শনিবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা
সাকিবদের ৭ উইকেটে জয়

বাংলাদেশ দলে বড় পরিবর্তন ‘মানসিক উন্নতি’

মিডিয়ার মুখোমুখি সাকিব

বাংলাদেশ দলে বড় পরিবর্তন ‘মানসিক উন্নতি’

দাপটের সঙ্গে ২০২৩ সালে ক্রিকেট খেলছে বাংলাদেশ। ভারত, ইংল্যান্ডের পর আইরিশদেরও নাস্তানাবুদ করেছেন টাইগাররা। এই বাংলাদেশ যেন বদলে যাওয়া এক দল। আত্মবিশ্বাসে টইটম্বুর। প্রতিপক্ষকে তুলাধোনা করে দিচ্ছে। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং- তিন বিভাগেই দুর্দান্ত। গতকাল মিরপুরে একমাত্র টেস্টে আয়ারল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারানোর পর ক্যাপ্টেন সাকিব আল হাসান জানালেন, বাংলাদেশ দলে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন ‘মানসিক উন্নতি’!

 

প্রথম ইনিংসে অনেক দেরিতে বোলিংয়ে আসলেন এবং দ্বিতীয় ইনিংসেও বেশি বোলিং করেননি! ব্যাখ্যা কী দেবেন?

সাকিব : না, কোনো ব্যাখ্যা নেই। বোলিং কাউকে করতেই হবে এমন কোনো কথা নেই। আপনার কাছে ৫-৬ রকমের অস্ত্রো থাকলে সব অস্ত্রো তো আর ব্যবহার করার দরকার নেই।

 

তৃতীয় দিনে আইরিশদের যখন একটা বড় পার্টনারশিপ হয়েছিল তখন কি আপনার মনে হয়নি আপনি বোলিংয়ে আসতে পারতেন? কারণ আপনি হচ্ছেন বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল বোলার!

এ কথার মানে কী? আমি ছাড়া কি বাংলাদেশ টিমের বোলিং চলে না! আমাদের যথেষ্ট ভালো বোলার আছে। তাদের ২০ উইকেট নেওয়ার সামর্থ্যও আছে। ওদের প্রতি আমার বিশ্বাস আছে। সেটা ওরা করে দেখিয়েছে। এমন এক উইকেটে খেলা হয়েছে যে ধরনের উইকেটে আমরা তেমন খেলি না। প্রথম তিন দিন খুবই ভালো ব্যাটিং উইকেট ছিল। মিরপুরে সাধারণত তিন দিন এমন ব্যাটিং উইকেট থাকে না। এমনকি আজও (চতুর্থ দিন) অনেক ভালো ব্যাটিং উইকেট ছিল।

 

এই টেস্টে ৫-৬ বোলার নিয়ে খেলার কারণ কী?

প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট নিতে হলে আপনার বোলিং অপশন বেশি লাগবে। এর কোনো বিকল্প নেই। বোলিং অপশন কম তখনই থাকে যখন আপনি রক্ষণাত্মক মাইন্ডসেট নিয়ে খেলতে নামবেন। যখন ড্র করার চিন্তা কিংবা কোনোরকমে ব্যাটিং করার চিন্তা থাকে। যখন আপনি জিততে চাইবেন তখন ৫ কিংবা ৬ বোলার নিয়েই খেলতে হবে। বড় বড় দলগুলো যেমন ইংল্যান্ড বা ইন্ডিয়ার দিকে দেখেন ওদের ৫-৬ জন বোলার থাকে।

 

এবার আয়ারল্যান্ড সিরিজে অন্য বাংলাদেশকে দেখা গেল। প্রথম দুই টি-২০তে দুই শতাধিক রান। ওয়ানডেতে রেকর্ড। এবং টেস্টেও প্রথম ইনিংসে দারুণ ছিল। এখন থেকে বাংলাদেশ কি এ মাইন্ডসেট নিয়েই খেলবে নাকি?

হয়তো বেশির ভাগ ম্যাচে চেষ্টা করব। সব সময় তো হবে না। এটা নির্ভর করবে কন্ডিশন ও প্রতিপক্ষ কেমন তার ওপর। তবে আস্তে আস্তে আমরা অনেক বেশি পজিটিভ খেলার চেষ্টা করব।

 

ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজ জয়। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজ হারলেও একটি জয় এবং টি-২০তে হোয়াইটওয়াশ, এরপর এই মৌসুমটা কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?

আমি তো আগেই বলেছিলাম, ২০২৩ সালটা আমাদের খুব ভালো যাবে। খুবই গুরুত্বপূর্ণ বছর। যেহেতু বিশ্বকাপ ও এশিয়া কাপ আছে তাই চেষ্টা করব পরের ছয় মাস যেন ভালোভাবে খেলতে পারি। প্রথম ছয় মাসের মধ্যে চার মাস খুব ভালো গেল। অর্ধেক বছর ভালো গেল, পরের অর্ধেক বছরও যাতে ভালো যায় সে চেষ্টা করব। যেহেতু বেশির ভাগ সময় ওয়ানডে খেলব, আমি মনে করি ওয়ানডেতে আমরা খুব ভালো দল।

 

টেস্টে ছয়জন বোলার নিয়ে খেললে আপনার ওপর চাপটা বেশি পড়ে কি না?

মিরাজও এখন সাত নম্বরে ব্যাটিং করার জন্য সক্ষম ব্যাটসম্যান। আর ও যখন সাত নম্বরে ব্যাটিং করবে তখন আমাদের বোলিং অপশনও বাড়বে। সেটা আমাদের দলের জন্যই ভালো। সবাই যথেষ্ট বিশ্রাম পাবে। একজনের ওপর বেশি চাপ পড়বে না। তাইজুল অনেক বেশি সময় বোলিং করছে এবং ভালো করছে। এতে আমাদের অপশনগুলো আরও বাড়ছে।

 

আইপিএলে না যাওয়ায় মন খারাপ হয়েছে কি না? কেন গেলেন না?

(হাসি) না! অবশ্যই ভালো একটা সুযোগ ছিল। বিশ্বকাপের বছর, ভারতে খেলা, তাই যদি খেলতাম ভালো হতো। কিন্তু ফ্যামিলি ইমার্জেন্সি তো ফ্যামিলি ইমার্জেন্সিই।

 

আপিএলে খেলছেন, তাহলে কি আপনি ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে খেলবেন?

সাকিব : এটা সময়ই বলে দেবে।

 

এই মৌসুমে বাংলাদেশের ক্রিকেটে কোন দিকে সবচেয়ে বেশি উন্নতি হয়েছে?

আমাদের সবচেয়ে বড় পরিবর্তন ‘মানসিক উন্নতি’। টি-২০ বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচে আমরা যখন খেলেছি তখন নিজেদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে, বিশ্বকাপের আগে আমরা নিজেদের ছোট দল মনে করতাম। কিন্তু আমরা আসলে ছোট দল ছিলাম না। যদি আমরা বিশ্বাস রেখে যেতে তাহলে হয়তো সেমিফাইনালে খেলতাম। ওই জায়গায় আমাদের দুর্বলতা ছিল, তখনই আমরা চিন্তা করেছি পরিবর্তন আনতে। তাই টি-২০ দলে যারাই ছিল তাদের মধ্যে একটা পরিবর্তন ছিল।

সর্বশেষ খবর