প্রথম রাউন্ডে ব্যাটসম্যানদের দাপটে অসহায় ছিলেন বোলাররা। শ্রীলঙ্কা সিরিজের আগে বোলারদের এমন দুর্বিসহ অবস্থা মেনে নিতে পারেননি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) দুই পরিচালক আকরাম খান ও খালেদ মাহমুদ সুজন। তাই বিসিএলের দ্বিতীয় রাউন্ডে স্পোর্টিং উইকেট বানানোর নির্দেশ দেন প্রধান কিউরেট গামিনি সিলভাকে। নির্দেশ অনুযায়ী উইকেট বানিয়েছেন কিউরেটর এবং তাতেই দ্বিতীয় রাউন্ডের প্রথম দিনটিকে নিজেদের করে নিয়েছেন বোলাররা। দুই ম্যাচে প্রথম দিন উইকেটের পতন হয়েছে ২৫টি। এরমধ্যে দুই স্পিনার তাইজুল ইসলাম ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ উইকেট নিয়েছেন পাঁচ বা ততোধিক। তবে বাঁ হাতি স্পিনার তাইজুলের পারফরম্যান্স ছিল দুর্দান্ত। উইকেট নিয়েছেন একাই ৭টি। তার দুরন্ত বোলিংয়ে বিকেএসপি ২ নম্বর মাঠে ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চল ৮ উইকেটে ২৬১ রান তুলেছে। তবে বিকেএসপি ৩ নম্বর মাঠে উইকেটের পতন হয়েছে ১৮টি। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল গুটিয়ে গেছে ১৬৫ রানে। জবাবে প্রাইম ব্যাংক দক্ষিণাঞ্চল ৩১ রানে এগিয়ে থেকে দিন শেষ করেছে ৭ উইকেটে ১৯৬ রান।
বিকেএসপি ৩ নম্বর মাঠে মধ্যাঞ্চল প্রথমে ব্যাট করে দক্ষিণাঞ্চলের বোলিং তোপে পড়ে। ধারাবাহিকভাবে উইকেট হারাতে থাকে। বিশেষ করে জাতীয় দলের দুই স্পিনার সোহাগ গাজী ও আব্দুর রাজ্জাক রাজের ঘুর্ণিতে ৪১ রানে হারায় শেষ ৫ উইকেট। শুরুতে ৬৭ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও নুরুল হাসান ৫৭ রান যোগ করে রোধ করেন দলের প্রাথমিক বিপর্যয়। ২৬ নম্বর ওভারের পঞ্চম বলে নুরুল হাসানের বিদায়ের পর সব প্রতিরোধ ভেস্তে যায় মধ্যাঞ্চলের। গুটিয়ে যায় ৩৯.৪ ওভারে মাত্র ১৬৫ রানে। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন মাহমুদুল্লাহ। ৬৭ রানে ৪ উইকেট নিয়ে সফল বোলার ছিলেন সোহাগ গাজী। খেলতে নেমে খুব সুবিধা করতে পারেনি দক্ষিণাঞ্চলও। মাহমুদুল্লাহর ঘূর্ণিতে ১৯৬ রান তুলতে হারিয়ে বসে ৭ উইকেট। মাহমুদুল্লাহ নেন ৫ উইকেট ৭২ রান খরচে। দক্ষিণাঞ্চলের পক্ষে একাই লড়েছেন মো. মিথুন ৮৮ রানের প্রত্যয়ী ইনিংস খেলে। মধ্যাঞ্চলকে অলআউট করে ৩ বোলিং বোনাস পয়েন্ট তুলে নিয়েছে দক্ষিণাঞ্চল।
বিকেএসপির ২ নম্বর মাঠে মাত্র ৬ রানের জন্য সেঞ্চুরি বঞ্চিত হন মুমিনুল হক। তাইজুলের শিকারে পরিণত হওয়ার আগে নিজের নামের পাশে লিখেন ৯৪ রানের ইনিংস। তাইজুল একাই ধসিয়ে দিয়েছেন ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চলের ইনিংস। তার ঘূর্ণিতে ৮ উইকেটে ২৬১ রান তুলেছে। তাইজুল নিয়েছেন ৬৭ রানে ৭ উইকেট। পূর্বাঞ্চল ৩৯ রানে দুই ওপেনারকে হারায়। এরপর তৃতীয় উইকেট জুটিতে মুমিনুল ও রাজিন সালেহ ৯৫ রান যোগ করে দলকে শক্ত ভিত দেন। কিন্তু তাদের দেওয়া ভিতকে কাজে লাগিয়ে খুব বেশি দূর এগোতে পারেনি পূর্বাঞ্চল। অবশ্য শেষ দিকে সাবেক টেস্ট ক্রিকেটার অলক কাপালি ৫২ রানে অপরাজিত থেকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন দলকে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ভেন্যু: বিকেএসপি-৩
ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল : প্রথম ইনিংস ১৬৫/১০, ৩৯.৪ ওভার (শাহরিয়ার নাফিস ৩০, মাহমুদুল্লাহ ৩৬, নুরুল হাসান ৩২, ইলিয়াস সানী ২৮। রুবেল হোসেন ২/৩৩, সোহাগ গাজী ৪/৬৭, আব্দুর রাজ্জাক রাজ ৩/৪৪)।
প্রাইম ব্যাংক দক্ষিণাঞ্চল : প্রথম ইনিংস, ১৯৬/৭, ৪৮ ওভার (ইমরুল কায়েশ ২২, মো. মিথুন ৮৮, তাইবুর পারভেজ ৩১, শুভাগত হোম ১৭*। শাহাদাত রাজিব ১/৩৬, মাহমুদুল্লাহ ৫/৭২)।
ভেন্যু: বিকেএসপি-২
ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চল: প্রথম ইনিংস ২৬১/৮, ৮১ ওভার (তামিম ইকবাল ২৪, রাজিন সালেহ ৩৮, মুমিনুল হক সৌরভ ৯৪, অলক কাপালি ৫২*। তাইজুল ইসলাম ৭/৬৭।