টানা পরাজয়ের ধকল সামলে নিয়েছে বাংলাদেশ টানা চার জয়ে। বিশ্বকাপের মূল পর্বে আফগানিস্তান ও নেপালকে উড়িয়ে দেওয়ার পর মুশফিকবাহিনীর আত্মবিশ্বাসটা অনেক উপরে। কেমন করে বদলে গেল বাংলাদেশ! শ্রীলঙ্কা সিরিজের সময়ই টাইগাররা সরাসরি স্বীকার করেছিল, আত্মবিশ্বাস তলানিতে ঠেকেছে। সেই হারানো আত্মবিশ্বাস কিভাবে খুঁজে পেল টাইগাররা! গতকাল সংবাদ সম্মেলনে এ সবেরই ব্যাখ্যা দিলেন কোচ শেন জার্গেনসেন। সেই সঙ্গে জানালেন, টানা কয়েকটা জয়ে বাংলাদেশ এখন স্বাভাবিক অবস্থায় পৌঁছে গেছে।
'আমাদের পরাজয়ের ব্যবধানগুলো খুব বড় ছিল না। খুব কাছে গিয়ে আমরা হারছিলাম। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য দলের সবাই কঠোর পরিশ্রম করেছে। এরই ফল পাচ্ছি আমরা। এই অবস্থাটাই আমরা ধরে রাখতে চাই। দল এখন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে।' বর্তমান সফলতার মূলমন্ত্র কঠোর পরিশ্রম। এভাবেই ব্যাখ্যা দিলেন কোচ জার্গেনসেন। কেবল কঠোর পরিশ্রমই নয়, দলের সফলতার অন্যতম কারণ তরুণরা। 'এ দলটা তারুণ্যনির্ভর। তরুণরা চমৎকার করছে। দলের জয়ে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখছে তারা। তাছাড়া দলের প্রত্যেকেই নিজের স্থান থেকে ভালো খেলেছে।' গত তিন চারটা মাস বাংলাদেশ মোটেও ভালো ক্রিকেট খেলেনি। বিশেষ করে শ্রীলঙ্কা সিরিজে ও এশিয়া কাপে। যেসব স্থানে দুর্বলতা ছিল, কোচের দৃষ্টিতে এর অনেকটাই কেটে গেছে। বাকিটুকুও সুপার টেন শুরু হওয়ার আগেই কাটানো যাবে বলে বিশ্বাস করেন তিনি। ঠিক বাছাই পর্ব না হলেও বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ড বাংলাদেশের জন্য অনেকটা বাড়তি শক্তি খরচের মতোই ব্যাপার। তবে কোচ কিংবা অধিনায়ক কেউই বিষয়টা এভাবে দেখছেন না। কোচ বলছেন, 'বাড়তি ম্যাচ পাওয়াতে আমাদের সুবিধা হয়েছে। এই ম্যাচগুলো আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে আমাদের সব দুর্বলতা ঝেড়ে ফেলার একটা সুযোগ এই ম্যাচগুলো।'
প্রথম দুই ম্যাচেই বাংলাদেশ পরে ব্যাটিং করে জয় পেয়েছে। অবশ্য টার্গেটটাও তেমন আহামরি কিছু ছিল না। তবে কোচ বলছেন, 'আমরা লক্ষ্য তাড়া করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। পরে ব্যাটিং করে ভালো খেলেছে ছেলেরা।' সুতরাং ব্যাটিং আগে কিংবা পরে, এই নিয়ে তেমন কোনো মাথাব্যথা নেই কোচের। আজ অবশ্য দলে পরিবর্তনের কথা জানিয়েছেন কোচ। পায়ে ব্যথা অনুভব করায় মাশরাফিকে বিশ্রাম দেওয়া হচ্ছে আজ। তার পরিবর্তে দলে থাকছেন রুবেল। এছাড়া মুমিনুলকেও দেখা যেতে পারে মাঠে।
এদিকে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে এনামুল হক বিজয় আজকের ম্যাচেও জয়ের লক্ষ্যের কথা জানিয়েছেন। হংকংকে হারিয়ে বাংলাদেশ সব অনিশ্চয়তা দূর করে সুপার টেন নিশ্চিত করতে চায়। এনামুল স্বীকার করেন, আফগানিস্তান ও নেপালের বিপক্ষে খেলে মনে হয়েছে, তাদের অভিজ্ঞতা কম। এ কারণেই পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলার সময় যে চাপ থাকে, আফগানিস্তান কিংবা নেপালের বিপক্ষে তেমন চাপ ছিল না। আজ হংকংয়ের বিপক্ষেও চাপ মুক্ত থেকেই খেলতে নামবে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত হংকং বাধাও নির্বিঘ্নে পেরিয়ে যাবে মুশফিকবাহিনী, বাংলাদেশের কোটি কোটি ক্রিকেটভক্তের আকাঙ্ক্ষা এমনটাই। টাইগাররা কি এই আশাটাও পূরণ করবেন আজ!