প্রত্যেক দল একটি করে ম্যাচ খেলেছে। তারপরও টি-২০ বিশ্বকাপের ২ নম্বর গ্রুপে পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে বাংলাদেশের নাম। অথচ গ্রুপে আছে দুই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে এবং নেদারল্যান্ডস। এমন সময় টি-২০ বিশ্বকাপের ১৫ বছরের ইতিহাসে আর কখনো আসেনি। অবশ্য এর আগে তো কখনো দ্বিতীয়পর্বে কোনো ম্যাচই জেতেনি বাংলাদেশ।
নেদারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৯ রানের জয়ে নেট রানরেট ০.৪৫, যেখানে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জিতেও ভারতের রানরেট ০.০৫। গ্রুপের একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ের নামের পাশে একটি করে পয়েন্ট যোগ হলেও নেট রানরেটের ঘর ফাঁকা। আর প্রথম ম্যাচে হেরে যাওয়ায় পাকিস্তান ও নেদারল্যান্ডসের নামের পাশে কোনো পয়েন্টই যোগ হয়নি।
বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ম্যাচে বোলারদের ক্যারিশমায় জয় পেলেও ব্যাটিং নিয়ে ভাবনা এখনো আছেই। টাইগারদের ব্যাটিংয়ে এখনো আস্থা ফেরেনি। কখনো ওপেনিং জুটি ভালো করে তো মিডল অর্ডার ভেঙে পড়ে, আবার মিডল অর্ডার ভালো করে তো লোয়ার অর্ডারের খবর থাকে। প্রতি ম্যাচে কোনো না কোনো সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। যে কারণে বাংলাদেশের ইনিংস বড় হচ্ছে না।
পিঞ্চহিটারের সমস্যা তো আর নতুন কিছু নয়। যে কারণে শেষের দিকের ওভারগুলোতে যেভাবে রান তোলা দরকার তা হচ্ছে না। স্কোর বড় হবে হবে করেও শেষ পর্যন্ত আর বড় হচ্ছে না।
নেদারল্যান্ডের বিরুদ্ধে রান হওয়ার কথা ছিল ১৫৫ কিংবা ১৬০! কিন্তু সেখানে রান হলো ১৪৪। দুই সেরা ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসান ও লিটন কুমার দাস একসঙ্গে ব্যর্থ। যেদিন দলের সেরা ব্যাটসম্যানরা দ্রুত আউট হয়ে যায় সেদিন অন্যদের বাড়তি চাপ নিয়ে খেলতে হয়, তা বাংলাদেশ দলে খুব একটা দেখা যায় না। বরং অন্য ব্যাটসম্যানরাও বাড়তি চাপ অনুভব করে দ্রুত আউট হয়ে যান।
তবে প্রথম ম্যাচে আফিফ হোসেন ও মোসাদ্দেক হোসেনের ব্যাটিং ছিল দারুণ। তাদের কারণেই শেষ পর্যন্ত লড়াকু স্কোর পেয়েছিল। অবশ্য হোবার্টের ব্যাটিং স্বর্গে এই ১৪৪ রানকে লড়াকু বলাও কঠিন। বোলাররা অনেক বেশি ভালো করার জন্য রক্ষা পেয়েছেন টাইগাররা।
বাংলাদেশের জন্য সুখবর হচ্ছে, বোলিংয়ের পাশাপাশি ফিল্ডিংও দুর্দান্ত হচ্ছে। প্রতিনিয়তই উন্নতি হচ্ছে। সে কারণেই ফিল্ডিং নিয়ে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী ক্যাপ্টেন সাকিব আল হাসান। তিনি বলেছিলেন, ‘আমাদের মনে হয়েছে, এই একটি জায়গায় (ক্যাচিং-ফিল্ডিং) আমরা বিশ্বের সেরা দলগুলোর একটি হতে পারি। দলের বেশির ভাগ খেলোয়াড় তরুণ। তারা চটপটে ও ক্ষিপ্র। আমাদের সেই বিশ্বাস ছিল যে ফিল্ডিংয়ে আমরা হয়তো ৫ থেকে ১০ রান বাঁচাতে পারব, যা বড় পার্থক্য গড়ে দেবে।’
বাংলাদেশ দল পেস বোলিং গর্ব করতে পারে। তিন পেসার তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান ও তরুণ হাসান মাহমুদ দেখিয়েছেন ক্যারিশমা। বাংলাদেশের পরের ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে। আগামীকাল সিডনিতে টাইগারদের আসল পরীক্ষা। অবশ্য তার আগে দক্ষিণ আফ্রিকা কোচের কাছ থেকে প্রশংসা পেয়ে গেছে টাইগারদের পেস আক্রমণ বিভাগ। মার্ক বাউচার বলেছেন, ‘বাংলাদেশের ম্যাচ (নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে) কিছুটা দেখেছি। বোলিংয়ে তারা ভালো শুরু করেছিল। মাঝে কিছুটা ধাক্কা খেলেও সব মিলে বোলিং চমৎকার হয়েছে।’
হোবার্ট জয়ের পর দিন সিডনিতে পৌঁছে গেছে টিম বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়েই এখন সাকিবদের ভাবনা। ফিল্ডিং ও বোলিংয়ের পাশাপাশি এবার ব্যাটিংয়েও ভালো করার প্রত্যয় টাইগারদের। আর তিন বিভাগে ভালো করতে পারলে যেকোনো দলকেই যে হারানো সম্ভব -তা বলার অপেক্ষা রাখে না!