শরীর যত মজবুতই হোক না কেন, শক্তি না থাকলে যে কোনো কাজই সঠিকভাবে সম্পাদন করা সম্ভব হয় না। শক্তি বৃদ্ধি করা তাই খুবই প্রয়োজন। কেবল খাদ্যই শক্তি বৃদ্ধি করতে পারে না। এর জন্য প্রয়োজন নিয়মিত ব্যায়ামেরও। যোগ ব্যায়ামে বেশ কিছু আসন রয়েছে যেগুলো শরীরের শক্তি অনেকটাই বৃদ্ধি করে। এর মধ্যে বীর-ভদ্রাসন অন্যতম। আসনাবস্থায় দেহটাকে বীর যোদ্ধার মতো দেখায় বলে আসনটির নাম বীর-ভদ্রাসন।
এই আসন করার জন্য প্রথমে জোড় পায়ে সোজা হয়ে দাঁড়ান। এবার বাঁ পা ডান দিকে ঘুরিয়ে দুই থেকে আড়াই ফুট দূরে রাখুন। এখন ডান পা সোজা রেখে বাঁ পায়ের হাঁটু ভেঙে মেরুদণ্ড সোজা রেখে শরীরের ভার বাঁ পায়ের উপর নিয়ে যান এবং হাত দুটো মাটির সমান্তরালে দুই পায়ের সোজাসুজি দুই পাশে টানটান করে মেলে দিন। ঘাড় ঘুরিয়ে দৃষ্টি বাঁ হাতের দিকে নিবদ্ধ থাকবে। এ অবস্থায় বাঁ পায়ের পাতা থেকে হাঁটু পর্যন্ত মাটির উল্লম্ব অর্থাৎ খাড়া থাকবে। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে বিশ থেকে ত্রিশ সেকেন্ড এ অবস্থায় থাকুন। এর পর পূর্বাবস্থায় ফিরে এসে পা বদলে একইভাবে আসনটি আবার করুন। অর্থাৎ এবার শরীরের ভার ডান পায়ের উপর থাকবে এবং দৃষ্টি প্রসারিত ডান হাতের দিকে নিবদ্ধ থাকবে। এভাবে ২/৩ বার আসনটি অভ্যাস করুন এবং প্রয়োজনমতো শবাসনে বিশ্রাম নিন। বীর-ভদ্রাসনের আরেকটি পদ্ধতিও রয়েছে।
এই পদ্ধতিতে প্রথমে সোজা হয়ে দাঁড়ান। এবার ডান পা সামনের দিকে দুই থেকে আড়াই ফুট দূরে রাখুন। এখন আঙ্গুলগুলো নমস্কারের ভঙ্গিতে রেখে হাত দুটো সোজা মাথার উপর তুলুন যেন হাত কানের সঙ্গে লেগে থাকে। এবার বাঁ পা সোজা রেখে এবং ডান পায়ের হাঁটু ভেঙে কোমর থেকে দেহের উপরাংশ সাধ্যমতো পেছন দিকে বাঁকিয়ে নিন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড এ অবস্থায় থাকুন। এরপর পূর্বাবস্থায় ফিরে এসে পা বদলে একইভাবে আসনটি আবার করুন। অর্থাৎ ডান পা সোজা রেখে সামনে বাড়ানো বাঁ পাযের হাঁটু ভেঙে শরীর পেছন দিকে বাঁকাতে হবে। এভাবে দুই-তিনবার আসনটি অভ্যাস করুন এবং প্রয়োজনমতো শবাসনে বিশ্রাম নিন। এ আসন অভ্যাসে শরীরের শক্তি বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে পায়ের শক্তি অনেকটা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে পায়ের গঠনও সুন্দর হয়। মেরুদণ্ডের হাড়ের জোড় নমনীয় ও মজবুত হয়, মেরুদণ্ডের স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি পায়। পাঁজরের হাড়ের অসাম্যতা দূর হয় এবং বুক সুগঠিত হয়। তলপেট, কোমর ও নিতম্বে বেশি মেদ জমতে পারে না বলে দেহ সুন্দর ও সুঠাম হয়ে ওঠে। আসনটি অভ্যাসে শরীরে বাত বা সায়াটিকা আশ্রয় নিতে পারে না।