের প্রথম শিরোপা

১৯৭৩ সালে মারদেকা কাপ দিয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলের অভিষেক হয় বাংলাদেশের। প্রথম শিরোপা জিততে পার হয়ে যায় ষোলো বছর। ১৯৮৯ সালে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রেসিডেন্ট গোল্ডকাপ অনুষ্ঠিত হয়। আর এ আসরেই আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে প্রথম শিরোপার মুখ দেখে বাংলাদেশ। সেবার লাল ও সবুজ নামে বাংলাদেশের দুটি দল অংশ নেয়। সাইদ হাছান কাননের নেতৃত্বে লাল দল গড়া হয় জাতীয় খেলোয়াড়দের নিয়ে। এই দলই ফাইনালে দক্ষিণ কোরিয়ার সম্মিলিত বিশ্ববিদ্যালয়কে টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। ইনজুরি কারণে কানন ফাইনালে খেলতে পারেননি। ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে কায়সার হামিদের হাতে শিরোপার ট্রফি তুলে দেওয়া হয়।

মুন্নাদের মিয়ানমার জয়

১৯৯৪ সালে জাতীয় দলের নেতৃত্ব পান তারকা ফুটবলার মোনেম মুন্না। তার অধিনায়কত্বেই ১৯৯৫ সালের এপ্রিল মাসে মিয়ানমারে চার জাতি চ্যালেঞ্জকাপে অংশ নেয় বাংলাদেশ। উদ্বোধীন ম্যাচেই স্বাগতিকদের কাছে ১-৪ গোলে বিধ্বস্ত হয় মুন্নারা। কিন্তু সিঙ্গাপুর ও ভিয়েতনামকে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নেন। প্রতিপক্ষ ছিল সেই মিয়ানমার। স্বাভাবিকভাবে অনেকের ধারণা ছিল ফাইনালেও স্বাগতিকদের সামনে দাঁড়াতে পারবে না। কিন্তু সবাইকে অবাক করে অসাধারণ নৈপুণ্য প্রদর্শন করে টিম বাংলাদেশ। একের পর এক আক্রমণ করে প্রতিপক্ষের ডিফেন্স ভেঙে ফেলে রকিব, নকিবরা। ২-১ গোলে হারিয়ে দেশের বাইরে প্রথম আন্তর্জাতিক ট্রফি আনে মুন্নারা।

 

ফুটবলে বাজল জাতীয় সংগীত
১৯৮৪ সালে সাউথ এশিয়ান অর্থাৎ সাফ গেমস শুরু হয়। ফেবারিট হয়েও বাংলাদেশ দলীয় ইভেন্টে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ইভেন্টে সোনার দেখা পাচ্ছিল না। রানার্সআপ হয়ে কিন্তু সোনা জিতে জাতীয় সংগীত বাজাতে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছিলেন তারকা ফুটবলাররা। অবশেষে সোনার দেখা মিলল ১৯৯৯ সালে। সেবার কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত সাফ গেমসে বাংলাদেশ ফুটবল দলের অধিনায়ক ছিলেন জুয়েল রানা। গ্রুপ পর্বে প্রথম ম্যাচে মালদ্বীপের কাছে হেরে গেলে বাংলাদেশের সেমির আশা ছেড়ে দেয়। কিন্তু ঘুরে দাঁড়িয়ে ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নেয়। টিপুর সেই অসাধারণ গোল এখনো চোখে ভাসে। ফাইনালে আলফাজের গোলে নেপালকে হারিয়ে বাংলাদেশ প্রথম সোনা জেতে।

 

দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপ জয়

ফুটবলে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো দুর্বল বলেই বিশ্বকাপ চূড়ান্তপর্বে খেলার সম্ভাবনা নেই। তাই সাফ চ্যাম্পিয়নশিপই এ অঞ্চলের বিশ্বকাপ বলা হয়। সেই আসরে বাংলাদেশ একবারই চ্যাম্পিয়ন হয় রজনীকান্ত বর্মনের নেতৃত্বে। ১৯৯৯ সালে গোয়ায় বাংলাদেশ রানার্সআপ হয়। ২০০৩ সালে ঘরের মাঠে প্রথম ও শেষ বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে জমজমাট আসরে সেমিফাইনালে ভারতকে ২-১ গোলে হারায় বাংলাদেশ। মতিউর মুন্না ও কাঞ্চন দুটি গোল দেন। ফাইনালে অবশ্য নিয়মিত অধিনায়ক রজনী কান্ত খেলতে পারেননি। মালদ্বীপের বিপক্ষে অসাধারণ খেললেও নির্ধারিত সময়ে ও অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে ম্যাচ ১-১ ড্র থাকে। প্রথমে কাঞ্চনের গোলে এগিয়ে গেলেও পরে মালদ্বীপ সমতায় ফিরে। টাইব্রেকারে জিতেই শিরোপা উৎসবে মাতে বাংলাদেশ।

 

হারানো সোনা উদ্ধার

২০১০ সালে ঢাকায় তৃতীয় বারের মতো এসএ গেমস (পূর্বের সাফ) অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ রেকর্ড সংখ্যক ১৮টি সোনা জিতে। এর মধ্যে ফুটবল ছিল অন্যতম। অনূর্ধ্ব-২৩ দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও তিনজন সিনিয়র খেলতে পারে। তাই সেবার গেমসে অধিনায়ক ছিলেন আমিনুল হক। আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়টা এখন স্বপ্নে পরিণত হয়েছে। অথচ সেবার ফাইনালে আফগানকে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করে সোনা উদ্ধার করে লাল-সবুজের দল। আর এটাই ছিল ফুটবলে বাংলাদেশের শেষ শিরোপা।

সর্বশেষ খবর