শুক্রবার, ৬ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

সম্মিলিত প্রয়াসে ইতিহাস গড়ার প্রত্যয় টাইগারদের

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সম্মিলিত প্রয়াসে ইতিহাস গড়ার প্রত্যয় টাইগারদের

মিরপুরের মন্থর উইকেটে বল লাটিমের মতো হয়তো ঘুরে না। কিন্তু বল ঘুরছে। উইকেটের আচরণকে পুরোপুরি কাজে লাগাচ্ছেন টাইগার স্পিনাররা। কাজে লাগাচ্ছেন ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজুর রহমানও। বাংলাদেশের তিন স্পিনার সাকিব, নাসুম, মেহেদীরা ছাড়াও মুস্তাফিজ এবং শরীফুলরা এখন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছেন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানদের। সফরকারীরা এখন পাঁচ ম্যাচ টি-২০ সিরিজ খেলছে মিরপুরে। প্রথম দুটিতে সফরকারীদের কোণঠাসা করে জয় তুলে সিরিজ জয়ের স্বপ্ন দেখছে মাহমুদুল্লাহর বাংলাদেশ। আজ সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ। সন্ধ্যা ৬টার ম্যাচটি জিতলেই প্রথমবারের মতো যে কোনো ফরম্যাটে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ জয়ের বিরল কীর্তি গড়বেন টাইগাররা। প্রথম দুই ম্যাচের মতো আজ মাহমুদুল্লাহ’র ভরসা তরুণ ক্রিকেটাররাই। বোলিংয়ে সাকিবের পাশাপাশি নাসুম, মেহেদী, শরীফুলরা দারুণ ছন্দে রয়েছেন। ব্যাট হাতে দুরন্ত পারফরম্যান্স করছেন আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসান, নুুরুল হাসান সোহানরা।

প্রথম টি-২০ ম্যাচে মাহমুদুল্লাহ বাহিনী জয় পায় ২৩ রানে। ওই ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং করেন বাঁ হাতি স্পিনার নাসুম। তার ঘূর্ণিতে ১০৮ রানে গুটিয়ে যায় সফরকারীরা। বাংলাদেশের বিপক্ষে যা দলটির সর্বনিম্ন স্কোর। দ্বিতীয় ম্যাচে দুই পেসার মুস্তাফিজ ও শরীফুল গুঁড়িয়ে দেন অসিদের ব্যাটিংলাইন। বিশেষ করে মুস্তাফিজ তার বিষমাখা স্লোয়ারে কুপোকাত করেছেন প্রতিপক্ষকে। দুই ম্যাচে ৮ ওভারে ৩৯ রানের খরচে নেন ৫ উইকেট। তার স্কিল নিয়ে বিস্মিত অসি স্পিন অলরাউন্ডার অ্যাস্টন অ্যাগার, ‘মুস্তাফিজ দুর্দান্ত স্কিলফুল বোলার। তার স্লোয়ারগুলো খেলা আমাদের জন্য খুবই কঠিন। সে দেখিয়েছে, কতটা দ্রুত মানিয়ে নিতে পারে। আমার মনে হয় ম্যাচ দুটিতে ২৩/২৪টি স্লোয়ার দিয়েছেন। কন্ডিশন খুব ভালো বুঝতে পারা তার কৃতিত্ব। ভালো উইকেটেও তার স্লোয়ার খেলা খুব কঠিন। এরকম উইকেটেতো বলাই বাহুল্য।’ সিনিয়র পেসারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দারুণ বোলিং করছেন শরীফুল। ২ ম্যাচে উইকেট নিয়েছেন ৪টি। সাকিব, মেহেদীরা প্রথম ম্যাচেই একটি উইকেট নিয়ে চেপে ধরেছে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের।

প্রথম ম্যাচে ১৩১ রান করেও ২৩ রানের জয় পায় স্পিনারদের ঘূর্ণিতে। দ্বিতীয় ম্যাচে রান তাড়া করে ৫ উইকেটের জয় পায় দুই তরুণ আফিফ ও সোহানের দুরন্ত ব্যাটিংয়ে। ১২২ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে মিচেল স্টার্ক, জশ হ্যাজলউড, অ্যান্ড্রু টাইদের গতি, বাউন্স ও সুইংয়ে এবং অ্যাডাম জাম্পা ও অ্যাগারের ঘূর্ণিতে নাকাল হয়ে ১১.২ ওভারে ৬৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে টাইগাররা। সেখান থেকে পাহাড়সম চাপ সামলে দলকে অবিশ্বাস্য জয় উপহার দেন ৪৩ বলে ৫৬ রানে অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে। যে কোনো দলের বিপক্ষে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে এটা দ্বিতীয় সেরা। সেরা ৫৭ রান, মাহমুদুল্লাহ-সোহান জুটির। আফিফ ৩১ বলে ৫ চার ও এক ছক্কায় ৩৭ রানের হার না মানা ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হন। সোহান অপরাজিত ছিলেন ২২ রানে। ম্যাচ শেষে দুজনের ভূয়সী প্রশংসা করেন টাইগার অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ, ‘শুরুতে দ্রুত কয়েকটি উইকেট হারানোয় ড্রেসিং রুম ¯œায়ু চাপে ভুগছিল। তবে আফিফ ও সোহানের ব্যাটিংয়ে দলে স্বস্তি আনে। দলের প্রয়োজনে দুজনে দৃঢ়তা দেখিয়েছেন। সত্যি বলতে ওরা ওদের পরিপক্বতা দেখিয়েছে।’

শুধু আফিফ, সোহান নন, তরুণ ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম, মেহেদীও দারুণ ব্যাটিং করেছেন দুই ম্যাচে। বিশ্বসেরা সাকিব অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্স করেছেন। সাকিব, মাহমুদুল্লাহ’র পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে এখন দায়িত্ব নিয়ে ক্রিকেট খেলছেন তরুণ ক্রিকেটাররা। আজও তৃতীয় ম্যাচে টাইগারদের ভরসা তারুণ্য। অস্ট্রেলিয়ার আগে জিম্বাবুয়ে সিরিজের পারফরম্যান্স টি-২০ বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে স্বপ্ন দেখাচ্ছে ভালো কিছুর।    

সর্বশেষ খবর