গ্যাস একটি সাধারণ শব্দ। যাকে মানুষ বাতাস জাতীয় বস্তু হিসেবে মনে করে, সত্যি এটা তাই। গ্যাস্ট্রিক দ্বারা সাধারণভাবে পেপটিক আলসার ডিজিজ, গ্যাস্ট্রিক আলসার ও অন্যান্য এসিড দ্বারা সৃষ্ট আলসারকে বোঝানো হয়ে থাকে। পেটে গ্যাস উৎপাদন বা অধিক গ্যাস নির্গমনের সঙ্গে গ্যাস্ট্রিকের খুব বেশি সম্পর্ক নেই। তবে দু ক্ষেত্রেই পেটে ব্যথা হয়ে থাকে এবং গ্যাস বা গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ যেমন : এন্টাসিড জাতীয় বড়ি বা তরল এন্টাসিড, রেনিটিডিন জাতীয় বড়ি। ওমিপ্রাজল জাতীয় বড়ি বা ক্যাপসুল। প্যান্টোপ্রাজল, ইসোমাপ্রাজল, রাবিপ্রাজল, এবং ডমপিরিডন ইত্যাদি সচরাচর সেবন করে থাকে। এতে ব্যথা প্রশমন হয়। গ্যাসের ব্যথায় গ্যাস নির্গমন হলে ব্যক্তি মানসিকভাবে উৎফুল্ল হওয়া স্বস্তিবোধ করতে পারে। কারও কারও গ্যাস্ট্রিক ও গ্যাস দুটিই বিদ্যমান থাকতে পারে। তাই গ্যাসের ওষুধ (এন্টাসিড ও ওমিপ্রাজল) পেটের ব্যথা দ্রুত নিরাময় করে।
অন্যদিকে, এনজিনার ব্যথা হলে অনেক ক্ষেত্রে মানুষ বিশ্রাম নিতে বাধ্য হয় বা কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দেয়। যাদের পেটে গ্যাস উৎপাদন হওয়ার প্রবণতা আছে তারা গ্যাসের ব্যথা মনে করে গ্যাস বের করার চেষ্টায় লিপ্ত হয়, হয়তো ২-৪ মিনিটের মধ্যেই কিছু গ্যাস বের হয়ে যায়, রোগী মানসিক স্বস্তি পায়। সবাই মনে করে যে এ ব্যথা গ্যাসের ব্যথা। তাই এনজিনার ব্যথা ও গ্যাসের ব্যথার পার্থক্য করা সমস্যাবহুল। এনজিনা হৃৎপিণ্ডের ব্যথা যা বিভিন্ন ধরনের হৃদরোগের সতর্কবার্তা। তাই এনজিনার ব্যথাকে প্রাথমিক অবস্থায় চিহ্নিত করতে পারলে হৃদরোগের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা সহজ।
এনজিনার লক্ষণ : সাধারণত বুকের মাঝখানে তীব্র ব্যথার অনুভূতি, যা সচরাচর কোনো কাজ করতে থাকলে বা অন্য কোনো রকম পরিশ্রম করতে থাকলে দেখা দেয় এবং বিশ্রাম গ্রহণ করলে বা পরিশ্রমের মাত্রা কমিয়ে দিলে অল্প সময়ের মধ্যেই দূরীভূত হয়। তীব্র বুকের ব্যথার সঙ্গে সঙ্গে শরীর অত্যধিক ঘেমে যেতে পারে, বুক ধড়ফড় করা বা শ্বাসের সমস্যা অনুভূত হতে পারে। কারও কারও ব্যথা বুকের মাঝখানে না হয়ে বুকের ডান অথবা বামপাশ বা সারা বুকেই ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
ডা. এম শমশের আলী, সিনিয়র কন্সালট্যান্ট ঢাকা মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।