আরচ্যারি খেলা বাংলাদেশে এখনো পরিচিত হয়ে ওঠেনি। মূলত দক্ষিণ কোরিয়া, চীন ও জাপানের আরচ্যারির জনপ্রিয়তা চোখে পড়ার মতো। ভারতও পিছিয়ে নেই, সাফল্যের কথা চিন্তা করে তারা আরচ্যারিকে গুরুত্ব দিতে শুরু করেছে। বাংলাদেশে এ খেলার আত্দপ্রকাশ ঘটে কাজী রাজিব উদ্দিন আহমেদ চপলের হাত দিয়েই। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি খেলাধুলার সঙ্গে জড়িত। নব্বইয়ের দশকের শুরুতে চপলের হাত দিয়ে অচেনা অজানা খো খো খেলার আত্দপ্রকাশ ঘটেছিল। এ নিয়ে তখন অনেকে তিরস্কার করে বলেছিলেন, বড় বড় খেলা যেখানে হুমকির মধ্যে আচে সেখানে খো খোর মতো অচেনা খেলা বাংলাদেশে টিকবে না। চপলের জেদ ছিল তিনি খো খোকে পরিচিত করে তুলবেনই। ফেডারেশন গঠনের পর থেকে তিনি সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। সত্যি বলতে কী, চপলের প্রচেষ্টায় খো খো জনপ্রিয় খেলার তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে। যাক, খো খোকে প্রতিষ্ঠিত করে গেলেও চপল এখন এই ফেডারেশনের সঙ্গে নেই। কিন্তু খেলাপাগল মানুষ কি বসে থাকতে পারেন? খো খো ফেডারেশনে দায়িত্বে থাকা অবস্থায় চপল আরচ্যারি নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। খো খো থেকে সরে যাওয়ার পর পুরোপুরি মন দেওয়ায় আরচ্যারিও এখন দেশের জনপ্রিয় খেলার মধ্যে ঠাঁই পেয়েছে। হাঁটি হাঁটি পা পা করে এ খেলা এখন এমন এক পর্যায়ে পেঁৗছে গেছে যে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় সাফল্য আসতে শুরু করেছে। এস এ গেমস তো আছেই গত এশিয়ান ও অলিম্পিক গেমসে বাংলাদেশের আরচ্যাররা অংশ নিচ্চেন। সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠেয় ১৭তম এশিয়ান গেমসে পুরুষ চার ও মহিলা চার আরচ্যার অংশ নেবেন। জানুয়ারি থেকেই তাদের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার পার্ক ও বাংলাদেশের জিয়াউল হক আরচ্যারদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। সত্যি বলতে কী, যতই প্রস্তুতি নেওয়া হোক এশিয়ান গেমসে পদক জেতা চাট্টিখানি কথা নয়। কেননা এখানে বিশ্ববিখ্যাত আরচ্যাররা অংশ নেবেন। আরচ্যারি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক চপল কিন্তু পদক জেতার ব্যাপারে আশাবাদী। তিনি বলেন, স্বর্ণ, রৌপ্য না তামা- তা নিশ্চিত করে বলতে পারব না। কিন্তু যে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে তাতে যদি নিশানা ঠিক রাখা যায় তাহলে পদক জেতাটা কঠিন কিছু হবে না। বিশেষ করে তিনি রোমান সানা ও ইমদাদুল হক মিলনের ব্যাপারে আশাবাদী।
গত লন্ডন অলিম্পিকে মিলনের ব্যাপারে অনেকে আশাবাদী ছিলেন। কিন্তু প্রত্যাশা অনুযায়ী তিনি তার পারফরম্যান্স শো করতে পারেননি। ব্যক্তিগত রিকার্ভ ইভেন্টে মিলন ৬৪ জনের মধ্যে ৫৪তম স্থান দখল করেন। রোমান সানি গত মার্চে এশিয়ান গ্র্যান্ড প্রিঙ্ টুর্নামেন্টে অনেক খ্যাতনামা আরচ্যারকে পিছনে ফেলে ব্যক্তিগত রিকার্ভ ইভেন্টে স্বর্ণ জিতেছিলেন। চপল বলেন, অনুশীলনেও ভালোই করছে। ফর্ম ধরে রাখতে পারলে সানার এশিয়ান গেমসে পদক জয়ের আশা করছি।