শনিবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

রংপুরের শ্বাসরুদ্ধকর জয়

রাশেদুর রহমান, চট্টগ্রাম থেকে

রংপুরের শ্বাসরুদ্ধকর জয়

চট্টগ্রামে বলে-ব্যাটের দূরন্ত রংপুর রাইডার্সকে দেখল ক্রিকেটপ্রেমীরা। গতকাল দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে প্রথমে বোলিং করে প্রতিপক্ষকে মাত্র ১৩০ রানেই আটকে দেন রবিউল-রকিবুলরা। ১৩১ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৩ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে রংপুর রাইডার্স।

সাগরিকায় সন্ধ্যার অন্ধকার ঘনিয়ে আসতেই নেমে আসে কুয়াশার চাদর। সেই কুয়াশা সবুজ ঘাসের ওপর পড়ে চিকমিক করে। আম্পায়ার ম্যাচের মাঝপথে খেলা থামিয়ে দিলে ভেজা মাঠ শুষ্ক করতে তৎপর হয় গ্রাউন্ডসম্যানরা। তবে উইকেটটা থাকে একইরকম। কিছুটা ভেজা। কুয়াশাভেজা এমন উইকেটে ভয়ঙ্কর হয়ে দেখা দিল রংপুর রাইডার্সের বোলাররা। আজমতুল্লাহ ওমরজাই, রকিবুল হাসান, রবিউল হক, হাসান মাহমুদ আর মেহেদি হাসানরা প্রতিপক্ষ খুলনা টাইগার্সের ব্যাটসম্যানদের উইকেটে দাঁড়িয়ে থাকাই কঠিন করে দিলেন। দুই বল বাকি থাকতেই প্রতিপক্ষের সবাইকে সাজঘরে ফেরত পাঠায় রংপুর রাইডার্স। খুলনা টাইগার্স অলআউট হয় ১৩০ রানে। খুলনা টাইগার্সের ইনিংসে প্রথম আঘাত হানেন আফগান বোলার আজমতুল্লাহ ওমরজাই। তামিম ইকবালকে ১ রানেই ফিরিয়ে দেন তিনি। নিজের বলে নিজেই ক্যাচ লুফে নেন। ইনিংসের চতুর্থ ওভার করতে এসে আজমতুল্লাহ শিকার করেন শারজিল খানের গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। আফগান এই বোলারের পথ অনুসরণ করেন রবিউল-রকিবুলরা। ইয়াসির আলি (২২ বলে ২৫ রান), সাব্বির রহমান (২ বলে ১ রান), আমাদ বাট (৭ বলে ৪ রান) এবং মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন (১৮ বলে ২২ রান) ভয়ংকর হয়ে ওঠার আগেই শিকার করেন রবিউল হক। তিনি চার ওভার বোলিং করে মাত্র ২২ রান দিয়ে শিকার করেন ৪ উইকেট। ওপেনার হাবিবুর রহমানকে (১১ বলে ৪ রান) বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান রকিবুল হাসান। তিনি শিকার করেন আজম খানের উইকেটও। পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক মঈন খানের ছেলে আজম খান বেশ ভয়ংকর হয়ে উঠছিলেন গতকাল। শুরুটা আস্তে-ধীরে করলেও একসময় মাত্র ২২ বলেই করেন ৩৪ রান। অবশ্য এতটুকুতেই তাকে থামিয়ে দেন রকিবুল হাসান। তার বলে আজমতুল্লাহকে স্কয়ার লেগে ক্যাচ দেন আজম খান। এই আজম খানকে দেখলে দর্শকদের নিশ্চয়ই মনে পড়ে ‘বিগ ম্যান’খ্যাত ইনজামাম উল হকের কথা। ছয় ফুট তিন ইঞ্চিরও বেশি উচ্চতা ছিল ইনজামামের। আজম খান লম্বায় অতোটা নন। তবে চওড়ায় তিনি ইনজামামের চেয়ে কম যান না। ব্যাটিংয়েও দারুণ হাত আছে। এই বিপিএলে এখন পর্যন্ত তিন ইনিংস খেলেছেন তিনি। আগের ম্যাচে খেলেছেন ১০৯ রানের অপরাজিত ইনিংস। গতকাল ২৩ বলে ৩৪ রান করে তিনিই দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। তার এই ইনিংসে একটি ছক্কার পাশাপাশি ছিল ৪টি চারের মার।

গতকাল হাসান মাহমুদ শিকার করেন দুই উইকেট। নাহিদুল ইসলাম (৯ বলে ১৫ রান) ও নাসুম আহমেদকে (৪ বলে ১ রান) সাজঘরে ফেরান হাসান। ৩.৪ ওভার বোলিং করে মাত্র ২২ রান দেন তিনি। উইকেট না পেলেও দারুণ বোলিং করেছেন মেহেদি হাসান। তিনি ৪ ওভারে কেবল ২১ রান দিয়েছেন।

লক্ষ্যটা ছোটই ছিল। তবে রংপুর রাইডার্সকে প্রতিপক্ষ বোলারদের পাশাপাশি কুয়াশারও মোকাবিলা করতে হয়েছে। উইকেটে বল বোঝা বেশ কঠিন হয়ে পড়ছিল। নিচু হয়ে আসছিল বল। তবে বুড়ো শোয়েব মালিকের ব্যাটে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় রংপুর রাইডার্স। ৪১ বছর ছুঁই ছুঁই বয়সের শোয়েব মালিক ৩৬ বলে ৪৪ রান করেন। তার এই ইনিংসে ছিল ২টি ছক্কা ও ৩টি চারের মার। এ ছাড়া রংপুর রাইডার্সের পক্ষে মোহাম্মদ নাইম ২১ ও মেহেদি হাসান ১৪ রান করেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর