বাংলাদেশে কোন ক্লাব যা পারেনি তা করে দেখাচ্ছে বসুন্ধরা গ্রুপের বসুন্ধরা কিংস। ২০১৮ সালেই পেশাদার লিগ থেকে ফুটবলে তাদের যাত্রা। আবির্ভাবেই টানা চার শিরোপা জিতে ঘরোয়া ফুটবলে ৭৫ বছরের ইতিহাসে সব রেকর্ড ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। দুবার করে ফেডারেশন ও স্বাধীনতা কাপেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তারা। শক্তিশালী দল গড়ার কারণে এ সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। অন্যরাও তো শক্তিশালী দল গড়ে তাহলে তারা কেন পারছে না? যাক এ বিতর্কে আমি যাচ্ছি না। আমার মূল আলোচ্য বিষয় হচ্ছে কিংসের ক্যারিশমা।
বসুন্ধরা কিংসে এমন কোনো অভিজ্ঞ সংগঠক ছিলেন না। অথচ কাজের মাধ্যমে ক্লাব সভাপতি ইমরুল হাসান অল্প দিনেই সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছেন। দলীয় সাফল্য ছাড়া দেশের ফুটবল উন্নয়নে ক্লাবেরও দায়িত্ব আছে তার বড় উদাহরণ বসুন্ধরা কিংস। এক্ষেত্রে আমি বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখ করছি। বসুন্ধরা কিংস তাঁর নিজস্ব ক্লাব। শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র ও শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবও পরিচালিত হচ্ছে বসুন্ধরা গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায়। ফুটবলে দুর্দিনে তিন ক্লাবের পেছনে অর্থ ব্যয় করাটা চাট্টিখানি কথা নয়। এতে কতজন ফুটবলার উপকৃত হচ্ছেন কেউ কি ভেবে দেখেছেন।
ফুটবলে মহাসংকটে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানই এগিয়ে এসেছেন। আমি বলব তাঁরই হস্তক্ষেপে দেশের ফুটবলও বদলে যাচ্ছে। নিজে ছিলেন খ্যাতনামা ক্রীড়াবিদ। খেলাধুলা তাঁর রক্তে মিশে গেছে। এমন লোকই তো পারেন অসম্ভবকে সম্ভব করতে। গড়েছেন আধুনিক ক্রীড়া কমপ্লেক্স, যা ইউরোপের সঙ্গেই তুলনা করা যায়। যদিও পুরো কমপ্লেক্সের কাজ এখনো শেষ হয়নি। অথচ বসুন্ধরা কিংস অ্যারিনাতে ফুটবল নামার পর চারদিকে আলোড়ন পড়ে গেছে। এ ভেন্যু শুধু কিংসের খেলা নয়, জাতীয় দলের ম্যাচও হয়েছে। কেউ কি কখনো ভেবেছিলেন এ দেশে কোনো ক্লাবের নিজস্ব ভেন্যু হবে। আর এই মাঠে জাতীয় দল খেলবে। আহমেদ আকবর সোবহানের কারণে তা সম্ভব হয়েছে। আজ কিংস অ্যারিনায় আরেকটি ঐতিহাসিক দিন। এই প্রথম কোনো ক্লাব নিজেদের স্টেডিয়ামে এএফসি কাপের হোম ম্যাচ খেলবে। সত্যিই ফুটবলকে বদলে দিচ্ছে বসুন্ধরা গ্রুপ।
মোহামেডান ১৯৩৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও আবাহনীরও বয়স ৫০ ছাড়িয়ে গেছে। খেলাধুলার চমক দেওয়ার মতো কাজ কি করতে পেরেছে? শিরোপা জেতা নিয়েই তারা ব্যস্ত ছিল। স্বাধীনতার পর কিংসই প্রথম ক্লাব যারা শুধু নিজেদের সাফল্য নয়, দেশের ফুটবল উন্নয়নেও কাজ করে যাচ্ছে।