সোমবার, ৭ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

ফাইনাল নয় তবু ফাইনাল

বাংলাদেশ-ভারত মুখোমুখি আজ

ফাইনাল নয় তবু ফাইনাল

ফুটবল ক্যারিয়ারে অনেক সুখস্মৃতি আছে। বেদনাও কম নয়। বিশেষ করে এক বেদনা এখনো আমাকে তাড়া করে বেড়ায়। ৩৬ বছরের আগের ঘটনা। তবু ভুলতে পারছি না। ১৯৮৫ সালে ঢাকায় সাফ গেমসের ফুটবল ফাইনালে বাংলাদেশ-ভারত মুখোমুখি হয়। আমি বলব ভারতের বিপক্ষে এটিই ছিল বাংলাদেশের সেরা পারফরম্যান্স। দ্বিতীয়ার্ধে প্রায় ৪০ গজ দূর থেকে গোল করে বাংলাদেশকে এগিয়ে রাখি। এখনো আমার চোখে ভাসে আমার গোলের পর গ্যালারি ভরা দর্শকদের সে কি উচ্ছ্বাস। এগিয়ে নেওয়ার পর আমাদের আক্রমণ বেড়ে যায়। ভারতের রক্ষণভাগ পুরোপুরি ভেঙে পড়ে। দুভার্গ্য আমাদের ব্যবধান আর বাড়ানো যায়নি। বরং কাউন্টার অ্যাটাকে ভারতের শিশির ঘোষ ম্যাচে সমতা ফেরান।

এরপরও আমরা প্রাধান্য বিস্তার করে খেলছিলাম। ইনজুরি টাইমেও গোল না হওয়ায় ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়ায়। একেই বলে কপাল। খেললাম আমরা আর সোনা জিতে নিল ভারত। নিজেকে এখনো বড্ড অপরাধী মনে হয়। কেননা ট্রাইব্রেকারে গোল মিস করি। আরেকটি করেন ডিফেন্ডার ইউসুফ। কাতারে আজ রাতে মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ ও ভারত। দু’দলই বাছাইপর্বে পরবর্তী রাউন্ডে যেতে পারেনি। তারপরও দু’দেশের লড়াই ঘিরে আলাদা একটা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এখন নয়, আগে থেকেই বাংলাদেশ-ভারতের ম্যাচ মানেই মর্যাদার লড়াই। যদিও ম্যাচ জয়ের পরিসংখ্যানে ভারত অনেক এগিয়ে। তবুও হার-জিত নিয়ে উত্তেজনায় কমতি থাকে না।

সন্দেহ নেই ভারত ফুটবলের পেছনে অনেক অর্থ ব্যয় করছে। কিন্তু সেভাবে তাদের জাতীয় দল এগুতে পারেনি। কষ্ট লাগে এরপরও ১৮ বছর ধরে আমরা ভারতকে হারাতে পারছি না। সল্টলেকে প্রথম লেগে এগিয়ে থেকেও শেষ মুহুর্তে গোল খেয়ে ড্র করে। দুর্দান্ত খেলেছিল বাংলাদেশ। টিভিতে খেলা দেখে আমিও জামালদের পারফরম্যান্স দেখে অবাক হয়ে যাচ্ছিলাম। ফাইনাল নয়, তবুও আজকের লড়াইয়ে ফাইনালের আমেজ থাকবে। আমার কেন জানি মনে হচ্ছে আজই জয়ের বন্ধ দুয়ার খুলে যাবে। বড় কোনো সুযোগ-সুবিধা পায়নি তবুও বর্তমানে জাতীয় দলের পারফরম্যান্স দেখে আমি অভীভূত। ফাইনালের আমেজ থাকবে বলে দুই দল স্নায়ু চাপে থাকবে। এখানে চাপ মুক্ত থাকাটাই বড় গুণ।

আমি ফুটবলের মান নিয়ে কম সমালোচনা করি না। কষ্ট লাগে বলে চুপ থাকতে পারি না। তবে এ কথা বলব প্রথম লেগে ওমান ও দ্বিতীয় লেগে কাতারের বিপক্ষে সুবিধা করতে না পারলেও এবার বাছাইপর্বে ছেলেদের পারফরম্যান্সে আমি সন্তুষ্ঠ। গত বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয়ার্ধে গোল খাওয়ায় আমি ধরে নিয়েছিলাম বাংলাদেশ হারবে। ওরা বয়সে অনেক ছোট তারপরও জামাল, তপু, তারিক, রিয়াদুলদের স্যালুট জানাই। শেষ ২০ মিনিটে যে খেলাটা খেলেছে তা আমি ইউরোপিয়ানদের সঙ্গে তুলনা করব। ডিফেন্ডার হয়েও তপু বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম সেরা গোলটি করেছে। ড্র নয়, ম্যাচে ৩-১ গোলে জেতা উচিত ছিল।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে এমন পারফরম্যান্সের পর ছেলেরা আজ মাঠে নামবে। কৌশল সাজাবেন জেমি ডে। তবে শুরু থেকেই বাংলাদেশ যেন অ্যাটাকে না যায়। ওদের কিছুক্ষণ পরখ করে খেলতে। আমার মনে হয় আজ দলে কিছু পরিবর্তন আনা উচিত। এমনিতেই দলে সে মানের স্ট্রাইকার নেই। তাই শুরু থেকে আবদুল্লাহকে খেলানো উচিত। ১৮ বছরে যা হয়নি তা আজ জামাল ভূঁইয়ারা প্রমাণ করবে আমরাও পারি। এমনটিই আমার প্রত্যাশা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর