রবিবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

রংপুরের রঙিন জয় মিরপুরে

মেজবাহ্-উল-হক

রংপুরের রঙিন জয় মিরপুরে

ছবি : রোহেত রাজীব

শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের বাইশগজে গতকাল সিলেট স্ট্রাইকার্সের ঝড়ের পর শুরু হয় রংপুর রাইডার্সের টর্নেডো! ১৭১ রানের পাহাড় টপকাতে নেমে ২ ওভার আগেই খেলা শেষ। সিলেটের বিরুদ্ধে মিরপুরে ১২ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটের রঙিন জয় পায় রংপুর।

পাওয়ার প্লেতে বিনা উইকেটে ৫৯ রান করে রাইডার্স। মাত্র ৫৯ বলে ১০০ রানের পার্টনারশিপ। ওপেনার রনি তালুকদার মাত্র ২৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন। ৩৫ বলে ৬৬ রান করে আউট হয়ে যান। আরেক ওপেনার নাঈম শেখ ৩২ বলে খেলেন ৪৫ রানের ইনিংস। এরপর আসে সহজ জয়।

গতকাল রংপুরের বিরুদ্ধে ২ উইকেটে ১৭০ রানের বিশাল স্কোর করে সিলেট। তৌহিদ হৃদয়ের অপরাজিত ৮৫ এবং মুশফিকুর রহিমের নটআউট ৫৫!

এবারের বিপিএলে হৃদয়ের শুরুটা ছিল ক্যারিশম্যাটিক। প্রথম তিন ম্যাচে টানা তিন হাফ সেঞ্চুরির পর ইনজুরিতে পড়েছিলেন। কিন্তু ইনজুরি থেকে ফেরার পর তিন ম্যাচে হৃদয়কে চেনাই যায়নি। এরপর আবারও টানা দুই হাফ সেঞ্চুরি। আগের ম্যাচে খুলনা টাইগার্সের বিরুদ্ধে ৭৪ রানের পর গতকাল আবারও খেললেন ৫৭ বলে হার না মানা ৮৫ রানের ইনিংস। ১৩টি বাউন্ডারির সঙ্গে তার ইনিংসে ছিল দেখার মতো দুটি ছক্কার মার।

এ ম্যাচে দাপট দেখালেন মুশফিকুর রহিমও। ব্যাট হাতে ফ্লপ মুশফিক কাল মাত্র ৩০ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন। তার ৫৫ রানের ইনিংসটি ছিল স্ট্রক ঝলমলে। পাঁচটি চারের সঙ্গে তিনটি বিশাল ছক্কা।

ইনজুরির কারণে এ ম্যাচে একাদশে ছিলেন না সিলেটের নিয়মিত অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। নেতৃত্ব পেয়েই যেন জ্বলে উঠে মুশফিকের ব্যাট। তবে গতকাল রানের খাতা খোলার আগেই বিদায়ঘণ্টা বাজতে পারত মুশফিকের। কিন্তু স্কোয়ার লেগে ক্যাচ ফেলে দেন ফিল্ডার শামীম পাটওয়ারী। দলের ১১তম ওভারে হাসান মাহমুদের বলে স্লগ সুইপ করেছিলেন মুশফিক। ডিপ মিডউইকেটে শামীমের হাত ফসকে বল ছক্কা হয়ে যায়।

৩৯ রানে বিদায়ঘণ্টা বাজতে পারত তৌহিদ হৃদয়েরও। ইনিংসের ১৩তম ওভারে রাইডার্সের পাকিস্তানি পেসার হারিস রউফের শট বলে হুক করেন হৃদয়। কিন্তু পরাস্ত হন, বল জমা হয় উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে। কটবিহাইন্ডের জোরাল আবেদন করেন রংপুরের ফিল্ডাররা। কিন্তু সেই আবেদন নাকচ করে দেন মাঠের আম্পায়ার। কিন্তু বোলার রউফ এবং উইকেটের পেছনে থাকা সোহান আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে বল হৃদয়ের ব্যাট স্পর্শ করেছে। তাই রিভিউ নিতে দেরি করেননি। কিন্তু হায়, ডিআরএস যে নেই। টিভি আম্পায়ার বুঝবেন কীভাবে? কেবলমাত্র জুম করে তো আর ব্যাট ও বলের সঠিক মুভমেন্ট বোঝা সম্ভব নয়। তাই অগত্যা মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই বহাল রাখলেন টিভি আম্পায়ার। হৃদয় নটআউট!

ডিআরএস না থাকায় গতকাল আরেকটি সিদ্ধান্তে অখুশি ছিল রংপুর রাইডার্স। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারের শেষ বলে ওমরজাইয়ের বিরুদ্ধে শান্ত আউটের আবেদন হয়। মাঠের আম্পায়ার নটআউট দিলেও চ্যালেঞ্জ করেন রংপুর ক্যাপ্টেন সোহান। কিন্তু ডিআরএন না থাকায় টিভি আম্পায়ার যেন কিছুই বুঝতে পারলেন না, তাই মাঠের আম্পায়ারের ‘নট আউট’ সিদ্ধান্তই বহাল রাখেন।

উইকেট না পড়লেও প্রথম দিকে সিলেটের ব্যাটারদের আটকে রাখতে দারুণ সফল ছিলেন রাইডার্স বোলাররা। কিন্তু প্রথম ইনিংস শেষে সিলেটের ১৭০ রানের স্কোর দেখে বোঝার উপায় নেই এই ম্যাচে পাওয়ার প্লে-র প্রথম ছয় ওভারে তাদের রান ছিল মাত্র ২৬। ওই সময় আফগান পেসার আজমতুল্লাহ ওমরজাইয়ের এক একটি ডেলিভারি ছিল আগুনের ফুলকি। পাওয়ার প্লেতে করা তিন ওভারে মাত্র ৬ রান দিয়েছেন তিনি। দুই ওভারই মেডেন। সব মিলে চার ওভারে দিয়েছেন মাত্র ১৭ রান। ২৪টি ডেলিভারির মধ্যে ১৭টি ডট করেছেন।

তবে ওমরজাইয়ের মতো অন্য বোলাররা রানের গতি থামিয়ে রাখতে পারেননি। তাই শেষ পর্যন্ত সিলেট ১৭০ রান করে। রংপুরের ব্যাটসম্যানরাও তাদের সামর্থ্য দেখিয়ে ১৮ ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে ১৭৬ রান করেন।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর