শনিবার, ১১ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

টাইগারদের চক্র পূরণ

সব টি-২০ বিশ্বচ্যাম্পিনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জয়

আসিফ ইকবাল

শুধু বাকি ছিল ইংল্যান্ড। চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের ক্ষুরধার মস্তিষ্কে দল পরিচালনা এবং ডেথ ওভারে হাসান মাহমুদের দুর্দান্ত বোলিং ও রান তাড়া করায় নাজমুল হোসেন শান্তের সুনামী ব্যাটিংয়ে ১২ বল হাতে রেখে স্বপ্নের জয় পায় বাংলাদেশ। ৬ উইকেটের ঐতিহাসিক জয়ে বাংলাদেশের একটি বৃত্ত পূর্ণ হয়েছে। সবগুলো টি-২০ বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দলের বিপক্ষে জিতেছে বাংলাদেশ। অবশ্য এখন পর্যন্ত সবগুলো টেস্ট খেলুরে দেশের বিপক্ষে জেতা হয়নি টাইগারদের। ১২ টেস্ট খেলুড়ে দেশের মধ্যে টি-২০ ক্রিকেটে টাইগারদের কাছে একমাত্র অজেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়াসদের বিপক্ষে ৮ ম্যাচের সবগুলোতেই হেরেছেন সাকিবরা। টি-২০ ক্রিকেটের মতো ওয়ানডে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষেও জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।

২০০৭ সালে টি-২০ বিশ্বকাপের প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়ন ভারত। প্রথম টি-২০ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের টাইগাররা হারিয়েছে ২০১৯ সালে দিল্লিতে। দুই প্রতিবেশী ১২ মুখোমুখিতে এখন পর্যন্ত টাইগারদের এটাই একমাত্র জয়। রোহিত শর্মাদের ছুড়ে দেওয়া ১৪৯ রানের টার্গেট বাংলাদেশ টপকে গিয়েছিল ৭ উইকেটে ৩ বল হাতে রেখে। মুশফিকুর রহিম ম্যাচ জেতানো ৬০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন ৪৩ বলে ৮ চার ও ১ ছক্কায়। ২০০৯ সালে দ্বিতীয় আসরের চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান। দলটিকে দুবার হারিয়েছে টাইগাররা। ২০১৫ সালে মিরপুরে প্রথমবার হারিয়েছিল ৭ উইকেটে। পাকিস্তানের ১৪২ রানের টার্গেট বাংলাদেশ জিতেছিল ২২ বল হাতে রেখে। সাকিব ৫৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন ৪১ বলে ৯ চারে। ম্যাচসেরা হয়েছিলেন সাব্বির রহমান ৩২ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৫১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে। দ্বিতীয় জয়টি ৫ উইকেটে, মিরপুরে, ২০১৬ সালে। সফরকারীদের ১৩০ রানের টার্গেট ছুঁয়েছিল ৫ বল হাতে রেখে। ম্যাচসেরা হয়েছিলেন সৌম্য সরকার ৪৮ বলে ৪৮ রানের ইনিংস খেলে। ২০১০ ও ২০১৯ সালের টি-২০ চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে চট্টগ্রামে। বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের ১৫৭ রানের টার্গেট সাকিবরা টপকে যান ১৮ ওভারে। নাজমুল শান্ত ৩০ বলে ১৭০ স্ট্রাইক রেটে ৫১ রান করেন। বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এটা ২ ম্যাচে একমাত্র জয়।

২০১২ ও ২০১৬ সালের টি-২০ বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৬ ম্যাচে জয় ৫টি, ৯টিতে হার এবং খেলা হয়নি ২টি। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে প্রথম জয় ২০০৭ সালে প্রথম টি-২০ বিশ্বকাপে। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের ১৬৫ রানের টার্গেট টপকেছিল টাইগাররা ১২ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটে। ম্যাচের নায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল ৬১ রান করেছিলেন ২২৫.৯২ স্ট্রাইক রেটে মাত্র ২৭ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায়। আফতাব আহমেদ অপরাজিত ছিলেন ৪৯ বলে ৬২ রানের ইনিংস খেলে। ২০১১ সালে মিরপুরে ১ উইকেটে। ২০ নম্বর ওভারে জয়ের জন্য ৬ রান দরকার ছিল বাংলাদেশের। প্রথম ৪ বলে ২ রান নিলে হারিয়েছিল নাসির হোসেনের উইকেট। পঞ্চম বলে রবি রামপালকে পয়েন্টে ছক্কা মেরে টাইগারদের জয়োৎসবে ভাসান মুশফিকুর রহিম। ২০১৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লডারহিলে দুটি টি-২০ ম্যাচে ক্যারিবীয়দের বাংলাদেশ হারায় ১৯ ও ১২ রানে এবং একই বছর মিরপুরে হারায় ৩৬ রানে।

২০১৪ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কাকে ৪ বার। ২০১৬ সালের মিরপুরে হারায় ২৩ রানে, ২০১৭ সালে কলম্বোতে ৪৫ রানে এবং ২০১৮ সালে কলম্বোতে যথাক্রমে হারায় ২ উইকেটে ও ৫ উইকেটে। ২০২১ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে ওই বছরই ৫ ম্যাচ টি-২০ সিরিজে হারায় ৪-১ ব্যবধানে। মিরপুরে ম্যাচ ৪টি জিতে যথাক্রমে ৫ উইকেটে, ৬০ রানে. ২৩ রানে ও ১০ রানে।

৬ বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ছাড়াও বাংলাদেশ টি-২০ ম্যাচে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ডকে ১৭ লড়াইয়ে ৩ বার, জিম্বাবুয়েকে ২০ ম্যাচে ১৩ বার, আয়ারল্যান্ডকে ৫ ম্যাচে ৩ বার এবং অঅফগানিস্তানকে ৯ ম্যাচে ৩ বার। সব মিলিয়ে ১৪৫ টি-২০ ম্যাচে বাংলাদেশের জয় ৫০টি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর