প্রথম ম্যাচে লঙ্কান পেসার লাসিথ মালিঙ্গার সেই বিধ্বংসী স্পেলের কথা বাদ দিলে এশিয়া কাপে এখন পর্যন্ত কোনো বোলারই 'এঙ্ট্রা অর্ডিনারি' কিছু দেখাতে পারেননি। কি পেসার, কি স্পিনার -ব্যাটসম্যানদের আগুনে পুড়তে হয়েছে সবাইকে। পাকিস্তানের বাঘা বাঘা বোলাররাও তো নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি প্রথম দুই ম্যাচে। সাঈদ আজমল, ওমর গুল কিংবা শহীদ আফ্রিদি! এশিয়া কাপের প্রতিটি ম্যাচেই (প্রথম ম্যাচ ছাড়া) জয়-পরাজয় নির্ধারিত হচ্ছে ব্যাটসম্যানদের সফলতা কিংবা ব্যর্থতার ওপর। সে কারণেই আজকের ভারত-পাকিস্তান 'মহাযুদ্ধ' হবে দুই দলের দুই তারকা ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি ও ওমর আকমলের মধ্যে। লড়াই হবে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক দুই ব্যাটসম্যানের মধ্যে। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই বাড়তি উত্তেজনা। উন্মাদনার মাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়া এক ম্যাচ। শুধু মাঠেই নয়, মাঠের বাইরেও থাকে বাড়তি স্নায়ুচাপ। যেন প্রথম বল থেকেই পরিস্থিতি হয়ে যায় শ্বাসরুদ্ধকর। শুরু থেকেই যেন ম্যাচের ভাগ্য দুলতে থাকে পেন্ডুলামের মতো _ভারত ও পাকিস্তানের ম্যাচের ক্যারিশমা বোধহয় এখানেই। স্কোর যত বড়ই হোক কিংবা ছোট হোক _প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবেই! চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলের সব শেষ ম্যাচগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, লড়াই হয়েছে মূলত ভারতের ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে পাকিস্তানি বোলারদের। বোলাররা সফল হলে হেসেছে পাকিস্তান, আর ব্যাটিং সহায়ক উইকেট মানেই তো ভারতের জয় জয়কার। তাই এই প্রতিবেদনের শিরোণাম হওয়া উচিত ছিল 'কোহলি বনাম আজমলের লড়াই'! কিন্তু বাংলাদেশের 'তক্তা মার্কা' উইকেটে বোলারদের ক্যারিশমা দেখানোর উপায় কোথায়? এখানে লড়াইটা হবে ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে ব্যাটসম্যানের। তাই আজ ভারতকে রুখে দিতে হলে বোলিং দিয়ে নয়, জ্বলে উঠতে হবে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের। যদিও আগের ম্যাচে আফগানিস্তানের সঙ্গে লড়াকু এক সেঞ্চুরি করে পাকিস্তানের মান বাঁচিয়েছেন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ওমর আকমল। কিন্তু ভারতের বিরুদ্ধে ভালো করতে হলে টপ অর্ডারকে দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করতে হবে। যেহেতু আকমল ফর্মে রয়েছেন তাই তার দায়িত্বটা আরও বেশি। ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলি ছন্দেই রয়েছেন। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ১৩৬ রানের একটা ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলেছেন। এশিয়া কাপে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও তিনি। দুই ম্যাচে করেছেন ১৮৪ রান। নিয়মিত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি না থাকায় অনেকেই মনে করেছিলেন এশিয়া কাপে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব করতে গিয়ে কোহলি হয়তো ব্যাটহাতে ব্যর্থ হতে পারেন। কিন্তু প্রথম ম্যাচেই তিনি সমালোচকদের জবাবটা দিয়েছেন। তাছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ড সিরিজে ম্লান হয়ে যাওয়া ভারতীয় দলকে তিনি উজ্জ্বীবিত করেছেন দারুণভাবে। যদিও শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচে টান টান উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে তার দল হেরে গেছে। তবে এ নিয়ে মোটেও চিন্তিত নন ভারতীয় দলপতি। তাছাড়া শুধু কোহলি কেন, ভারতীয় দলে তো ব্যাটসম্যানের অভাব নেই। রোহিত শর্মা, শেখর ধাওয়ান, রাহানে, কার্তিক- যেকোনো একজন দাঁড়িয়ে গেলেই পাকিস্তানের সর্বনাশ হয়ে যেতে পারে। তবে পাকিস্তানি বোলারদের লক্ষ্য থাকবে কোহলির দিকেই।